ভিসা হওয়ার পরও মালয়েশিয়া যেতে না পারা ১৮ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক দেশটিতে যেতে পারবেন বলে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
Advertisement
তিনি বলেন, কাজটি আমরা শুরু করেছি। তাদের ভেরিফিকেশনের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করি খুব দ্রুত তারা মালয়েশিয়া যেতে পারবেন।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর।
এর আগে এদিন রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
Advertisement
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী টনি বার্কের বৈঠকের বিষয় তুলে ধরে শফিকুল আলম বলেন, অস্ট্রেলিয়া তাদের ভিসা সেন্টার ঢাকায় ফিরিয়ে আনতে চাচ্ছে। ইরেগুলার অভিবাসন নিয়ে আরও জোরদার কথা বলতে চাচ্ছে দেশটি। নিয়মিত অভিবাসন যেন আরও বাড়ে সে বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জোর দেওয়া হয়েছে। তারা দেখবেন বলে জানিয়েছেন।
শফিকুল আলম বলেন, সার্চ কমিটির মূল লক্ষ্য হচ্ছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার খুঁজে বের করা জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের সমাজে যারা নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্যতা আছে, দায়িত্বপালন কালে নিরপেক্ষতা দেখিয়েছেন, নির্বাচন করা বা প্রশাসন চালানোর যোগ্যতা দেখিয়েছেন। এটা বৃহৎ কাজ, তাদের ওনারা খুঁজে বের করবেন এবং নির্বাচন কমিশন গঠিত হলেই নির্বাচনের কাজ শুরু হয়ে যাবে।
আগের সরকারগুলো রাজনৈতিক কারণে বিসিএসে নিয়োগ বাতিল করেছিল। এবার ৪৩তম বিসিএসে ৯৯ জনের নিয়োগ বাতিল হয়েছে। এটা পুরোনো প্রক্রিয়াকে অনুসরণ কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, এগুলো পিএসসি দেখবে। তারা তো স্বাধীনভাবে কাজ করে। তাদের সঙ্গে কথা বললে উত্তর দিতে পারবে।
যানজটে নাকাল নগরবাসী, তা সমাধানে সরকারের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটার আশু সমাধানের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলছেন। উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা হচ্ছে।
Advertisement
তিনি বলেন, এটার অন্যতম কারণ হচ্ছে গত ১৫ বছরের কুশাসন। যার ফলে বাংলাদেশের অনেক গ্রুপ, অনেক ধরণের মানুষ আছেন, কর্মজীবী, পেশাজীবী আছেন, বিভিন্ন প্রেশার গ্রুপ আছে। এরা তো গত ১৫ বছরে কোনো আন্দোলনই করতে পারেননি। এখন তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে তাদের সরকার ভাবছেন, তারা ভাবছেন তাদের কথাগুলো এ সরকার শুনবে। আমরাও তাদের কথা শুনছি। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে তারা রাস্তায় প্রতিবাদ করছেন। এটা একটা বিষয়। দেশের সব সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানের বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
শফিকুল আলম বলেন, সববিষয়ে আমাদের মনোযোগ আছে। আমরা চেষ্টা করছি নাগরিকের দুর্ভোগ কীভাবে কমানো যায়।
বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ তিনবার থেকে বাড়িয়ে চারবার কী কারণে করা হয়েছে এমন প্রশ্নে শফিকুল আলম বলেন, উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পোশাক কারখানায় শ্রমিক আন্দোলনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রের অংশ কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, এসব আন্দোলনে আমরা কোনো ষড়যন্ত্র দেখছি না। পোশাক খাতে অস্থিরতার মূল বিষয় হচ্ছে কয়েকটা কারখানার মালিক পালিয়ে গেছেন, শ্রমিকদের বেতন দিতে পারছেন না, সেক্ষেত্রে শ্রমিকরা আন্দোলন করছেন। আমরা শানিপূর্ণভাবে সমাধানের চেষ্টা করছি। বাংলাদেশে ৯৯ শতাংশ পোশাক কারখানা চালু আছে। একটা-দুইটা পোশাক কারখানায় আগেও আনরেস্ট হতো। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি এগুলোতে যেন আনরেস্ট না হয়। সবকিছুর সুষ্ঠু সমাধান হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিষয়ে সরকারের আপত্তির বিষয়ে কোনো উত্তর পাওয়া গেছে কি না- জানতে চাইলে উপপ্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, আমরা আমাদের কনসার্ন জানিয়েছি, চিঠিও দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো উত্তর আসেনি।
এমওএস/ইএ