আদালতের স্থগিতাদেশ অবজ্ঞা করে প্রতারণার মাধ্যমে বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকেলস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) নির্বাচন প্রস্তুতি চলছে বলে অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীদের একাংশ। পাতানো নির্বাচন দ্রুত-সময়ের মধ্যে বন্ধ করা না হলে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা।
Advertisement
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী রিটকারী ব্যবসায়ীদের পক্ষে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আমানউল্লাহ। বারভিডা রিকন্ডিশন্ড গাড়ি ব্যবসায়ীদের সংগঠন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, নিয়ম অনুসারে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বারভিডার নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল ২০২৪ সালের শুরুতে। কিন্তু তৎকালীন স্বৈরাচার সরকার তার দোসরদের সংগঠনের নেতৃত্বে রাখতে নানা অপতৎপরতা চালায়। নিয়মবহির্ভূতভাবে সময় বৃদ্ধি করে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার স্নেহভাজন আব্দুল হকের নেতৃত্বাধীন আজ্ঞাবহ কমিটি বহাল রাখা হয়। বাণিজ্য সংগঠনের আইন অনুসারে সংগঠনের নিয়মবহির্ভূতভাবে অন্য কোনো কারণে যথা সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানে ব্যর্থ হলে মহাপরিচালক স্বীয় কারণ উল্লেখ করে সময় বৃদ্ধি করতে পারবেন। অন্যথায় সরকারি প্রশাসক নিয়োগ বাধ্যতামূলক।
কিন্তু বাস্তবে এ ধরনের কোনো দৈব দুর্বিপাক না ঘটলেও ওই কমিটিকে বহাল রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কতিপয় দুষ্কৃতকারী কর্মকর্তা পরস্পর যোগসাজশে স্বৈরাচারের আশীর্বাদপুষ্ট কমিটিকে বহাল রাখার অপচেষ্টা করেন। এই অপকর্মে ভূমিকা রাখেন মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির উপদেষ্টা আব্দুল হকসহ অনেকেই।
Advertisement
তিনি বলেন, এই আব্দুল হক স্বৈরাচার সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট হওয়ায় শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে তার সঙ্গে বিভিন্ন দেশে সফর সঙ্গী হন। অল্পসময়ে চতুর আব্দুল হক শেখ হাসিনার আস্থাভাজনে পরিণত হন। ওই সময়ে আব্দুল হকের অনুরোধে শেখ হাসিনার নির্বাহী আদেশে আমদানি অযোগ্য সহস্রাধিক গাড়ি আমদানি করে ৯০ পার্সেন্ট অবচয়ের সুযোগ নিয়ে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেন আব্দুল হক। ২০২১ সালে বারভিডার সভাপতি থাকাকালে আব্দুল হকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতসহ নানা অভিযোগ উত্থাপিত হলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নির্দেশে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
আইনজীবী মো. আমানউল্লাহ আরও বলেন, এরকম অহরহ অপকর্মের হোতা আব্দুল হকের নেতৃত্বে সম্প্রতি স্বৈরাচারের দোসরদের নিয়ে একটি প্যানেল গঠন করে বারভিটার নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছে। এর সভাপতিপ্রার্থী আব্দুল হক নিজেই। এই প্যানেলে তার সঙ্গে রয়েছেন জুলাই-আগস্টের গণহত্যায় অভিযুক্ত রিয়াজ রহমান। যার বিরুদ্ধে ছাত্র হত্যার অভিযোগে মামলা রয়েছে। যে মামলায় প্রধান আসামি স্বৈরাচার শেখ হাসিনা। পুলিশের কাছে তিনি পলাতক থাকলেও বাস্তবে চালাচ্ছেন নির্বাচনী প্রক্রিয়া। এছাড়াও এই প্যানেলের অন্যান্যদের বিরুদ্ধেও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান, ছাত্র হত্যাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, পাতানো নির্বাচন দ্রুত সময়ের মধ্যে বন্ধ করা না হয় তাহলে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা আইনি লড়াই চালিয়ে যাবেন। পাশাপাশি আব্দুল হক গংদের বিরুদ্ধে প্রমাণিত অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে যদি মন্ত্রণালয় আইনি পদক্ষেপ না নিলে উচ্চ আদালতে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন ব্যবসায়ীরা।
টিটি/এমএএইচ/এএসএম
Advertisement