ক্যাম্পাস

শ্রেণিকক্ষ ব্যবহারের সুযোগ না পেয়ে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

নিজেদের জন্য বরাদ্দকৃত কক্ষ ব্যবহারের সুযোগ না পেয়ে মানববন্ধন করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বুধবার (২৩ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে তারা এ কর্মসূচি পালন করেন। এতে বিভাগটির শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।

Advertisement

শিক্ষার্থীরা জানান, ৮ অক্টোবর কলা অনুষদের ডিন স্বাক্ষরিত চিঠিতে রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের চতুর্থ তলার ২৩টি ও পঞ্চম তলার একটি কক্ষ বিভাগটির জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে কাগজে-কলমে বরাদ্দ পেলেও কক্ষগুলো ব্যবহার করতে পারছে না বিভাগটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর স্টাডিজ ও ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ চারুকলা বিভাগের জন্য বরাদ্দকৃত ওই কক্ষগুলো নিজেদের দখলে নিয়ে ব্যবহার শুরু করেছে। এ নিয়ে কর্তৃপক্ষকে বিভিন্নভাবে জানিয়েও ফল না পাওয়ায় শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে মানববন্ধন করেন।

জানা যায়, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ থেকে চালু হওয়া বিভাগটিতে চারটি ব্যাচের একাডেমিক কার্যক্রম চলমান থাকলেও নিজস্ব শ্রেণিকক্ষ ও অফিস কক্ষ নেই। ফলে অন্য একটি বিভাগ থেকে ধার করা অফিস কক্ষ ও টিএসসিসির কিছু কক্ষে শ্রেণিকার্যক্রম চলছিল। আগস্ট মাসের শুরুর দিকে অনুষদীয় মিটিংয়ে ওই কক্ষগুলো বরাদ্দের সিদ্ধান্ত হয়। একই সভায় ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ ও ফোকলোর স্টাডিজকে একই ভবনের পঞ্চম তলায় বরাদ্দ দেওয়া হয়।

পরবর্তীতে নতুন উপাচার্য নিয়োগের পর বিভাগীয় সভাপতি ও ডিনদের নিয়ে সভায়ও একই সিদ্ধান্ত হয়। তবে বিভাগ দুটি নিজেদের জন্য বরাদ্দকৃত কক্ষগুলোতে না গিয়ে চতুর্থ তলার চারুকলার জন্য বরাদ্দকৃত কক্ষগুলো ব্যবহার অব্যাহত রেখেছেন। এদিকে, ওই সভা থেকে আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগকে চতুর্থ ও পঞ্চম তলায় কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হলেও তারা ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের জন্য বরাদ্দকৃত তৃতীয় তলার কক্ষগুলো ব্যবহার করছে বলে জানা গেছে। এ নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তারা দ্রুত এ সমস্যার সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।

Advertisement

চারুকলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এইচ এম আক্তারুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের শিক্ষার্থীরা শ্রেনিকক্ষ সংকটে ভুগছে। বর্তমানে চারটি ব্যাচ চলমান। তবে আমাদের একটিও নির্দিষ্ট শ্রেণিকক্ষ নেই। হয়তো শিক্ষার্থীরা তাদের প্রয়োজনেই আন্দোলনে গিয়েছে।

ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি আতিফা কাফি বলেন, আমরা ওই কক্ষে ওঠার পর রুম বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে আমরা রুম ছেড়ে দিতে রাজি আছি। পরবর্তী একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিংয়ে রুমের বিষয়ে যেই সিদ্ধান্ত হবে সেই অনুযায়ী আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি ড. আবু শিবলী মো. ফতেহ আলী চৌধুরী বলেন, আমি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে আছি। বিভাগের অন্য একজন শিক্ষককে দায়িত্ব দিয়েছিলাম শ্রেণিকক্ষ পঞ্চম তলায় স্থানান্তর করতে। কিন্তু তারা দায়িত্ব নিতে রাজি হয়নি। আমি ক্যাম্পাসে গিয়ে বিষয়টি সমাধান করবো।

কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন বলেন, সবাইকে রুম বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তারা কেন রুমগুলো ছাড়ছে না আমি বুঝতে পারছি না। বিভাগগুলোর সভাপতিদের রুমগুলো ছেড়ে দিয়ে তাদের জন্য বরদ্দকৃত রুমে যাওয়ার জন্য বলেছি। তারা না শুনলে আমার কিছু করার থাকে না। এ বিষয়ে প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেবে। উপাচার্যের সাথে আমার কথা হয়েছে। উনি শক্তভাবে জানিয়েছেন যে কোনো ধরনের দখলদারি চলবে না।

Advertisement

মুনজুরুল ইসলাম/জেডএইচ/এমএস