আওয়ামী লীগ সরকারের প্রায় ২০০ মন্ত্রী, এমপির অবৈধ সম্পদ অর্জন ও বিদেশে টাকা পাচারের বিষয়টি অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সেই অনুসন্ধানে এখন পর্যন্ত ২৪ জনের দ্বৈত নাগরিকত্ব বা রেসিডেন্স কার্ড থাকার ব্যাপারে তথ্য পেয়েছে (দুদক)। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
Advertisement
ওই মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে তা দুদককে অবহিত করার জন্যও চিঠিতে বলা হয়েছে।
সোমবার দুদকের পরিচালক মো. রফিকুজ্জামান চিঠি দুটি পাঠিয়েছেন।
মো. রফিকুজ্জামান বলেন, বিদেশি নাগরিকত্ব নিয়ে এখন পর্যন্ত ২৪ জন এমপি-মন্ত্রী হয়েছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। তাদের নাগরিকত্বের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দুদক থেকে চিঠি দুটি পাঠানো হয়েছে।
Advertisement
বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করলে বা বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য স্বীকার করলে তিনি সংসদ সদস্য বা মন্ত্রী হতে পারেন না।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সাইপ্রাসের নাগরিকত্ব রয়েছে। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের রয়েছে বেলজিয়ামের ‘রেসিডেন্স কার্ড’।
সাবেক ৫ মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব রয়েছে। তারা হলেন আ হ ম মুস্তফা কামাল, মো. তাজুল ইসলাম, সাইফুজ্জামান চৌধুরী, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং মো. মাহবুব আলী। মাহবুব আলী বর্তমানে কারাগারে রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব বা গ্রিন কার্ডধারী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন সাবেক চারজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ মোট সাতজন সংসদ সদস্য। তারা হলেন- আব্দুস শহীদ, নসরুল হামিদ, জুনাইদ আহমেদ, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, আবদুস সোবহান মিয়া (গোলাপ), মাহফুজুর রহমান এবং সালাউদ্দিন মাহমুদ জাহিদ। তাদের মধ্যে সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ, সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ এবং সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সোবহান বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
Advertisement
আরও পড়ুন: দুদকের টার্গেটে সাবেক আরও ৬ মন্ত্রী-এমপি
এছাড়া কানাডার নাগরিকত্বধারী হিসেবে ছয়জনের নাম এসেছে, তারা হলেন- আবদুর রহমান, মাহবুব উল আলম হানিফ, আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী (নাসিম), শামীম ওসমান, শফিকুল ইসলাম (শিমুল) এবং হাবিব হাসান।
সাবেক স্থানীয় সরকারমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সুইজারল্যান্ডের নাগরিকত্ব রয়েছে। সাবেক রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম জাপানে থাকার অনুমতি (রেসিডেন্স কার্ড) পেয়েছেন। সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর হাসান (টাঙ্গাইল-২) জার্মানির নাগরিক এবং এম এ ওয়াহেদ (ময়মনসিংহ-১১) পাপুয়া নিউগিনির নাগরিক। দুদকের অনুসন্ধানে উঠে আসা ২৪ জনের মধ্যে ৫ জন বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। বাকিদের ৫ আগস্টের পর থেকে হদিস মেলেনি, অনেকে গোপনে দেশত্যাগ করেছেন বলে খবর প্রকাশ হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতার পালাবদলের পর আওয়ামী লীগ সরকারের একাধিক প্রভাবশালী মন্ত্রী এমপিদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামে দুদক। কয়েকজনের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে মামলাও দায়ের করেছে সংস্থাটি।
এসএম/এমএইচআর