লাইফস্টাইল

পুরুষরা কেন আবেগ প্রকাশ করতে পারে না?

নারী কিংবা পুরুষ সবারই আবেগ প্রকাশ করার মাধ্যম ভিন্ন হতে পারে। হতে পারে কিছু পুরুষ বেশি আবেগপ্রবণ, আবার অনেক নারীই শক্ত মানসিকতার। তবে গবেষণা বলছে, পুরুষরা কখনো নারীদের মতো করে আবেগ প্রকাশ করতে স্বচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। এটি মূলত একটি স্নায়বিক সমস্যা।

Advertisement

পরিসংখ্যান বলছে, নারীরা খুব ভালোভাবেই তাদের বিষণ্নতা ও উদ্বেগ প্রকাশ করতে পারলেও পুরুষরা তা পারেন না। জানলে অবাক হবেন, ৩০ শতাংশেরও বেশি পুরুষ তাদের জীবনের কোনো না কোনো সময়ে বিষণ্নতা অনুভব করেন ও আনুমানিক ৯ শতাংশ পুরুষ প্রতিদিন বিষণ্নতা বা উদ্বেগের মধ্য দিয়ে যান।

তবুও তারা তাদের মানসিক অবস্থার কথা প্রকাশ করতে চান না সহজে। এর অন্যতম এক কারণ হলো ‘ম্যানলি আচরণ’ করার প্রবণতা। একটি ছেলে শিশুকে ছোট থেকেই পরিবার এমনকি সমাজ দ্বারা শেখানো হয় যে, পুরুষরা কাঁদে না কিংবা দুঃখবোধ করে না। অনেকে সামাজিক চাপের কারণে পুরুষত্বের ধারণাকে বিকৃত না করার চেষ্টায় নিজের আবেগ লুকিয়ে রাখেন।

পুরুষের স্বাস্থ্য দাতব্য সংস্থা মুভবার দ্বারা পরিচালিত গবেষণা প্রকাশ করেছে, প্রায় এক-তৃতীয়াংশ পুরুষ পুরুষত্বপূর্ণ বা পুংলিঙ্গ দেখাতে চাপ অনুভব করে। ১৮-৩৪ বছর বয়সী কমবয়সী পুরুষরা এটি আরও বেশি মাত্রায় (৪৭ শতাংশ) অনুভব করে।

Advertisement

আরও পড়ুন আমলকীর স্যুপেই সব সমস্যার সমাধান!  শীতের আগেই বাড়ছে সাইনাসের যন্ত্রণা, স্বস্তি মিলবে কীসে? 

এছাড়া পুরুষরা তাদের সঙ্গীর সঙ্গেও নিজের আবেগ নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করতে চান না। প্রতিবেদন বলছে, নারীরা যখন হতাশাগ্রস্ত হন, তারা দুঃখ প্রকাশ করে বা তাদের অনুভূতি প্রকাশ করে।

অন্যদিকে পুরুষরা যখন কোনো বিষয়ে চিন্তিত থাকেন তখন সেটি প্রকাশ না করতে পারলে তা রাগ, বিরক্তি বা আগ্রাসনের লক্ষণে প্রকাশ করেন।

পরিসংখ্যান বলছে, নারীরা তাদের দুঃখ ও কষ্টের কথা প্রকাশ করতে পারেন সহজেই। তবে পুরুষরা বেদনা লুকিয়ে রাখেন ও হতবাক হয়ে যান। সঠিকভাবে আবেগ প্রকাশ করতে না পারার কারণে পুরুষদের মধ্যে মানসিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে।

গবেষকদের মতে, এটি একটি স্নায়বিক বিষয়। ‘কর্পাস ক্যালোসাম’ যেটি মস্তিষ্কের একটি অংশ, যা বাম ও ডান গোলার্ধকে সংযুক্ত করে। পুরুষদের তুলনায় নারীদের মধ্যে বড় থাকে এটি, যা একইসঙ্গে অনুভব করার ও চিন্তা করার উচ্চ ক্ষমতার দিকে পরিচালিত করে। নারীরা একইসঙ্গে অনুভব করতে ও চিন্তা করতে পারে।

Advertisement

অন্যদিকে পুরুষরা তাদের চিন্তাভাবনা থেকে আবেগকে আলাদা করার প্রবণতা দেখায়। ফলে মানসিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে দ্বিধাবোধ করে তারা। এমনকি নারী-পুরুষ উভয়ের মধ্যে স্ট্রেস পরিচালনা, সামাজিক প্রত্যাশা, শারীরবৃত্তি ও মনোবিজ্ঞান ভিন্ন হতে পারে।

সূত্র: ব্রাইট সাইড/বনোবোলজি/জুরিচ

জেএমএস/জিকেএস