আন্তর্জাতিক

ভারতে ধর্মীয় সহিংসতা বন্ধে মোদী-মুর্মুকে চিঠি দিলেন খ্রিষ্টান নেতারা

গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর থেকেই বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর কথিত নির্যাতনের অভিযোগ তুলে মায়াকান্না করে যাচ্ছে ভারত। অথচ সেই ভারতেই খ্রিষ্টানদের ওপর ধর্মীয় সহিংসতা বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন ৪০০ জনেরও বেশি জ্যেষ্ঠ খ্রিষ্টান নেতা ও ৩০টি চার্চ।

Advertisement

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়্যারের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এরই মধ্যে এই আবেদন তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে চিঠি দিয়েছেন খ্রিষ্টান নেতারা। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) এই চিঠি পাঠানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়, খ্রিষ্টানদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ক্রমশ বাড়ছে ও অসহিষ্ণুতার মাত্রা বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। গত ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে খ্রিষ্টানদের অন্তত ১৪টি সমাবেশে হামলা, সহিংসতা ও হুমকি-ধমকির ঘটনা ঘটেছে।

আরও পড়ুন: 

Advertisement

রমেন রায়ের ওপর হামলার ঘটনা পুরোনো, তিনি চিন্ময়ের আইনজীবী নন চিন্ময়ের গ্রেফতার বেআইনি- এমন কোনো মন্তব্য করেননি তুলসী গ্যাবার্ড নববর্ষের দিনে মা ও চার বোনকে হত্যা

ইভানজেলিক্যাল ফেলোশিপ অব ইন্ডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত খ্রিষ্টানদের বিরুদ্ধে ৭২০টিরও বেশি সহিংসতার ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। একই সময়ে ইউনাইটেড ক্রিশ্চিয়ান ফোরাম ৭৬০টি মামলা নথিভুক্ত করেছে।

খ্রিষ্টান নেতাদের অভিযোগ, দেশে ধর্মান্তরকরণবিরোধী আইনের অপব্যবহার হচ্ছে। ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতি হুমকি বাড়ছে, ভিন্ন ধর্মের মানুষের প্রতি বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের পরিমাণ বাড়ছে ও দলিত খ্রিষ্টানদের তফসিলি জাতির মর্যাদা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।

এদিকে, ২০২৩ সালের মে মাস থেকে চলমান সহিংসতায় ২৫০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে মণিপুরে। ৩৬০টি গির্জা ধ্বংস হয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়েছেন। মণিপুরের এমন পরিস্থিতি নিয়েও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারতের খ্রিষ্টান নেতারা।

আরও পড়ুন: 

Advertisement

অনুপ্রবেশে সহায়তা করায় তিন ভারতীয় গ্রেফতার সীমান্ত বন্ধ হলে বড় ক্ষতি ভারতের, ঝুঁকিতে লাখো মানুষের জীবিকা ব্যবসায় মন্দা, বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা দিতে চান কলকাতার ব্যবসায়ীরা

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তারা বলেন, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ঘটনায় দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে। সংবিধান অনুযায়ী ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষার বিষয়ে রাজ্য সরকারগুলোকে স্পষ্ট নির্দেশনা দিতে হবে।

নিয়মিত আন্তঃধর্মীয় সংলাপ ও প্রতিটি নাগরিকের ধর্ম পালনের অধিকার সুরক্ষিত করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। নেতারা বলেন, ভারতের নৈতিক কাঠামো, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও সামাজিক ঐক্যের জন্য সব ধর্মের অন্তর্ভুক্তি ও সম্প্রীতি অপরিহার্য।

এই চিঠিতে স্বাক্ষরকারী খ্রিষ্টান নেতাদের মধ্যে রয়েছেন- মাস আব্রাহাম, রিচার্ড হাওয়েল, মেরি স্কারিয়া, ডেভিড ওনেসিমু, জোয়াব লোহারা, সেডরিক প্রকাশ এস. জে., জন ডায়াল, জেলহো কিহো, প্রকাশ লুইস এস. জে., অ্যালেন ব্রুকস, ই. এইচ. খারখংগর, কে. লসই মাও, বিজয়েশ লাল, মাইকেল উইলিয়ামস, এ. সি. মাইকেল, অখিলেশ এডগার।

সূত্র: দ্য ওয়্যার

এসএএইচ