জাতীয়

শেখ হাসিনাকে দেশে এনে বিচারের দাবি মার্চ ফর ইউনিটিতে

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ সমাবেশ শেষ হয়েছে। সমাবেশে জুলাই অভ্যুত্থানে নির্বিচারে হত্যার দায়ে শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানানো হয়েছে।

Advertisement

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশে অভ্যুত্থানে আহত, নিহতের পরিবার, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা বক্তব্য দেন।

বক্তব্যে সবাই অভ্যুত্থান দমন এবং নিরপরাধ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা, খুন, গুমের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের দাবি জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে অভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ছাত্র-জনতাকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানানো হয়।

বিকেল সাড়ে ৫টায় সমাবেশ শেষ হয়। এর আগে মঙ্গলবার সকাল থেকেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও এর আশপাশ এলাকায় দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে ছাত্র জনতা একত্রিত হতে থাকে। এ সময় ছাত্র জনতা ‘খুনি হাসিনার বিচার চাই’, ‘আমার ভাই কবরে হাসিনা কেন বাহিরে’ ‘আবু সাইদ মুগ্ধ,শেষ হয়নি যুদ্ধ’ ইত্যাদি লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে আসে।

Advertisement

অভ্যুত্থানে শহীদ শাহরিয়ারের বাবা মো. আবুল হাসানের বক্তব্যের মাধ্যমে কর্মসূচি শুরু হয়। বলেন, আমার ছেলে মিরপুর ১০ নম্বরে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। আমাদের এখানে অনেক শহীদ পরিবার এবং আহত পরিবার আছে। আমার ছেলে নবম শ্রেণিতে পড়তো। খুনি হাসিনা পাখির মতো গুলি করে মানুষ হত্যা করেছে। খুনি হাসিনা ও তার মন্ত্রিপরিষদসহ হেলমেট বাহিনী এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। আমি চাই এই খুনি হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করা হোক। আমরা কোনো অজুহাত শুনতে চাই না। যদি এই খুনিদের বিচার না করা হয় আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হবো। আমাদের রাস্তায় নামাবেন না। আমরা চাই আমাদের সন্তান হত্যার বিচার করুন।

সমাবেশে আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।

আরও পড়ুন: ‘দড়ি লাগলে দড়ি নে, খুনি হাসিনার ফাঁসি দে’ নতজানু পররাষ্ট্রনীতি দেখতে চাই না: নাসীরুদ্দিন পাটওয়ারী ‘মার্চ ফর ইউনিটিতে’ গণহত্যার বিচার চাইলেন সারজিস

তিনি বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র জারি হওয়ার আগ পর্যন্ত পাড়ায় মহল্লায় মানুষের কাছে যাবেন। তারা কী বলতে চায় তা শুনবেন। আমরা ৩ আগস্ট এই শহীদ মিনার থেকে এক দফা ঘোষণা দিয়েছিলাম। এই অভ্যুত্থান অনেকেই মেনে নিতে পারেনি। এজন্যই পুলিশ, সচিবালয়ে অনেকেই আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। আপনাদের বলি আপনারা বাস্তবতা মেনে নেন। খুনি হাসিনা এই দেশে পুর্নবাসন হবে না। আমরা তাকে সীমান্তের ওপারে পাঠিয়েছি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, আমরা সরকারের কাছে এই গণহত্যার বিচার চাই। আমরা পাচার করা অর্থ ফেরত চাই, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং আহত যোদ্ধাদের সুচিকিৎসা চাই। সরকারকে আহ্বান জানাতে চাই, আমাদের দেশ সব দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে যাবে। কিন্তু সেই সুযোগে যদি কেউ আমাদের মাথায় উঠে বসতে চাই তাদের আমরা মাথা থেকে ফেলে দেব।

Advertisement

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমাবেশে যোগ দিতে আসা গাড়ি বহরে হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, গোপালগঞ্জে কীভাবে আমাদের সহযোদ্ধাদের ওপরে হামলা হয়? প্রশাসন কী করে? যদি কেউ সচিবালয়ে বসে ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করে সেই ষড়যন্ত্রকে সমূলে উৎখাত করতে হবে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, বাংলাদেশে নতুন করে চব্বিশে স্বাধীন হয়েছে। আমরা আর কোনো নতজানু পররাষ্ট্রনীতি দেখতে চাই না। দেশের প্রতি কোনো রাষ্ট্রের চোখ রাঙানি চলবে না। টেন্ডারবাজির দেশ দেখতে চাই না। আওয়ামী লীগকে বিচারের মাধ্যমে নিষিদ্ধের প্রক্রিয়ায় যেতে হবে। দেশের মাটিতে খুনি হাসিনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত মাঠ ছাড়বো না। আপনাদের জয় হবে। লড়াই শুরু হয়েছে, চলবে।

এনএস/এমআরএম/এএসএম