ফিচার

বছরের সেরা শব্দ ‘ব্রেইন রট’, মানে কী?

 

‘ব্রেইন রট’ ইংরেজি শব্দের সঙ্গে হয়তো অনেকেই পরিচিত নন। এই শব্দটিই হয়ে গেল ২০২৪ সালের সেরা। অক্সফোর্ড বেছে নিল এই শব্দটিকেই বছরের সেরা শব্দ হিসেবে। প্রতিনিয়তই আমাদের জীবনের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন শব্দ। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন অনেক শব্দ ভাইরাল হচ্ছে। যেগুলো ব্যবহার হচ্ছে আবার হ্যাশট্যাগ দিয়ে।

Advertisement

এ বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালের বর্ষসেরা শব্দ ব্রেইন রটের সঙ্গে অনেকেই পরিচিত নন। তবে জেনে অবাক হবেন এই শব্দের প্রথম আবির্ভাব ১৮৫৪ সালে। আমেরিকান কবি ও দার্শনিক ডেভিড থরোর ওয়াল্ডেনের প্রবন্ধে।

ব্রেইন রট শব্দটি আসলে মানুষের মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক পরিস্থিতির অবনতি বোঝাতে ব্যবহার হয়ে থাকে। যে অবনতি তৈরি হয় অনলাইনে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় সারাক্ষণ অতি গুরুত্বহীন বিষয়ের পেছনে মাত্রাতিরিক্ত সময় খরচ করার জন্য। নিশ্চয়ই ভাবছেন ১৭০ বছর আগে, তখন তো ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম বা এক্স ছিল না। তখনও মানুষ বাজে কাজে মূল্যবান সময় নষ্ট করত!

আরও পড়ুনবিশ্বের সবচেয়ে ভাগ্যবতী নারী, টাইটানিক থেকেও বেঁচে ফিরেছিলেন

তবে মনে প্রশ্ন আসতেই পারে, এখন কেন ‘ব্রেইন রট’ এভাবে জনপ্রিয় হলো? অক্সফোর্ড ল্যাঙ্গুয়েজেসের প্রেসিডেন্ট ক্যাসপার গ্রাথোল যুক্তি দিয়েছেন, ‘ভার্চুয়াল জীবনের মারাত্মক ঝুঁকি আর আমাদের অবসর সময়ের কাজকর্ম তুলে ধরছে ব্রেইন রট। মানবিকতা আর প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনায় শব্দটি মারাত্মক গুরুত্বপূর্ণ। জেন জি এবং জেন আলফা যে ব্রেইন রটের মতো শব্দ নিয়ে এত ভাবছে, এটা আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

Advertisement

সেরা শব্দের তালিকায় প্রাথমিকভাবে অনেক শব্দই ছিল। কোন কোন শব্দ বেশি ব্যবহার হয়েছে এ বছরে? অন্তত দুটো শব্দ রয়েছে, যার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার। ডিমিউর-সংযমী এবং দায়িত্বশীল আচরণ বোঝাতে যা ব্যবহার করা হয়। স্লপ-কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নিয়ে আপনি অতীব খারাপ মানের সাইট বানাচ্ছেন, এটা বোঝাতে এই শব্দ গুরুত্বপূর্ণ। আরও একটা শব্দ রয়েছে সেরার তালিকায়। রোমান্স এবং ফ্যান্টাসি মিশিয়ে তৈরি রোমান্ট্যাসি।

বর্তমান পরিস্থিতিতে বলাই যায় আমরা রোমান্ট্যাসিতেও আছি, আবার ব্রেন রটেও আছি। ডিমিউরেও আছি, স্লপেও আছি। এই বৈপরীত্যের পৃথিবী আমরা তৈরি করে নিয়েছি নিজেরাই। ছয়টি শব্দের মধ্যে ব্রেইন রট ৩৭ হাজার ভোট পেয়ে সেরার সেরা নির্বাচিত হয়েছে।

ব্রেই রটের কিছু লক্ষণ রয়েছে, যা থেকে বুঝতে পারবেন আপনি এখন এই স্তরে আছেন। শিশু থেকে বুড়ো সবারই এমন অবস্থা হতে পারে। লক্ষণ দেখে বুঝতে পারবেন আপনার মস্তিষ্ক এখনো সচল আছে নাকি ব্রেইন রটের পর্যায়ে চলে গেছে। যেমন-শিশুদের মধ্যে মস্তিষ্কের পচনের ফলে মনোযোগ কমে যাওয়া, একাডেমিক কর্মক্ষমতা দুর্বল হয়ে যাওয়া।

প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ভুলে যাওয়া, কম অনুপ্রেরণা, বিরক্তি এবং স্মৃতি ও বিনোদনের জন্য ডিভাইসের উপর অতিরিক্ত নির্ভরতা দেখা যেতে পারে। এ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে বিশেষজ্ঞরা ব্যবহারকারীদের স্ক্রিন টাইম সীমিত করার পরামর্শ দিচ্ছেন। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যকর খাবার ও পর্যাপ্ত ঘুমও প্রয়োজন।

Advertisement

আরও পড়ুন‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’ সেলের পেছনের করুণ ইতিহাস জানেন কি?মিশরীয়দের হাতেই তৈরি হয় প্রথম কেক

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

কেএসকে/জেআইএম