হবিগঞ্জের বাহুবলে আকিজ বেভারেজ কারখানায় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহত চারজনের মধ্যে তিনজনের বাড়ি চাঁদপুরে। তাদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। প্রতিবেশীরাও যেন বাকরুদ্ধ। সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা নেই।
Advertisement
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় বাহুবল উপজেলার ডুবাঐ বাজারে আকিজ বেভারেজ কারখানায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নের ইব্রাহিম খান, তার ভাগিনা মো. মিজান ও ফরিদগঞ্জ বালিথুবা ইউনিয়নের মো. মাহফুজ। অন্যজনের বাড়ি ভোলায়।
৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে শ্রমিকের কাজ করতেন ইব্রাহিম খান। বাড়ি নির্মাণের কাজও শুরু করেছিলেন। স্বপ্ন ছিল শেষ বয়সে অবসর সময় পার করবেন সেখানে। তবে সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে গেলো। আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তার ছোট ছেলে আল আমিন।
Advertisement
আকিজ বেভারেজ কারখানায় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় পরিবারগুলোর বন্ধ হয়ে গেছে উপার্জনের পথ। এ অবস্থায় কোম্পানি এবং সরকারের কাছে সহায়তার দাবি জানিয়েছেন তারা।
বুধবার (১ জানুয়ারি) দুপুরে নিহত ইব্রাহিম খানের স্ত্রী রুবি বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘পরিবারটা যার মাধ্যমে চলে, তিনি এখন নেই। আমার সংসার দেখার মতো আর কেউ নেই। আমার ছেলেদের একটা চাকরির ব্যবস্থা করে দিলে সংসারটা চলবে। আমি খুবই অসহায় হয়ে পড়েছি।’
নিহতের ভাতিজা কাউছার হোসেন জানান, একই পরিবারের তিনজন মারা গেছেন। দুজন আহত হয়ে চিকিৎসাধীন। একজন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও আরেকজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তারাই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন।
তিনি বেলেন, ‘ইব্রাহিম কাকা দুই বছর হলো একটি ভবনের কাজ ধরেছেন। দুই মাস আগেও এনজিও থেকে তিন লাখ টাকা ঋণ নেন। এখন তার এক ছেলে গুরুতর আহত। কোম্পানি ও সরকার যদি সহায়তা না করে, তাহলে সবার সংসারগুলোর পরিস্থিতি করুণ হয়ে যাবে।’
Advertisement
চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাখাওয়াত জামিল সৈকত বলেন, আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারগুলোর খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করছি। আমাদের পক্ষ থেকে পরিবারগুলোকে যতটুকু সম্ভব সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়া হবে।
শরীফুল ইসলাম/এসআর/জিকেএস