৩৬ কোটি ৩৬ লাখ ৯৭ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ এবং ৯৮টি ব্যাংক হিসাবে ৩ হাজার ১৮১ কোটি ৫৮ লাখ ৮৩ হাজার টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগে সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
Advertisement
এছাড়া জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বিপুর স্ত্রী সীমা হামিদ ও ছেলে জারিফ হামিদের নামেও পৃথক মামলা করেছে সংস্থাটি। এসব মামলায়ও আসামি হয়েছেন নসরুল হামিদ।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রথম মামলার এজাহার সূত্রে জানা জানা যায়, দুর্নীতি ও ঘুসের মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস গোপন করার উদ্দেশে হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করায় দুদক আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় বিপুর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
Advertisement
আরও পড়ুন
নসরুল হামিদের অফিসে রাতভর অভিযান পলক ও নসরুলের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে দুদকদ্বিতীয় মামলায় আসামি হয়েছেন নসরুল হামিদ বিপু ও তার ছেলে জারিফ হামিদ। এ মামলায় জারিফের বিরুদ্ধে ২০ কোটি ৮৭ লাখ ৬৬ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। পাশাপাশি তার ২০টি ব্যাংক হিসাবে ২৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা জমা ও ১৭ কোটি ৪১ লাখ টাকা উত্তোলন হয়েছে।
মামলার এজাহারে এই লেনদেনকে ‘অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক’ উল্লেখ করে এটিকে মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধ বলছে দুদক। পাশাপাশি নসরুল হামিদের প্রভাব ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে তার ছেলে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মালিকানা অর্জন করেছেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
তৃতীয় মামলার আসামি নসরুল হামিদ ও তার স্ত্রী সীমা হামিদ। এজাহারে সীমার বিরুদ্ধে ৬ কোটি ৯৪ লাখ ৩৩ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
Advertisement
পাশাপাশি তার ২০টি ব্যাংক হিসাবে ১২ কোটি ৭৭ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৯ টাকা জমা ও ১১ কোটি ১৮ লাখ ৪৯ হাজার ৮১৮ টাকা উত্তোলন হয়েছে। এজাহারে এই লেনদেনকে ‘অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক’ উল্লেখ করে এটিকে মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধ বলছে কমিশন। এছাড়া নসরুল হামিদের প্রভাব ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে তার স্ত্রী জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মালিকানা অর্জন করেছেন বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন
নসরুল হামিদের অফিস থেকে টাকা ও বিদেশি মুদ্রা উদ্ধারগত ২২ আগস্ট নসরুল হামিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে নামে দুদক। ওইদিন তার প্রতিষ্ঠান হামিদ গ্রুপে অভিযান চালায় যৌথবাহিনী। ঢাকা জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী এ অভিযান চালায়। অভিযানে রাজধানীর বনানীর নসরুল হামিদের ‘প্রিয় প্রাঙ্গণ’ নামে ভবনের ভেতর থেকে বেশ কয়েকটি ভল্টে থাকা নগদ অর্থ ও বৈদেশিক মুদ্রা (প্রায় ১০ লাখ টাকা ও ২০০ তুর্কি মুদ্রা) এবং অস্ত্র-গুলিসহ অন্য সামগ্রী জব্দ করা হয়।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে আত্মগোপনে আছেন সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু।
এসএম/এমকেআর