গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময় নিয়ে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে আলোচনায় ৯০ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। তবে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এখনো সমঝোতার প্রয়োজন রয়েছে বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন আলোচনায় জড়িত একজন শীর্ষ ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা।
Advertisement
প্রধান মতভেদগুলোর মধ্যে একটি হলো- ফিলিস্তিনি সীমান্তের কাছে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ফিলাডেলফি করিডোরে ইসরায়েলের সামরিক উপস্থিতি।
দোহায় অনুষ্ঠিত আলোচনার বিষয়ে ওই কর্মকর্তা জানান, গাজার সীমান্ত বরাবর কয়েক কিলোমিটার চওড়া একটি বাফার জোন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই অঞ্চলে ইসরায়েল সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখবে বলে আলোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুন>>
Advertisement
যদি এই মতভেদগুলো সমাধান করা যায়, তাহলে তিন ধাপে যুদ্ধবিরতির একটি চুক্তি কার্যকর হতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ওই ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা।
চুক্তির অধীনে প্রতি নারী সেনার মুক্তির বিপরীতে ২০ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে। বন্দিদের তালিকা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে এতে প্রায় ৪০০ জন বন্দি, যারা ২৫ বছরের বেশি কারাদণ্ডপ্রাপ্ত, তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে।
তবে ফাতাহ নেতা মারওয়ান বারগুতিকে এই তালিকায় রাখা হচ্ছে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ ইসরায়েল তার মুক্তি দিতে রাজি নয়।
ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি ধাপে ধাপে হবে। ইসরায়েলের তথ্য অনুযায়ী, গাজায় বন্দি থাকা ৯৬ জনের মধ্যে ৬২ জন এখনো জীবিত।
Advertisement
যুদ্ধবিরতির আওতায় গাজার উত্তর অংশে নাগরিকরা ফিরে যেতে পারবেন। এটি মিশর এবং কাতারের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে। প্রতিদিন প্রায় ৫০০ ট্রাক সাহায্য গাজায় প্রবেশ করবে।
পরিকল্পনার শেষ পর্যায়ে গাজার দায়িত্ব একটি বিশেষ কমিটির হাতে থাকবে। এই কমিটি গাজার সব পক্ষের সমর্থন পেলেও এর সদস্যরা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন না।
আলোচনায় মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নিজেদের প্রচেষ্টা আবারও শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিশর। গত অক্টোবরে হওয়া আলোচনায় হামাস একটি স্বল্পমেয়াদি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল।
হামাস, প্যালেস্টাইন ইসলামিক জিহাদ (পিআইজে) এবং পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অফ প্যালেস্টাইন (পিএফএলপি) এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসরায়েল নতুন শর্ত আরোপ বন্ধ করলে যুদ্ধবিরতির চুক্তি দ্রুত চূড়ান্ত হতে পারে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত এবং ২০০ জনের বেশি অপহৃত হন। এ পর্যন্ত আলোচনার মাধ্যমে বা সামরিক অভিযানে ১০০ জনেরও বেশি বন্দি মুক্তি পেয়েছেন।
বিপরীতে, গাজায় গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এতে এখন পর্যন্ত ৪৫ হাজার ২২৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও লক্ষাধিক আহত হয়েছেন। হতাহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। গাজায় ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞকে গণহত্যা বলে উল্লেখ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
সূত্র: বিবিসি, আল-জাজিরাকেএএ/