শিক্ষা

এমপিও পেতে ‘ডামি দাখিল পরীক্ষার্থী’ কেনে মাদরাসা

মাদরাসায় ষষ্ঠ-নবম শ্রেণি পর্যন্ত কোনো ক্লাসে সাত-আটজনের বেশি শিক্ষার্থী নেই। তবু প্রতিবছর দাখিলে ২০-২১ জন পরীক্ষার্থী ঠিকই অংশ নেয়। খুব ভালো ফল না করলেও তারা পাস করে যায়। পরের বছর তারাই আবার রেজিস্ট্রেশন করে দাখিল পরীক্ষা দেয়। রেজিস্ট্রেশনে শিক্ষার্থীর নাম কিছুটা ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে লেখা হলেও ঠিক থাকে বাবা-মায়ের নাম।

Advertisement

২০১৬ সাল থেকে এমন ‘ডামি দাখিল পরীক্ষার্থী’ দিয়ে চলছে ৩০ বছর বয়সী গাইবান্ধা সদর উপজেলার ‘রামপ্রসাদ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা’। কিন্তু কেন এ ডামি পরীক্ষার্থীর আয়োজন? আলোচিত এ মাদরাসার সুপার মো. রেজাউল করিম রাখঢাক না করেই বলেন, ‘এমপিও পেতে তো ২০ জন পরীক্ষার্থী লাগে। আমাদের এমপিওটা দরকার। পকেটের টাকা খরচা করে পরীক্ষার্থী কিনি। লাখ টাকা খরচা হয়ে যায়। কত লাখ খরচ করে ফেললাম। এমপিও পাই না। এমপিওটা একবার পাইয়া লই, তারপর আর পরীক্ষার্থী কিনমু না।’

অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৯৯৪ সালে গাইবান্ধা সদর উপজেলায় প্রতিষ্ঠিত হয় রামপ্রসাদ দাখিল মাদরাসা। শুরু থেকেই শিক্ষার্থী সংকটে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে মাদরাসাটি। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণিতে ছয়-সাতজনের বেশি শিক্ষার্থী নেই। প্রতিষ্ঠানে মোট ১৩ জন শিক্ষক ও চারজন কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন। এমপিওভুক্ত না হওয়ায় সরকারের সুযোগ-সুবিধা পান না শিক্ষক-কর্মচারীরা। তাদের লক্ষ্য এখন যেভাবেই হোক এমপিও বাগিয়ে নেওয়া। তারপর ‘চেয়ার-টেবিল’ থাকলেই বসে বসে বেতন তুলতে পারবেন তারা।

অভিযোগ ওঠা পরীক্ষার্থীদের রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বরগুলো ধরে আমরা তদন্ত করছি। এটা স্পষ্টই জাল পরীক্ষার্থী বলে প্রতীয়মান। শুধু রামপ্রসাদ মাদরাসা নয়, প্রায় একইভাবে আরও অনেক মাদরাসা প্রতিষ্ঠান এমন প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে।- মাদরাসা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহবুব হাসান

Advertisement

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ, মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে ধরনা দিয়েও কাজ হয়নি। তারা জানিয়ে দেন, দাখিলে প্রতিবছর অন্তত ২০ জন পরীক্ষার্থী থাকার শর্তপূরণ করলে এমপিও দেওয়া হবে। এরপর জেলা ও জেলার বাইরের কয়েকটি মাদরাসা থেকে এমন ‘ডামি দাখিল পরীক্ষার্থী’ বানানোর কৌশল জানতে পারেন রামপ্রসাদ মাদরাসার শিক্ষকরা। সময় নষ্ট না করে তারাও লেগে পড়েন ডামি পরীক্ষার্থীর খোঁজে।

শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন, ফরম পূরণ, খাতা-কলম কেনা, পরীক্ষার কেন্দ্রে যাতায়াত, খাবার-নাস্তাসহ সব খরচ বহনের ‘অভিনব অফার’ দেন মাদরাসার শিক্ষকরা। তবু প্রকৃত শিক্ষার্থী না পেয়ে আগের বছর উত্তীর্ণ হওয়া প্রার্থীকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে ‘ডামি পরীক্ষার্থী’ জোগাড় করে রামপ্রসাদ মাদরাসার শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটি।

৩৯ ডামি পরীক্ষার্থী, চলছে তদন্ত

২০১৬ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত দাখিল পরীক্ষায় রামপ্রসাদ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসায় ৩৯ জন ডামি পরীক্ষার্থীর খোঁজ মিলেছে। বিষয়টি নিয়ে গাইবান্ধা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) অফিসে অভিযোগ জমা পড়ে। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যম হয়ে তা বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে এসেছে। সেখানে ৩৯টি ডামি পরীক্ষার্থীর রোল নম্বর দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি বর্তমানে মাদরাসা বোর্ডে তদন্তাধীন।

