চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার বাঁশবাড়িয়া এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে নতুন প্রজাতির বারি-১২ বেগুন চাষ করে বাজিমাত করেছেন কৃষক মো. আবু জাফর। বেগুনটি দেখতে অনেকটা লাউয়ের মতো। তাই স্থানীয়রা ভিড় করতে থাকেন এক নজর দেখার জন্য। এ সময় তারা প্রশ্ন করেন, এটি বেগুন নাকি লাউ?
Advertisement
কৃষক আবু জাফর জানান, বেগুনটি খেতে খুব সুস্বাদু ও মিষ্টি। কিন্তু বাজারে বিক্রি করতে নিলেই ক্রেতারা অনেকটা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়ে যান। তারা প্রশ্ন করেন, এটি আসলে কী? বারি-১২ প্রজাতির একটি বেগুনের ওজন কমপক্ষে এক থেকে দেড় কেজি।
সরেজমিনে জানা গেছে, ক্ষেতে বেগুন ধরেছে ১০ থেকে ১২ কেজি পর্যন্ত। তাই বেগুনের ভারে মাটিতে নুয়ে পড়ছে গাছগুলো। সঙ্গে সঙ্গে গাছের ওপরের দিক থেকে শুরু করে নিচের দিক পর্যন্ত ডালে ডালে দুলছে বেগুন। বাঁশের কঞ্চির সাহায্যে গাছগুলো দু’পাশ থেকে বেঁধে রাখতে হয়েছে।
বাঁশবাড়িয়া বোয়ালিয়াকূল গ্রামের মৃত মো. আব্দুর রহিমের ছেলে মো. আবু জাফর বলেন, ‘উপজেলা কৃষি অফিস থেকে উচ্চ ফলনশীল বারি-১২ জাতের বেগুন সংগ্রহ করে চাষ করেছি। উপজেলায় এর আগে কেউ এ বেগুন চাষ করেননি। আমিই প্রথমবারের মতো উচ্চ ফলনশীল বেগুন চাষ করেছি।’
Advertisement
আরও পড়ুন
তরমুজ-শসা চাষে ঘুরে দাঁড়াতে চান ইকবাল গাইবান্ধায় শীতকালীন সবজি চাষে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টাতিনি বলেন, ‘ভাদ্র মাসের শুরুতে ৮৫ শতাংশ জমিতে প্রায় ১২ হাজার বেগুন গাছ রোপণ করেছি। ইউটিউব দেখেই বেগুন চাষের ইচ্ছা হয়। সীতাকুণ্ডের মাটিতে হবে কি না, সে নিয়েও সংশয় ছিল। কিন্তু আশঙ্কা মিথ্যা প্রমাণ করে বেগুনের ভালো ফলন হয়েছে। এতে আমার খরচ হবে প্রায় ১ লাখ টাকা। জমির বেগুন বিক্রি করতে পারবো প্রায় ৮-১০ লাখ টাকা। বেগুন হবে ১২ মেট্রিক টনেরও বেশি।’
জাফর আরও বলেন, ‘উপজেলা কৃষি অফিস এবং ব্লকে দায়িত্বে থাকা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আবুল মনসুর নতুন প্রজাতির এ বেগুন চাষে বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি নিয়মিত খোঁজ-খবরও নিয়েছেন। তবে এখানে পানির খুবই সংকট। পানির অভাবে বেগুন ক্ষেতে সময়মতো সেচ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।’
সীতাকুণ্ড উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. হাবিবুল্লাহ বলেন, ‘উপজেলায় ৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির বেগুন চাষ করেছেন কৃষক ভাইয়েরা। তার মধ্যে এই প্রথম উচ্চ ফলনশীল নতুন প্রজাতির বারি-১২ জাতের বেগুন চাষ করেছেন বাঁশবাড়িয়ার আবু জাফর। তিনি চলতি মৌসুমে ৮৫ শতাংশ জায়গায় এ বেগুন চাষ করেন।’
Advertisement
তিনি বলেন, ‘আবু জাফরের মতো অন্যরা নতুন প্রজাতির বেগুন চাষে উদ্বুদ্ধ হবেন। বেগুনের ফলন ভালো হওয়ায় অনেক লাভবান হবেন। এ বেগুন স্বাদে অতুলনীয়। বিচি খুবই কম। এর ভর্তা যেমন সুস্বাদু; তেমনই ভাজাসহ অন্য তরকারিতেও স্বাদ ভালো। এটি দেশীয় জাতের বেগুন হওয়ায় বীজ সংরক্ষণ করা যায়। সীতাকুণ্ডে চাষের জন্য উপযোগী।’
এসইউ/এমএস