শীতকালীন সবজিতে সম্ভাবনা দেখছেন নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলার বক্তাবলী ও আলীরটেক ইউনিয়নের কৃষকেরা। শীত আসার সাথে সাথে সবুজে ছেয়ে গেছে দুটি ইউনিয়নের কৃষি জমিগুলো। সেই সাথে কৃষকদের মুখেও হাসি ফুটে উঠেছে। যদি সবকিছু অনুকূলে থাকে তাহলে বেশ লাভের মুখ দেখতে পারবেন বলে আশা করছেন কৃষকেরা।
Advertisement
সূত্র বলছে, সদর উপজেলার কৃষিরাজ্য বলা হয় বক্তাবলী ও আলীরটেক ইউনিয়নকে। উপজেলার ৩ হাজার ৭৫৮ হেক্টর জমির মধ্যে বক্তাবলী ও আলীরটেক ইউনিয়নের অন্তত ২ হাজার হেক্টরের বেশি কৃষি জমি আছে। যদিও দিন দিন কৃষিজমি কমছে। তবে এখনো শহর লাগোয়া সদর উপজেলার বক্তাবলী ও আলীরটেক ইউনিয়নে কিছু কৃষিজমি আছে। যেখানে কৃষকেরা বিভিন্ন রকমের ফসল ফলান। তারই ধারাবাহিকতায় প্রতি বছরের মতো এবারও বক্তাবলী ও আলীরটেক ইউনিয়নের কৃষকেরা বিভিন্ন শীতকালীন সবজি চাষ করছেন।
কৃষক আলী হোসেন বলেন, ‘বিগত কয়েক বছর ধরেই কৃষিকাজের সাথে সম্পৃক্ত আছি। প্রতি বছর ভালোই লাভ করা যায়। এ বছর ৮০ শতাংশ জমি চাষ করেছি। তার মধ্যে ৪০ শতাংশ ফুলকপি চাষ করেছি। বাকি জমিতে অন্য সবজি চাষ করেছি। এ ফুলকপি পিস হিসেবে বিক্রি করে থাকি।’
তিনি বলেন, ‘আমার জমিতে যে ফুলকপি, তা বাজারে যেতে আরও দেড়মাস সময় লাগবে। এই দেড়মাস পর্যন্ত পরিশ্রম করেই যেতে হবে। সারাদিনই জমিতে পড়ে থাকতে হয়। যদি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি না হই, তাহলে আশা করি বেশ ভালো ফলন হবে। সেই সাথে বেশ ভালো লাভবান হতে পারবো।’
Advertisement
মো. নুরুল হক বলেন, ‘এ বছর ক্ষিরা, উচ্ছে, টমেটো, ধুন্দল, ঝিঙা, ধনেপাতাসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করেছি। আমরা বর্গা নিয়ে চাষ করে থাকি। এ বছর সাড়ে ৪ বিঘা জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ করেছি। প্রতি বছরই মোটামুটি ভালো লাভ করা যায়। এ বছর মুলাশাক ভালোই বিক্রি হয়েছে। এখন ক্ষিরা বিক্রি করছি। বেশ ভালোই ক্ষিরা হয়েছে। আশা করছি বাকি সবজিতেও বেশ ভালো লাভবান হতে পারবো।’
আলাল নামে এক কৃষক বলেন, ‘আমার গ্রামের বাড়ি জামালপুর। এখানে এসে জমি বর্গা নিয়ে গত ৪-৫ বছর ধরেই চাষ করছি। এ বছর ধনেপাতা, উচ্ছে, টমেটো, বেগুন, ধুন্দল ও কপি চাষ করছি। এখন পর্যন্ত আমার এখানে সবচেয়ে বেশি উৎপাদন হচ্ছে উচ্ছে। ফলন ভালো হলে প্রতি বছরই দেড় লাখ পর্যন্ত আয় করা যায়।’
নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মুহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘আবাসনের কারণে নারায়ণগঞ্জে কৃষিজমি দিন দিন কমছে। তারপরও নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলার বক্তাবলী ও আলীরটেক ইউনিয়নে কয়েক হাজার হেক্টর কৃষিজমি আছে। যেগুলোতে বিভিন্ন এলাকার এবং স্থানীয় কৃষকেরা বর্গা নিয়ে চাষ করে থাকেন। প্রতি বছরের মতো এবারও দুটি ইউনিয়নের কৃষিজমিতে শীতকালীন সবজি চাষ করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে সার্বিক পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে ভালো ফলন হবে।’
মোবাশ্বির শ্রাবণ/এসইউ/জিকেএস
Advertisement