জীবন রক্ষা ও সুস্থতার প্রয়োজনে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শে একজনের রক্ত আরেকজনের শরীরে স্থানান্তর করা ইসলামি শরিয়তে জায়েজ। এ রকম অবস্থায় অসুস্থ ব্যক্তিকে নিজের রক্ত দান করা জায়েজ এবং অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। মানুষের বিপদে নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী সাহায্য করলে দুনিয়া ও আখেরাতে আল্লাহর সাহায্য পাওয়া যায়।
Advertisement
আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন ঈমানদারের দুনিয়া থেকে কোন বিপদ দূর করে দেবে, আল্লাহ তা’আলা বিচার দিবসে তার কোনো বিপদ দূর করে দেবেন। যে ব্যক্তি কোন দুঃস্থ লোকের অভাব দূর করবে, আল্লাহ তাআলা দুনিয়া ও আখিরাতে তার দুরবস্থা দূর করবেন। যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের দোষ-ত্রুটি লুকিয়ে রাখবে আল্লাহ তা’আলা দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ-ত্রুটি লুকিয়ে রাখবেন। বান্দা যতক্ষণ তার ভাই এর সহযোগিতায় আত্মনিয়োগ করে আল্লাহ ততক্ষণ তার সহযোগিতা করতে থাকেন। (সহিহ মুসলিম: ৬৭৪৬)
রক্ত দিলে তা অবশ্যই বিনামূল্যে সওয়াবের নিয়তে দিতে হবে। রক্ত বিক্রি করা নাজায়েজ। রক্ত দিয়ে যে কোনোভাবে এর বিনিময় গ্রহণ করা নাজায়েজ। অসুস্থ কোনো ব্যক্তির স্বজনরা যদি বিনামূল্যে রক্ত না সংগ্রহ করতে পারেন, সে ক্ষেত্রে তাদের জন্য মূল্য দিয়ে রক্ত ক্রয় করা জায়েজ। কিন্তু যে রক্ত দেবে তার জন্য সর্বাস্থায় রক্তের মূল্য নেওয়া নাজায়েজ।
তবে অসুস্থ ব্যক্তি বা তার স্বজনদের উচিত রক্তাদাতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা এবং সামর্থ্য থাকলে তার নিঃস্বার্থ উপকারের প্রতিদান দেওয়ারও চেষ্টা করা। আশআস ইবনে কায়েস কিনদি ও আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে রাসুল সা. বলেছেন, যে মানুষের কৃতজ্ঞতা আদায় করলো না, সে আল্লাহর কৃতজ্ঞতাও আদায় করলো না। (সুনানে তিরমিজি: ১৯৫৫)
Advertisement
কারো উপকার বা হাদিয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার পাশাপাশি প্রতিদান দেওয়াও নবিজির (সা.) সুন্নত। আয়েশা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হাদিয়া গ্রহণ করতেন এবং বিনিময়ে তিনি তাকেও হাদিয়া দিতেন। (সহিহ বুখারি: ২৫৮৫)
রাবিআহ ইবনে কাব আসলামি (রা.) বলেন, আমি রাতে আল্লাহর রাসুলের (সা.) সাথে অবস্থান করতাম। তার ওজুর পানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস এনে দিতাম। একদিন তিনি আমাকে বললেন, তুমি আমার কাছে কিছু চাও। আমি বললাম, আমি জান্নাতে আপনার সাথে থাকতে চাই। তিনি বললেন, এ ছাড়া আর কিছু? আমি বললাম, এটাই আমি চাচ্ছি। তিনি বললেন, তাহলে বেশি বেশি সিজদা করে (নফল নামায পড়ে) এ ব্যাপারে আমার সাহায্য করো। (সহিহ মুসলিম: ১১২২)
ওএফএফ/জিকেএস
Advertisement