আরও পড়ুন৪১ মাদরাসা শিক্ষকের এমপিও বাতিল, বেতন-ভাতা ফেরতের নির্দেশচাকরির বয়স দুই বছর না হলে মাদরাসা শিক্ষকের বদলির সুযোগ নেইএমপিওভুক্তির জটিলতা নিরসনের উদ্যোগ মাদরাসা অধিদপ্তরেরস্কুল থেকে ছাত্ররা কওমি মাদরাসায় চলে যাচ্ছে, এটা ঠেকাতে হবে

পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শেষ না হলেও এ পরীক্ষার্থীরা যে জাল বা ডামি পরীক্ষার্থী তা নিশ্চিত হয়েছেন মাদরাসা বোর্ড কর্মকর্তারা। বিষয়টি নিয়ে মাদরাসা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহবুব হাসান জাগো নিউজকে বলেন, ‘অভিযোগ ওঠা পরীক্ষার্থীদের রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বরগুলো ধরে আমরা তদন্ত করছি। এটা স্পষ্টই জাল পরীক্ষার্থী বলে প্রতীয়মান। শুধু রামপ্রসাদ মাদরাসা নয়, প্রায় একইভাবে আরও অনেক মাদরাসা প্রতিষ্ঠান এমন প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে।’

Advertisement

ডামি পরীক্ষার্থীদের রোল নম্বর

২০২২ সালে সবচেয়ে বেশি ১০ জন ডামি পরীক্ষার্থী ছিল মাদরাসাটির। সে বছর মাদরাসাটি থেকে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নেয় ২১ জন। তার মধ্যে ডামি প্রার্থী হিসেবে পরীক্ষা দেওয়া শিক্ষার্থীদের রোল নম্বরগুলো হলো—১৬৬১৯৭, ১৬৬২০৮, ১৬৬১৯৯, ১৬৬২০২, ১৬৬২০৯, ১৬৬১৯৩, ১৬৬২০৬, ১৬৬২০১, ১৬৫৯৯৭ ও ১৬৬১৯১।

আমি ২০২০ সালে দায়িত্ব নিয়েছি। তার আগে কতটা কী হয়েছে, তা বলতে পারি না। আমি এসে বিভিন্নভাবে ছাত্র-ছাত্রী জোগাড় করে পরীক্ষা দেওয়াই। শিক্ষক-কর্মমচারীরা নিজেদের পকেটের টাকা দিয়ে খরচা করে কাজটা (ডামি পরীক্ষার্থী জোগাড়) করেছি।– মাদরাসার সুপার রেজাউল করিম

২০১৮, ২০২০ ও ২০২১ সালে প্রতিবছর পাঁচজন করে ডামি পরীক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষা দেয়। ২০১৮ সালের ডামি পরীক্ষার্থীরা হলো—১৭৫৩৫৩, ১৭৫৩৫৬, ১৭৫৩৫০, ১৭৫৩৫২ ও ১৭৫৩৪৪। ২০২১ সালের ডামি পরীক্ষার্থীরা হলো—১৬৯০২৪, ১৬৯০৩৭, ১৬৯০৩৯, ১৬৯০৩৮ ও ১৬৯০৩২। তাছাড়া ২০২০ সালে অংশ নেওয়া ডামি পরীক্ষার্থীদের রোল নম্বরগুলো হলো—১৫৭০০৩, ১৫৭০০৮, ৬১৫৩৭৪, ১৫৭০১০ ও ৩১৫৩৭৭।

অন্য বছরগুলোতে ডামি পরীক্ষার্থী হিসেবে পাস করা শিক্ষার্থীদের রোল নম্বরগুলো হলো—২০২৩ সালের ১৬৪৭৫০, ১৬৪৭৩৬, ১৬৪৭৪৭ ও ১৬৪৭৫২; ২০২৪ সালের ১৭২৯৭২, ১৭২৯৭৯, ১৭২৯৬৭ ও ১৭২৯৭০; ২০১৯ সালের ১৮১১৪৪ ও ১৮০৯৭৩, ২০১৭ সালের ১৬৬৫৩৮ ও ১৬৬৫৪২ এবং ২০১৬ সালে ১৬৫৪৭৪ রোল নম্বরধারী ডামি পরীক্ষার্থী ছিল।

