আইন-আদালত

ব্যাংক ডাকাতির চেষ্টা: দুই কিশোরের স্বীকারোক্তি, একজন রিমান্ডে

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন রূপালী ব্যাংকের চুলকুটিয়া জিনজিরা শাখার ডাকাতির চেষ্টাকালে গ্রেফতার দুই কিশোর ঘটনার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অন্য আসামি লিয়ন মোল্লা ওরফে নিরবের (২১) তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

Advertisement

শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) তাদের ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর আরাফাত ও সিফাত সেচ্ছায় ঘটনার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক হিরন কুমার বিশ্বাস।

আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুনাইদ তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর আরাফাত ও সিফাত কিশোর হওয়ায় তাদের গাজীপুরের কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

অন্যদিকে মামলার মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য আসামি লিয়ন মোল্লা ওরফে নিরবকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুনাইদ তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে ব্যাংকটিতে ঢুকে কর্মকর্তাদের জিম্মি করে রাখে এই আসামিরা। জানতে পেরে স্থানীয়রা তাদের ভবনেই আটকে ফেলে। পরে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা এসে তাদের আটকসহ জিম্মিদের উদ্ধার করে। ওই ঘটনায় ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার তারেক মামুন বাদী হয়ে কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, আসামিরা বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে আসামি নিরব রুপালী ব্যাংকের জিনজিরা শাখায় প্রবেশ করে নিরাপত্তা রক্ষীকে চুপচাপ পিছনে হাত দিয়া হাটু গেড়ে বসে পড়তে বলে। এসময় কিশোর শল মো. আরাফাত ও মো. সিফাত ব্যাংকে প্রবেশ করে। ব্যাংকে থাকা অন্যান্য গ্রাহক ও স্টাফদেরকে পিস্তল দেখাইয়া বলে, ‘কেউ চিল্লাচিল্লি করবি না, সবাই আমাদের সামনে আসিয়া পিছনে হাত রেখে হাটুগেড়ে বসে পড়, মাথা নিচের দিকে করে রাখ, আমরা কাহারো ক্ষতি চাই না, আমাদের কাজে কেউ বাধা দেওয়ার চেষ্টা করবি না, আমাদের কাজ শেষ করে চলে যাব, কেউ চালাকি করলে তাকে গুলি করে মেরে ফেলব’।

তখন ব্যাংকের অন্যান্য স্টাফ ও গ্রাহকরা জীবনের ভয়ে আসামিদের সামনে এসে পিছনে হাত দিয়া হাটুগেড়ে বসে পড়েন। এরপর উক্ত ব্যাংকের অফিসার মোহাব্বত হোসেন কৌশলে পিছনের গার্ড রুমে ঢুকে পড়ে ব্যাংকের ম্যানেজার ও বাসার কেয়ারটেকারকে জানান।

আসামিরা প্রথমে ব্যাংকের সিসিটিভি ক্যামেরার তার কেটে ফেলে। স্টিলের পাইপ দ্বারা ব্যাংকের সার্ভারের হাব ভেঙে ফেলে। ব্যাংকের সকলের মোবাইল নিয়ে নেয় এবং ব্যাংকের ক্যাশে থাকা ১৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে আসামিরা ভল্টের চাবি চায়। ব্যাংক ম্যানেজারের অনুপস্থিতিতে চাবি না পাওয়ায় আসামিরা ১৮ লাখ টাকাসহ পালিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের আটক করেন।

Advertisement

এমএএস/এমআইএইচএস