প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে এখনো স্থবির হয়ে রয়েছে নাটোর জেলা পরিষদের নিয়মিত কার্যক্রম। নেই কোনো প্রকৌশলী ও সহকারী প্রকৌশলী। ফলে আটকে আছে উন্নয়ন কাজ। আবার পূর্বে যা টেন্ডার দেওয়া হয়েছিল প্রকৌশলীর অভাবে সেসব কাজও শুরু করা যায়নি। নতুন করে বরাদ্দপ্রাপ্ত টাকার কোনো টেন্ডার আহ্বান করাও যাচ্ছে না।
Advertisement
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ছয় মাস আগে নাটোর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মামুন ভুঁইয়াকে অন্যত্র বদলি করা হয়। এরপরই বদলি হয়ে যান জেলা পরিষদের প্রকৌশলী এবং সহকারী প্রকৌশলী। এ অবস্থায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নির্দেশে পরবর্তী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা যোগ না দেওয়া পর্যন্ত জেলা পরিষদের কাজ চালিয়ে নেওয়ার জন্য নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাসুদুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু প্রকৌশলী ও সহকারী প্রকৌশলী না থাকায় কোনো উন্নয়নমূলক কাজ করতে পারেননি তিনি।
এ অবস্থায় সম্প্রতি শামিম ভূঁইয়াকে জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে পদায়িত করা হয়। কিন্তু প্রকৌশলী ও সহকারী প্রকৌশলী না থাকায় তিনিও কোনো কাজ করতে পারছেন না। ইতোপূর্বে টেন্ডারকৃত কাজের কার্যাদেশ দিতেও পারছেন না। আবার নতুন কোনো টেন্ডার আহ্বানও করতে পারছেন না।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, গত বছর ডিসেম্বরে বরাদ্দকৃত উন্নয়ন প্রকল্পের চার কোটি ২৫ লাখ টাকার টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এরপরই প্রকৌশলী ও সহকারী প্রকৌশলীকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে অন্যত্র বদলি করা হয়। ফলে নাটোর জেলা পরিষদ হয়ে পড়ে প্রকৌশলীশূন্য। এ কারণে টেন্ডারে কাজ পাওয়া ঠিকাদাররা কার্যাদেশ পাচ্ছেন না। এরপর নতুন করে প্রায় ৫ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজের বরাদ্দ পাওয়া গেলেও নতুন করে টেন্ডার আহ্বান করা যাচ্ছে না। ফলে জেলা পরিষদের বরাদ্দকৃত কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে।
Advertisement
জেলা পরিষদের অফিস সহকারী আকবর হোসেন জানান, জেলা পরিষদ থেকে মূলত মসজিদ, মন্দির, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ঈদগাহ মাঠ, বিভিন্ন সমাজিক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও রাস্তা উন্নয়নের মতো প্রকল্পের কাজ করা হয়ে থাকে। কিন্তু প্রকৌশলীশূন্য হয়ে পড়ায় এসব কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। জেলা পরিষদে কর্মকর্তা না থাকায় আমরা কোনো কাজই করতে পারছি না। উন্নয়ন কাজের অনুমোদন দেখভালের জন্য কর্মকর্তা না থাকায় আমাদের কাজে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।
জেলা পরিষদের কাজ পাওয়া ঠিকাদাররা জানান, কাজ পেয়েও কার্যাদেশ না পাওয়ায় কাজ শুরু করতে পারছেন না। কারণ এসব কাজ দেখার জন্য কোনো কর্মকর্তা নেই।
নাটোর জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শামিম ভুঁইয়া বলেন, জেলা পরিষদের কাজ করানোর জন্য প্রকৌশলী ও সহকারী প্রকৌশলী নেই। এ অবস্থায় প্রকল্প বাস্তবায়ন ও প্রকল্প গ্রহণ করা নিয়ে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। উন্নয়ন কাজে দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। আমরা চেষ্টা করছি এসব অচলাবস্থা কাটিয়ে ওঠার।
রেজাউল করিম রেজা/এফএ/এমএস
Advertisement