যেভাবে বোকা বানিয়ে শিক্ষা বোর্ডকে ফাঁকি

২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে নবম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন করে আল-এমরান। বাবার নাম আব্দুর রাজ্জাক, মায়ের নাম হেনা বেগম। ২০১৭ সালে দাখিল পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয় সে। সেবার তার নামের বানান ছিল ইংরেজিতে AL-EMRAN।

২০১৬-১৭ সালে সে আবার রেজিস্ট্রেশন করে। বাবা-মায়ের নাম ঠিক থাকলেও এবার তার নাম ইংরেজিতে MD. EMRAN MIA করা হয়। ২০১৮ সালে আবারও সে দাখিল উত্তীর্ণ পরীক্ষায় হয়।

২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষে তৃতীয়বার একই শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করে। প্রথমবারের সঙ্গে সব মিল থাকলেও এবার তার নামের আগে শুধু ‘এমডি’ লাগিয়ে দেওয়া হয়। অর্থাৎ, ইংরেজিতে তার নাম দেওয়া হয় MD. AL-EMRAN। এ নাম দিয়ে ২০২০ সালেও সে দাখিল পাস করে।

বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রথমবার আল-এমরান, দ্বিতীয়বার মো. এমরান মিয়া এবং সবশেষ মো. আল-এমরান নামে রেজিস্ট্রেশন করে তিনবার দাখিল পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয় একই জন।

সবচেয়ে বড় বিষয় এখানে (মাদরাসা শিক্ষায়) অনিয়ম-দুর্নীতি করে যে পার পাওয়া যায়, সেটি স্ট্যাবলিশড (প্রতিষ্ঠিত) হয়ে গেছে। সবাই যে যার মতো করে খেয়াল-খুশিমতো কাজ করছে। এটা দেখভাল বা নিয়ন্ত্রণের জন্য যে জনবল ও সুযোগ-সুবিধা দরকার তা সরকার বোর্ডে নিশ্চিত করতে পারছে না। সীমাহীন দুর্নীতি রোধে দক্ষ জনবল প্রয়োজন।- মাদরাসা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহবুব হাসান

বিষয়টি নিয়ে আল-এমরানের বাবা আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এসব বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমার ছেলে অনেক বছর আগে ম্যাট্রিক পাস করেছে। ও এখন আর পড়াশোনা করে না। মাস্টাররা টাকা-পয়সা দিয়েছে কি না তাও বলতে পারবো না।’

একইভাবে ২০১৬ সালে প্রথমবার রামপ্রসাদ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসা থেকে দাখিল পাস করে আব্দুল হান্নান। তার বাবার নাম আহম্মদ আলী, মায়ের নাম হালিমা বেগম। প্রথমবার সে আব্দুল হান্নান, দ্বিতীয়বার ২০১৮ সালে মো. আব্দুল হান্নান এবং সবশেষ ২০১৯ সালে মো. হান্নান মিয়া নামে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।

তাছাড়া নুর মোহাম্মদ নামে আরেকজনও একইভাবে নামের বানান ও নাম এদিক-সেদিক করে ২০১৮, ২০২১ ও ২০২৩ সালের দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিয়ে রামপ্রসাদ মাদরাসা থেকে পাস করেছে।

এমপিও পেতেই ভয়াবহ এ প্রতারণা

মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর আলিয়া ঘরানার মাদরাসাগুলো দেখভাল করে। তারা এমপিও দেয়, অনিয়ম-দুর্নীতি তদন্ত করে। অধিদপ্তরের নিয়মানুযায়ী—কোনো মাদরাসায় ধারাবাহিকভাবে অন্তত পাঁচ বছর কমপক্ষে ২০ জন পরীক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষায় অংশ না নিলে সেই প্রতিষ্ঠানকে এমপিও দেওয়ার জন্য বিবেচনা করা হয় না।

প্রতিবছর ডামি পরীক্ষার্থী কিনে এমপিও পাওয়ার দ্বারপ্রান্তে এসে ধরা খেয়েছে রামপ্রসাদ ইসলামিয়া মাদরাসা। মাদরাসার সুপার খোদ নিজে এ কথা স্বীকার করেছেন। সুপার রেজাউল করিম জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি ২০২০ সালে দায়িত্ব নিয়েছি। তার আগে কতটা কী হয়েছে, তা বলতে পারি না। আমি এসে বিভিন্নভাবে ছাত্র-ছাত্রী জোগাড় করে পরীক্ষা দেওয়াই। শিক্ষক-কর্মচারীরা নিজেদের পকেটের টাকা দিয়ে খরচা করে কাজটা (ডামি পরীক্ষার্থী জোগাড়) করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘এটা শুধু আমরা একা করছি তা না। আমার জেলায় অনেক মাদরাসা এটা করছে। অনেক স্কুলও এটা করে এমপিও নিয়েছে। আমরা সবই জানি। আমাদেরটা জানাজানি হয়েছে গ্রুপিংয়ের কারণে। একটা প্রতিষ্ঠানের লোকজনের সঙ্গে আমাদের দ্বন্দ্ব হইছিল। তখন বিষয়টা তারা অভিযোগ দিয়েছে। তা না হলে আপনারা জানতে পারতেন না।’

