বেসরকারি ট্রেইনি চিকিৎসকদের ভাতা বাড়ানোর সিদ্ধান্তের পরও শাহবাগে ফিরে গিয়ে তাদের আন্দোলন অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্তকে ‘হঠকারিতামূলক’ বলে দাবি করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
Advertisement
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) রাতে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন স্বাক্ষরিত বেসরকারি ট্রেইনি চিকিৎসকদের ভাতা বৃদ্ধি আন্দোলন প্রসঙ্গে দেওয়া এক বার্তায় এসব কথা বলা হয়।
চিকিৎসকদের উদ্দেশে ওই বার্তায় বলা হয়, বেসরকারি ট্রেইনি চিকিৎসকদের ভাতা বৃদ্ধি আন্দোলন একটি যৌক্তিক আন্দোলন ছিল। বর্তমান সময়ে ২৫ হাজার টাকা ভাতা দিয়ে জীবনযাপন করা দুরূহ। যৌক্তিক কারণে আমরা ইতোপূর্বে তাদের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করি। তাদের আন্দোলন অসহিংস ও রাষ্ট্রবিরোধী না হওয়ায় আমরা তাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করি।
আরও পড়ুন
Advertisement
এতে উল্লেখ করা হয়, ২৯ ডিসেম্বর তারা মহাসমাবেশ ডাকে। কথা ছিল তারা সুশৃঙ্খলভাবে বিএসএমএমইউ বটতলায় আন্দোলন অবস্থান ধর্মঘট পালন করবে, কিন্তু তারা তাদের কথা রাখেননি। দুপুর ১২টার পর তারা শাহবাগ অবরোধ করেন। শাহবাগ অবরোধ করায় সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগের সম্মুখীন হয়েছে। আশেপাশে চার-পাঁচটি হাসপাতাল থাকায় রোগীদের চিকিৎসা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
সরকার তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে একটি মিটিং আয়োজন করে। ওই মিটিং এর নেতৃত্ব দেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধাপক সাইদুর রহমান। অধ্যাপক সাইদুর রহমানের আমন্ত্রণে ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ), ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (ড্যাব) ও জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করেন। সেখানে বেসরকারি ট্রেনিং চিকিৎসকদের একটি প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিল। বেসরকারি ট্রেনিং চিকিৎসকদের পক্ষে ডা. জাবির হোসেন ডা. নূরুন্নবী, ডা. ইমরান শিকদার অংশগ্রহণ করেন। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী আলোচনা হয়।
সরকার ভাতা প্রায় ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি করেছে জানিয়ে এতে বলা হয়, তাদের দাবি অনুযায়ী নবম গ্রেডের সমপরিমাণ বেতনের চেয়েও ভাতার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। কাজেই তাদের আন্দোলন কোনভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়। এরই মধ্যে আমাদের কাছে কিছু তথ্য এসেছে, তারা সরকারকে বিব্রত করার জন্য এই আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। আমরা জেনেছি এই আন্দোলনের পেছনে পতিত স্বৈরাচার সরকারের কিছু দুষ্কৃতকারী জড়িত হয়ে পড়েছে। পতিত স্বৈরাচারের দুষ্কৃতকারীরা এই আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা করছে।
সেখানে বলা হয়, আমরা পরিষ্কারভাবে ঘোষণা করছি, চিকিৎসকদের ন্যায়সঙ্গত যে কোনো আন্দোলনের সঙ্গে আমরা একাত্মতা পোষণ করবো। কিন্তু রাষ্ট্রবিরোধী ও স্বৈরাচারদের উসকানিতে কোনো আন্দোলন করা হলে সেখানে আমাদের কোন সম্পৃক্ততা থাকবে না। যেহেতু দেশের চিকিৎসকদের তিনটি বড় সংগঠন সরকারের ঘোষণার সঙ্গে একমত পোষণ করেছে, কাজেই আমরা বেসরকারি ট্রেইনি চিকিৎসকদের ভাতা বৃদ্ধির সঙ্গে পূর্বে একমত পোষণ করলেও এখন এই আন্দোলনের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
Advertisement
আরও পড়ুন
হাসনাতের আহ্বানেও রাস্তা ছাড়েননি চিকিৎসকরাওই বার্তায় বলা হয়, আমরা বেসরকারি ট্রেইনি চিকিৎসকদের দ্রুত কাজে ফিরে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানাই। এরই মধ্যে গত সাতদিন ধরে তারা কর্মবিরতি পালন করছেন। এতে অসহায় রোগীরা চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। চিকিৎসকের কাজ রোগীর সেবা করা, তাদের জিম্মি করা নয়। আমরা চিকিৎসকদের অনুরোধ করবো আপনারা শাহবাগ ছেড়ে হাসপাতালে যান, মানুষের ভোগান্তি দূর করুন।
এএএম/এমকেআর