থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনে বিকট শব্দে পটকা ফোটানো নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। বিগত দিনে ইংরেজি বছর সমাপ্তি উদযাপন ঘিরে নানান দুর্ঘটনার খবর শোনা গিয়েছিল। বাজির শব্দে অনেক পাখির মৃত্যু, কুকুর-বিড়ালকে আতঙ্কিত হয়ে ছুটোছুটি করতে দেখা গেছে। এমনকি শিশুমৃত্যুর খবরও শোনা গিয়েছিল। এ বছর বাজি-পটকা না ফুটিয়ে থার্টি ফার্স্ট উদযাপনের আহ্বান জানিয়েছেন এই অভিনেত্রী।
Advertisement
গত শুক্রবার বাংলাদেশে মুক্তি পেয়েছে জয়া আহসান অভিনীত নতুন সিনেমা ‘নকশি কাঁথার জমিন’। বিজয়ের মাসে মুক্তিযুদ্ধের এই সিনেমা মুক্তি বিশেষভাবে আন্দোলিত করেছে জয়ার অনুরাগীদের। শুরুর দিনে অনেকেই ছবিটি দেখতে গিয়েছিলেন প্রেক্ষাগৃহে। ছবি প্রসঙ্গে এই অভিনেত্রী জাগো নিউজকে বলেন, ‘বেশ কজন দর্শক ছবিটি দেখে তাদের ভালোলাগার কথা জানিয়েছেন। তবে সাধারণ দর্শকেরা ছবিটি দেখার পর কী বলেন সেটা জানার অপেক্ষায় আছি। কারণ মুক্তিযুদ্ধে অনেক সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেছিলেন। সাধারণ মানুষের চোখে সিনেমাটা কেমন সেটা জানা জরুরি।’
আরও পড়ুন যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের জন্যও আমার একই রকমের উপলব্ধি মেহজাবীন প্রসঙ্গে যা বললেন জয়া আহসান ঢাকাই জামদানিতে ভারতের মঞ্চে জয়াইংরেজি বর্ষবিদায় উদযাপন প্রসঙ্গেও জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেন এই অভিনেত্রী। তিনি বলেন, ‘আমাদের আরও সংবেদনশীল হতে হবে। আমরা বারবার ভুলে যাই যে, পৃথিবীটা শুধু আমাদের না, সমাজ শুধু মানুষকে নিয়ে নয়। এই সমাজের কুকুরটা পাহারা দেয়, বিড়ালটা আমাদের ফেলে দেওয়া খাবারগুলো খায়। যে কাকটা আমাদের মিউনিসিপ্যালের কাজ করে দিচ্ছে, সেটা খুব ইমপরটেন্ট আসলে। বিনা পয়সায় আমাদের আবর্জনা পরিষ্কার করে দিচ্ছে। এটা একটা ইকোলজিক্যাল ব্যালেন্স, আমরা একজনের ওপর আরেকজন ডিপেন্ডেবল। আমরা তাদের কথা যদি ভাবি, তারাও আসলে সমাজের অংশ, প্রকৃতির অংশ তো অবশ্যই, তার ভেতরে সমাজের অংশ। আমরা একটা গাছ কেটে ফেলি, গাছে যত পাখি, পোকামাকড়, প্রাণ-প্রকৃতি বাস করতো, তারা সবাই ঘরহারা হয়। একটা মানুষ যখন ঘরহারা হয়, নিশ্চিত আপনি উপলব্ধি করতে পারেন। পাখি যখন ঘরহারা হয়, পাখির বাচ্চা যখন মারা যায়, বাজ পড়ে বা পুজোর সময় বা থার্টি ফার্স্ট নাইটে বাজি ফুটিয়ে, আতশবাজি পুড়িয়ে … আমরা যেন এগুলো থেকে বিরত থাকি। আমরা যেন নিজেকে আর একটু সংবেদনশীল করে তোলার চেষ্টা করি।’
তরুণদের বিকল্প উপায়ে আনন্দ উদযাপন প্রসঙ্গে জয়া বলেন, ‘ইয়াং জেনারেশনের একটা বড় অংশ এখন এসব এড়িয়ে চলে। তারা আমাদের থেকে অনেক বেশি সংবেদনশীল। আমি কিন্তু আনন্দ করতে বারণ করছি না, আতশবাজি না পুড়িয়ে, বাজি-পটকা না ফুটিয়েও অনেকভাবে আনন্দ করা যায়। আমরা গত বছর দেখেছি, একটা বাচ্চার হার্টের অসুখ ছিল, বাজির শব্দে বাচ্চাটা তাৎক্ষণিক মারা গেছে। একটা বাচ্চা স্থায়ীভাবে শ্রবণ প্রতিবন্ধী হয়ে গেছে। হাজার হাজার পাখি মারা গেল! আমরা মানুষেরা আমাদের মতো করে শুনি, তার চেয়ে অনেক বেশি শুনতে পায় পাখি, কুকুর, বিড়াল। তাদের কানে বাজির আওয়াজটা বেশি আঘাত করে। সেটা খুব ভীতিকর। আমার চাওয়া, সবাই একটু সংবেদনশীল হোক।’
Advertisement
আগামী ৩০ জানুয়ারি থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি নেদারল্যান্ডসের রটারড্যাম শহরে বসবে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। রটারড্যাম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হবে জয়া আহসান অভিনীত সিনেমা ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’ উপন্যাস অবলম্বনে সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন ভারতের পরিচালক সুমন মুখোপাধ্যায়। এতে কুসুম চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া। তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন কলকাতার আবীর চট্টোপাধ্যায়। বিশেষ চরিত্রে দেখা যাবে পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় ও অনন্যা চট্টোপাধ্যায়কে।
আরএমডি/জিকেএস