গাইবান্ধা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রোকসানা বেগম বলেন, ‘একটা-দুইটা ছাত্রও নাই। তাদের এমপিও দিয়ে দেয়। মাদরাসায় এগুলো বেশি। আমরা মাদরাসার বিষয়গুলো দেখি না। তারা আমাদের দেখতে দেয় না। কিছু অফিসিয়াল কাজ আসে, সেটা আমরা অধিদপ্তরে পাঠিয়ে দেই।’

তিনি বলেন, ‘অনিয়ম-দুর্নীতি রোধে সেবা ও প্রক্রিয়াগুলো বিকেন্দ্রীকরণ করা উচিত। অথচ সেটা বাতিল করে মাদরাসা অধিদপ্তর কেন্দ্রীকরণ করেছে। ফলে মাঠপর্যায়ে ঘুরে অনিয়ম ধরার লোক নেই তাদের। সুযোগ পেয়ে মাদরাসাগুলো দেদারসে অনিয়ম করছে। স্কুলেও যে এমনটা হচ্ছে না তা নয়। স্কুলের বিষয়গুলো আমরা গুরুত্ব দিয়ে তদারকি করি। সেজন্য জাল-জালিয়াতি কিছুটা কম।’

দায় এড়াতে পারে না মাদরাসা বোর্ড-অধিদপ্তর

মাদরাসার অনিয়ম-দুর্নীতি খুঁজে বের করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয় মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। আর দাখিল পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন, ফরম পূরণ বিষয়গুলো দেখে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড। সেই হিসেবে এমন অনিয়ম-দুর্নীতি শিক্ষা বোর্ড ও অধিদপ্তরের কাঁধে বর্তায়।

মাদরাসা অধিদপ্তর বলছে, পরীক্ষা-সংক্রান্ত অনিয়মগুলো মাদরাসা বোর্ড দেখে। পাঠদানের অনুমতিও দেয় বোর্ড। সেক্ষেত্রে এটার এখতিয়ার তাদের। দায়ভারও তাদের। এ কাজে সহযোগিতা চাইলে তারা বোর্ডকে সব ধরনের সহায়তা করেন।

মাদরাসা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (অর্থ) মো. আবুল বাসার জাগো নিউজকে বলেন, ‘দাখিল পরীক্ষার বিষয়টি মাদরাসা বোর্ড দেখে। ফাজিল-আলিম পরীক্ষার বিষয়টি দেখে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়। আমরা এমপিও দেই। যেসময় এমপিও দেয়, তখন তাদের দাখিল পরীক্ষার্থী কতজন ছিল, কেমন ফলাফল এসব বিষয় দেখি। তারপরও এমন অভিযোগ কারও বিরুদ্ধে থাকলে আমরা পদক্ষেপ নেবো।’

অন্যদিকে মাদরাসা বোর্ড বলছে, সব কিছু অনলাইনে হওয়ায় এটা ধরার সুযোগ নেই। আবার সরেজমিনে মাদরাসাগুলো ঘুরে দেখার মতো জনবলও তাদের নেই। বোর্ডে রেজিস্ট্রারসহ অসংখ্য পদ ফাঁকা। অধিকাংশ সময় জনবল সংকটে ভুগছে মাদরাসা বোর্ড।

মাদরাসা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মোহাম্মদ মাহবুব হাসান জাগো নিউজকে বলেন, ‘সবচেয়ে বড় বিষয় এখানে (মাদরাসা শিক্ষায়) অনিয়ম-দুর্নীতি করে যে পার পাওয়া যায়, সেটি স্ট্যাবলিশড (প্রতিষ্ঠিত) হয়ে গেছে। সবাই যে যার মতো করে খেয়াল-খুশিমতো কাজ করছে। এটা দেখভাল বা নিয়ন্ত্রণের জন্য যে জনবল ও সুযোগ-সুবিধা দরকার তা সরকার বোর্ডে নিশ্চিত করতে পারছে না। সীমাহীন দুর্নীতি রোধে দক্ষ জনবল প্রয়োজন।’

এএএইচ/এএসএ/জেআইএম