খেলাধুলা

সিলেটের সেই টেস্টের দশাই হলো যেন এবারের চট্টগ্রাম টেস্টে

মাঝে পাকিস্তান সফরে ২ টেস্টে প্রথম ইনিংসে যথাক্রমে ৫৬৫ আর ২৬২ রান করলেও এই বছর আর কোন টেস্টের প্রথম ইনিংসে ২০০ করতে পারেনি বাংলাদেশ। দু’শোতো বহুদুর, ১৫০ থেকে ১৭০-এর ঘরেই মুখ থুবড়ে পড়েছে শান্ত, মুশফিক, মুমিনুল, লিটন, মিরাজ, তাইজুলরা।

Advertisement

এবার দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে ঢাকার শেরে বাংলায় প্রথম টেস্টে ১০৬ রানে প্রথম ইনিংস শেষ করে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়েছিল শান্ত বাহিনী। পরে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩০৭ রান করেও ৭ উইকেটে হার মানতে হয়েছে। এবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় টেস্টেও ঠিক দেড়শোর আশপাশে শেষ হয়েছে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস।

শুধু প্রথম ইনিংস নয়। চট্টগ্রামে এবার আর দ্বিতীয় ইনিংসেও মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি সাদমান, জয়, জাকির, মুমিনুল, শান্ত, মুশফিক, মিরাজ ও অংকনরা। মাঝে কয়েক টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে কিছু প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারলেও এবার দ্বিতীয় ইনিংসেও সেই দেড়শোর আশপাশেই ( ১৫৯ ও ১৪৩) আটকে থাকলো বাংলাদেশ।

সবাই ভাল খেলার রেকর্ড গড়ে। কৃতিত্ব দেখিয়ে সাফল্যের মাইলফলক স্পর্শ করে এবং ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলার একটা স্ট্যান্ডার্ড সেট হয়। আর এ বছর শুরু থেকেই বাংলাদেশ ব্যাটাররা একটা স্ট্যান্ডার্ড সেট করে ফেলেছেন। তাহলো প্রথম ইনিংসে তারা যাচ্ছেতাই ব্যাটিং করে দেড়শোর আশপাশে অলআউট হচ্ছেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো খেলছিলেন; কিন্তু এবার চট্টগ্রামে উভয় ইনিংসে খারাপ খেলার সব রেকর্ড ভেঙ্গে একদিনের ১৬ উইকেট হারিয়ে ২ বার অলআউটের লজ্জায় ডুবলো শান্তর দল।

Advertisement

ইতিহাস সাক্ষী দিচ্ছে চলতি বছর ৮ টেস্টে ১৬ বার ব্যাটিং করে কেবল মাত্র মার্চে সিলেটে শ্রীলঙ্কার সাথে ২ ইনিংসেই চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। প্রথম ইনিংসে ১৮৮ রানে অলআউট হওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসেও ১৮২-তে গুঁড়িয়ে গিয়েছিল ইনিংস।

এবার চট্টগ্রামেও ঠিক সে ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলো। এবার ২ ইনিংসেই ঘুরে ফিরে দেড়শোর আশপাশে অলআউট বাংলাদেশ। এ টেস্টের প্রথম ইনিংসে একা লড়াই করে দলকে ১০০ পার করেছিলেন মুমিনুল। তার ৮২ রানের ওপর ভর করেই চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত ১৫৯ রানে গিয়ে ঠেকে।

একটা কাকতালীয় ব্যাপার অবশ্য আছে। মার্চে সিলেটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে উভয় ইনিংসে ২০০’র নিচে অলআউট হওয়া সে টেস্টে এবং এবার চট্টগ্রাম টেস্টেও মুমিনুল হক ৮০’র ঘরে পৌঁছেও শতরান করতে পারেননি। সিলেটে শ্রীলঙ্কার সাথে দ্বিতীয় ইনিংসে মুমিনুল একা লড়ে ৮৭ ছিলেন নট আউট। আজ ৩১শে অক্টোবর চট্টগ্রামেও কিন্তু প্রথম ইনিংসে ৮২ রানের লড়াকু ইনিংস উপহার দিয়েছেন বাঁ-হাতি মুমিনুল।

৪৮ রানে ৮ উইকেট পতনের পর তাইজুলকে নিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে নবম উইকেটে ১০৩ রানের পার্টনারশিপ গড়ে দলকে দেড়শো পার করে দেন মুমিনুল। না হয় বৃহস্পতিবার প্রথম ইনিংসে হয়ত ৫০-৬০ রানেই অলআউট হতো শান্তর দল। তবে সেই মার্চে সিলেটে আর আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে; দু’বারের একবারও শতকের দেখা পাননি মুমিনুল। দলের পরাজয়ও এড়াতে পারেননি। মুমিনুল ও টিম বাংলাদেশের কাছে চট্টগ্রামের এ টেস্টটি ঠিক ৭ মাস আগের সিলেট টেস্ট হয়েই থাকলো।

Advertisement

এআরবি/আইএইচএস