দক্ষিণ কোরিয়াকে বর্তমানে বলা হচ্ছে অতি-বয়স্ক একটি দেশ। এর কারণ, সেখানে মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশেরও বেশি মানুষের বয়স ৬৫ বছর বা তার বেশি। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) প্রকাশিত সরকারি তথ্য অনুযায়ী, দেশটির ক্রমবর্ধমান বয়স্ক জনসংখ্যা এবং আশঙ্কাজনক হারে কমে আসা জন্মহার এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী।
Advertisement
বিশ্বের অন্যতম নিম্ন জন্মহারের দেশ দক্ষিণ কোরিয়া। ২০২৩ সালে সেখানে একেকজন নারীর সন্তান জন্মদানের হার ছিল মাত্র ০ দশমিক ৭, যা ২ দশমিক ১-এর পরিবর্তনশীল হারের চেয়ে অনেক কম। এই হারে দেশটির জনসংখ্যা ক্রমশ বয়স্ক ও কমতে থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন>>>
প্রেম-ভালোবাসায় সবচেয়ে অসুখী দেশ জাপান-কোরিয়া পুরুষদের আত্মহত্যা বেড়ে যাওয়ায় নারীরা দায়ী: দ. কোরীয় রাজনীতিক দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের শেষ রক্ষা হলো নাবর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ার মোট জনসংখ্যা ৫ কোটি ১২ লাখ, যার মধ্যে ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সীদের সংখ্যা এক কোটি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০০৮ সালে যেখানে এই সংখ্যা ছিল ৫০ লাখেরও কম, তা বর্তমানে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। এসব বয়স্ক লোকদের মধ্যে পুরুষদের হার ৪৪ শতাংশ।
Advertisement
এ অবস্থায় জাপান, জার্মানি এবং ফ্রান্সের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দক্ষিণ কোরিয়াও এখন ‘অতি-বয়স্ক দেশ’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
জনসংখ্যা স্থিতিশীল রাখতে এরই মধ্যে নানা নানা পদক্ষেপ নিয়েছে দক্ষিণ কোরীয় সরকার। ডিম সংরক্ষণে ভর্তুকি দেওয়া থেকে শুরু করে নতুন দম্পতিদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের মতো কর্মসূচি চালু করেছে সিউল কর্তৃপক্ষ। তবে এসব উদ্যোগে এখন পর্যন্ত আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যায়নি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০৬৭ সালের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার জনসংখ্যা ৩ কোটি ৯০ লাখে নেমে আসতে পারে। তখন দেশটির জনসংখ্যার গড় বয়স হতে পারে ৬২ বছর।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দক্ষিণ কোরিয়ায় নিম্ন জন্মহারের পেছনে রয়েছে একাধিক কারণ। উচ্চ সন্তান লালন-পালনের খরচ, বাড়ি কেনার জন্য অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন, এবং কর্মক্ষেত্রের চরম প্রতিযোগিতা—এসবই মানুষকে বিয়ে ও সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে বিরত রাখছে।
Advertisement
এছাড়া, কর্মজীবী নারীরা বাড়তি চাপের মুখে রয়েছেন। তারা পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি গৃহস্থালির কাজ এবং সন্তানের যত্ন নেওয়ার মতো দ্বৈত ভূমিকা পালন করছেন। এসব কারণে জন্মহার বাড়ানোর চেষ্টাগুলো ব্যর্থ হচ্ছে।
সূত্র: এএফপিকেএএ/