ধর্ম

ইসলামে বিয়ের শুভ দিন কোনটি?

আমাদের দেশে বিবাহের দিন-তারিখ নির্ধারণের ক্ষেত্রে পঞ্জিকা দেখে শুভ-অশুভ দিন-তারিখ নির্ণয় করার প্রচলন আছে। এটি একটি ভুল প্রথা, কুসংস্কার। পঞ্জিকায় উল্লিখিত শুভ-অশুভ দিন-তারিখ হিন্দুধর্মের বিভিন্ন অলীক ও শিরকি বিশ্বাস এবং কুসংস্কারের উপর ভিত্তি করে প্রস্তুত করা। একজন মুসলমানের জন্য এসব শুভ-অশুভ বিশ্বাস করার কোনো সুযোগ নেই।

Advertisement

ইসলামি বিশ্বাস অনুযায়ী সব দিনই ভালো। কোনো দিনকে অশুভ বা অলক্ষুণে মনে করার কোনো সুযোগ নেই। ভালো ও বৈধ কাজ যে কোনো দিন করলে আল্লাহ তাতে কল্যাণ দান করতে পারেন। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সময়কে মন্দ বলতে বা গালি দিতে নিষেধ করে বলেছেন,

لاَ يَسُبُّ أَحَدُكُمُ الدَّهْرَ فَإِنَّ اللَّهَ هُوَ الدَّهْرُ

তোমরা কেউ যেন সময়কে গালি না দাও, কারণ আল্লাহই সময়’ (সহিহ মুসলিম: ৫৮২৭)

Advertisement

অর্থাৎ সময়ের স্রষ্টা ও নিয়ন্ত্রক আল্লাহ নিজেই, যা হয়, আল্লাহ ইচ্ছায় হয়, সময় অশুভ হয় না বা সময়ের কোনো ক্ষমতাও নেই।

অলক্ষণে বিশ্বাস করাকে হাদিসে শিরক বলা হয়েছে। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,

الطِّيَرَةُ شِرْكٌ الطِّيَرَةُ شِرْكٌ ثَلاَثًا وَمَا مِنَّا إِلاَّ وَلَكِنَّ اللهَ يُذْهِبُهُ بِالتَّوَكُّلِ

কোনো কিছুকে অলুক্ষুণে মনে করা শিরক। কোনো কিছুকে অশুভ মনে করা শিরক, কোনো কিছুকে কুলক্ষণ মনে করা শিরক। আমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই যার মনে কুধারণা জন্মে না, তবে আল্লাহ ওপর ভরসার মাধ্যমে আল্লাহ তা দূর করে দেন। (সুনানে আবু দাউদ: ৩৯১২)

Advertisement

ইমরান ইবনে হোসাইন (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,

لَيْسَ مِنَّا مَنْ تَطَيَّرَ وَلا تُطُيِّرَ لَهُ وَلا تَكَهَّنَ وَلا تُكُهِّنَ لَهُ أََوْ سَحَرَ أَوْ سُحِرَ لَهُ

সে ব্যক্তি আমাদের দলভুক্ত নয়, যে ব্যক্তি (কোন বস্তু, ব্যক্তি, কাজ বা কালকে) অশুভ বলে মানে অথবা যার জন্য অশুভ লক্ষণ পরীক্ষা করে দেখা হয়, যে ব্যক্তি ভাগ্য গণনা করে অথবা যার জন্য ভাগ্য গণনা করা হয়। যে ব্যক্তি জাদু করে অথবা যার নির্দেশে জাদু করা হয়। (তাবরানি: ১৪৭৭০)

কোনো মাস, দিন বা রাতকে অশুভ মনে করা, বিশেষ কোনো সময়কে বিশেষ কাজের জন্য অশুভ ও অলক্ষুণে মনে করা- সবই জাহেলিয়াতের কুসংস্কার। আরবে ইসলামপূর্ব জাহেলি যুগে শাওয়াল মাসে বিয়ে করাকে অশুভ মনে করা হতো। শাওয়াল মাসে বিয়ে করলে অকল্যাণ হয়, দাম্পত্য সম্পর্ক ভালো যায় না ইত্যাদি কুসংস্কার ছিল মানুষের মধ্যে।

আয়েশা (রা.) এ কুসংস্কারের বিরোধিতা করে বলেছেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে শাওয়াল মাসে বিয়ে করেছেন এবং শাওয়াল মাসেই আমার বাসর রজনী হয়েছে। আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সহধর্মিণীগণের মধ্যে আমার চেয়ে কে অধিক (তার ভালোবাসা প্রাপ্তিতে) সৌভাগ্যবতী ছিলেন? (সহিহ মুসলিম: ১৪২৩)

ওএফএফ/জিকেএস