নতুন বছরকে উদযাপন করা বিশ্বব্যাপী একটি উৎসব। যা সময়ের পরিবর্তন এবং ভৌগোলিক অবস্থানের ওপর নির্ভর করে বিভিন্ন সময়ে উদযাপিত হয়। জানেন কি, সবার আগে কোন দেশ নতুন বছরকে বরণ করে? বিশ্বের প্রথম দেশ যারা নতুন বছরকে উদযাপন করে, তা হলো কিরিবাতি এবং এর অন্তর্গত কিরিমাটি। এটি দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত এবং ইন্টারন্যাশনাল ডেট লাইনের একদম পূর্ব দিকে অবস্থান করছে।
Advertisement
এই সময়ের পার্থক্যের পেছনে মূল ভূমিকা পালন করে ইন্টারন্যাশনাল ডেট লাইন। এই লাইনটি নির্ধারণ করে কোন দেশ বা অঞ্চল প্রথম এবং কোন দেশ সবার শেষে নতুন বছরকে বরণ করবে। কিরিবাতি হচ্ছে সেই দেশ যারা সবার প্রথমে নতুন বছরকে বরণ করেন। কিরিবাতি সরকার ১৯৯৫ সালে তাদের সময় অঞ্চল পরিবর্তন করে ইন্টারন্যাশনাল ডেট লাইনের পূর্বে নিয়ে যায়, ফলে তারা নতুন বছর উদযাপনকারী প্রথম দেশ হিসেবে পরিচিতি পায়। এর আগে তারা ডেট লাইনের পশ্চিম দিকে ছিল এবং সময় হিসেবে বেশ পিছিয়ে ছিল।
অন্যদিকে নতুন বছরকে সবার শেষে উদযাপন করে আমেরিকার বেকার দ্বীপ এবং হাওল্যান্ড দ্বীপ। এই দ্বীপগুলো প্রশান্ত মহাসাগরের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে অবস্থিত এবং ইন্টারন্যাশনাল ডেট লাইনের ঠিক পশ্চিমে। ফলে তারা পৃথিবীর অন্য সব অঞ্চল থেকে ২৬ ঘণ্টা পরে নতুন বছর উদযাপন করে। এই দ্বীপগুলো জনমানবশূন্য, ফলে প্রকৃতপক্ষে সবার শেষে নতুন বছর উদযাপিত হয় হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে, যা বেকার দ্বীপের কাছাকাছি এবং বাসযোগ্য।
কিন্তু কেন এমন হয়?এই পার্থক্যের কারণ হলো ইন্টারন্যাশনাল ডেট লাইন, যা একটি কাল্পনিক রেখা। এটি উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু পর্যন্ত প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করেছে। এই রেখার পূর্ব দিকে নতুন তারিখ শুরু হয় এবং পশ্চিম দিকে পুরোনো তারিখ থাকে।
Advertisement
এর ফলে পৃথিবী গোলাকার হওয়ার কারণে সূর্যের আলো ভিন্ন ভিন্ন স্থানে ভিন্ন সময়ে পৌঁছায়। আন্তর্জাতিক সময়ের মান হিসেবে গ্রিনিচ মিন টাইম (জিএমটি) এবং কোঅর্ডিনেটেড ইউনিভার্সাল টাইম ব্যবহার করা হয়, যা সময়ের হিসাব রাখে। ইন্টারন্যাশনাল ডেট লাইন মূলত জিএমটি-কে ভিত্তি করে গঠন করা হয়েছে।
নতুন বছর উদযাপনের এই বৈচিত্র্য পৃথিবীর ভৌগোলিক অবস্থান এবং সময় ব্যবস্থাপনার ওপর নির্ভর করে। ইন্টারন্যাশনাল ডেট লাইনের অবস্থান এই প্রক্রিয়ার মূল কারণ। কিরিবাতি প্রথম এবং বেকার দ্বীপ সবার শেষে নতুন বছরকে বরণ করে নেয়, যা আমাদের গ্রহের সময়-ভিত্তিক বৈচিত্র্যকে প্রতিফলিত করে। নতুন বছরের প্রথম সূর্যের আলো দেখে যে দেশ আনন্দে মেতে ওঠে, আর সবার শেষে যে স্থান আলোয় ভরে ওঠে-এই দুটি দৃশ্যই সময়ের অদ্ভুত সৌন্দর্য তুলে ধরে।
আরও পড়ুন ২০২৪ সালে নারীদের যত গিনেস রেকর্ড আবার দেখা যদি হলো, প্রাণের মাঝে আয়কেএসকে/এএসএম
Advertisement