বরগুনার প্রবেশদ্বার বলা হয় খাকদোন নদীকে। এই নদী দিয়ে প্রতিদিন যাত্রীবাহী নৌযানের পাশাপাশি চলাচল করে পণ্যবাহী নৌযান। জেলা শহরের বেশিরভাগ পণ্য আনা-নেওয়া হয় এই নৌপথ ব্যবহার করে। বারবার ড্রেজিং করার পরও নাব্য সংকট কাটছে না গুরুত্বপূর্ণ এই নদীর।
Advertisement
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খাকদোন নদীর নৌরুটকে সচল রাখতে প্রতিবছর ব্যয় করা হয় কোটি কোটি টাকা। বিভিন্ন স্থানে ড্রেজিং করা হয়। তারপরও ফিরছে না নদীর নাব্য। ভাটার সময় পানি না থাকায় জোয়ারের ওপর নির্ভর করে চলাচল করে নৌযান। এতে লঞ্চসহ পণ্যবাহী জাহাজ নিয়ে বিপাকে পড়তে হয় চালকদের। ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা লঞ্চগুলো বরগুনার নদীবন্দর পর্যন্ত পৌঁছাতে না পারায় পৌরশহর থেকে প্রায় ২-৩ কিলোমিটার দূরে নোঙর করতে হয়। এতে ভোগান্তির শেষ নেই যাত্রীদের।
বরগুনা থেকে ঢাকাগামী রাজারহাট বি লঞ্চের মাস্টার মো. রিপন জাগো নিউজকে বলেন বলেন, ‘খাকদোন নদী দ্রুত খনন করা দরকার। শুধু এই নদীর জন্য আমাদের জাহাজ চলাচল করতে খুব ভোগান্তিতে পড়তে হয়। অনেক সময় পানি কম থাকায় ট্রিপ বাতিল হয়। আবার আসার পথে যাত্রীদের মাঝপথে নামাতে হয়। এতে যাত্রীরা আমাদের প্রতি অসন্তুষ্ট হয়। এখনই যদি নদীটি খনন করা না হয়, তাহলে এই রুটি আর জাহাজ চালানো সম্ভব হবে না।’
এমভি পুবালি-১ লঞ্চের মাস্টার আবুল হোসেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘বড় নদীতে যে গতিতে আমরা জাহাজ চালিয়ে আসি, খাকদোন নদীর নাব্য না থাকায় সে গতিতে চালাতে পারি না। জাহাজের গতি কম থাকায় বরগুনা নদীবন্দরে পৌঁছাতে আমাদের দেরি হয়। এতে যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়ে, আমাদেরও জাহাজ চালাতে কষ্ট হয়।’
Advertisement
একই লঞ্চের লস্কর কবির মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা লঞ্চ নিয়ে ঢলুয়ার পর আর ঘাটে আসতে পারি না। যাত্রী নামাতে অনেক কষ্ট হয়। দুই বছর ধরেই দেখি নদী খননের ড্রেজিং মেশিন নদীতে। তবে খনন না করায় নদীতে চর পড়ে ভরে গেছে।’
একইভাবে ভোগান্তির কথা বলেন লঞ্চের স্টাফ মো. রিপন। তিনি বলেন, ‘ভাটার সময় যখন নদীর পানি শুকিয়ে যায়, তখন লঞ্চ চালিয়ে আমরা ঘাট পর্যন্ত আসতে পারি না। যখন একেবারে পানি শুকিয়ে যায়, তখন ঘাট থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে ঢলুয়া এলাকায় যাত্রী নামাতে হয়। তবে বছরের পর বছর নদীতে ড্রেজিং মেশিন বাঁধা থাকতে দেখি, কিন্তু কোনো কাজের কাজ হয় না।’
এ বিষয়ে বরগুনা নদী বন্দরের সহকারী বন্দর ও পরিবহন কর্মকর্তা সৈয়দ মো. মাহবুবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি সমাধানে বিআইডব্লিউটিএর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নদীর গভীরতা পরিমাপ ও পরিদর্শন করে গেছে। এর পাশাপাশি নাব্য সংকট দূরীকরণে বন্দর কর্মকর্তা হিসেবে আমাদের ড্রেজিং বিভাগকেও জানানো হয়েছে।
বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, নৌপথটি সচল রাখতে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Advertisement
নুরুল আহাদ অনিক/এসআর/জিকেএস