শিক্ষা

স্কুলে ভর্তি শেষ, আসন শূন্য থাকলে যেভাবে পূরণ

সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম শেষ হয়েছে। লটারিতে নির্বাচিতদের গত ১৮ ডিসেম্বর থেকে ভর্তি শুরু হয়। পরে আসন শূন্য থাকা সাপেক্ষে প্রথম ও দ্বিতীয় অপেক্ষমাণ তালিকা থেকেও ভর্তি নেওয়া হয়।

Advertisement

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) মেধাতালিকা ও দুটি অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে ভর্তির সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল। সেই হিসাবে সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টায় ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হয়।

তবে এরপরও যদি কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসন শূন্য থাকে তাতে ভর্তি নিতে হবে। বিশেষ করে কোটায় শিক্ষার্থী না পেলে সেখানে মেধা ও অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে নিয়ম মেনে ভর্তি নিতে হবে। কোনোভাবেই কোনো প্রতিষ্ঠান আসন শূন্য রাখতে পারবে না বলে নির্দেশনা দিয়েছে মাউশি।

নির্বাচিত তালিকার মধ্য থেকে কোটার শূন্য আসন পূরণ না হলে পর্যায়ক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে ক্রমানুসারে কোটার শূন্য আসন পূরণ করতে হবে। তারপরও যদি কোটার শূন্য আসন পূরণ না হয় সেক্ষেত্রে সাধারণ নির্বাচিতদের মধ্য থেকে তালিকার ক্রমানুসারে এ শূন্য আসন পূরণ করতে হবে। কোনোভাবেই আসন শূন্য রাখা যাবে না।

Advertisement

আরও পড়ুন

সরকারি স্কুলে ভর্তি আবেদনে হিড়িক, বেসরকারিতে আগ্রহ কম স্কুলে ভর্তির আবেদন-লটারি-ফল প্রকাশের খুঁটিনাটি

মাউশির মাধ্যমিক শাখার উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন জাগো নিউজকে জানান, নির্বাচিত তালিকার পর আরও দুটি অপেক্ষমাণ তালিকা দেওয়ায় আসন শূন্য থাকার সুযোগ কম। তবে কোটার ক্ষেত্রে আসন শূন্য থাকতে পারে। যেহেতু ভর্তি নীতিমালায় বলা হয়েছে, কোটার আসনগুলোতে ভর্তিযোগ্য শিক্ষার্থী না পাওয়া গেলে মেধা বা সাধারণ তালিকার শিক্ষার্থীদের সেখানে ভর্তি নিতে হবে। কোনোভাবে সেসব আসন শূন্য রাখা যাবে না।

তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও বিভিন্ন কলোনি কোটায় আসন শূন্য থাকতে পারে। বিষয়টি মনিটরিং করার জন্য মাউশির আঞ্চলিক কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রাজধানীর নামি স্কুলগুলোর বিষয়টি দেখভাল করছে মাউশির ঢাকা আঞ্চলিক কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।

শেষ সময়ে ভর্তি নিয়ে ‌‘লুকোচুরি’মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ রাজধানীর বেশ কয়েকটি নামি স্কুলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোটায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা প্রমাণপত্র হিসেবে কাগজপত্র আনতে না পারায় অনেক আসন ফাঁকা রয়েছে। সেসব আসনে নিয়ম মেনে যাতে ভর্তি নেওয়া হয়, তা নিশ্চিতে তৎপর মাউশি।

Advertisement

অভিভাবকদের অভিযোগ, মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকা মাউশি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে শেষ সময়ে ভর্তিতে অনিয়ম-দুর্নীতি করছে ঢাকার নামি কয়েকটি স্কুল। তারা দিনভর অপেক্ষায় থেকেও অপেক্ষমাণ তালিকা পাচ্ছে না। অনেকে আবার নির্দিষ্ট সময় পরে তালিকা প্রকাশ করেছে।

ফলে অভিভাবকদের মধ্যে সন্দেহ-সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে অনেক স্কুলে শিক্ষক ও অভিভাবকদের উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হওয়ার খবরও পাওয়া গেছে।

জানতে চাইলে মাউশির ঢাকা আঞ্চলিক কার্যালয়ের পরিচালক অধ্যাপক মো. মনোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আমরা কয়েকটি স্কুল পরিদর্শন করেছি। তাদের ভর্তি কার্যক্রম খতিয়ে দেখছি। এখান থেকে যে ফাইন্ডিংস পাবো, সেটা অধিদপ্তরকে অবহিত করবো।

মাউশির নির্দেশনা অনুযায়ী- গত ১৭ ডিসেম্বর সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তিতে শিক্ষার্থী নির্বাচনে ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠিত হয়। লটারিতে সরকারি স্কুলে ভর্তির জন্য ৯৮ হাজার ২০৫ জনকে নির্বাচিত করা হয়। আর বেসরকারি স্কুলে নির্বাচিত হয় ২ লাখ ৭ হাজারের কিছু বেশি শিক্ষার্থী।

তাছাড়া সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে ভর্তির জন্য প্রথম ও দ্বিতীয় অপেক্ষমাণ তালিকা করে দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী ভর্তি নিয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয়। তবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভর্তিতে অনিয়ম-দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগও রয়েছে।

এএএইচ/এমআইএইচএস