দেশজুড়ে

স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মারুফ হত্যার ১১ বছর পর মামলা

ফরিদপুরের নগরকান্দায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য মারুফ শেখ (১৯)। এ ঘটনার ১১ বছর পর পরিবারের পক্ষ থেকে ফরিদপুর-২ আসনের সাবেক এমপি শাহাদাব আকবর লাবু চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগের ৭৭ জন নেতাকর্মীরা নামে আদালতে মামলা করা হয়েছে।

Advertisement

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৭নং আমলী আদালতে নিহতের মা ও উপজেলার মিনারগ্রামের বাসিন্দা ছালেহা বেগম ছলে (৬৪) বাদী হয়ে মামলাটি করেন। রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাদী পক্ষের আইনজীবী একেএম হাবিুবুর রহমান হাফিজ।

মামলায় ফরিদপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহাদাব আকবর চৌধুরী লাবুকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক জামাল হোসেন মিয়া (৪৫) ও তার ভাই তালমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল হোসেন মিয়া, পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুজ্জামান মিঠু, দেলো ফকির, সদ্য বহিষ্কৃত নগরকান্দা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজামান বাবুল কাজী ও সালথা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ওয়াদুদ মাতুব্বরসহ ৭৭ জন। এছাড়া আরও ৫০-৬০ জনকে অজ্ঞাতনামা হিসেবে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, তৎকালীন সময়ে বিএনপির শান্তিপূর্ণ মিছিলের ওপর হামলা করেন আসামিরা। এ সময় মারুফ শেখের বুকে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করেন কামরুজ্জামান মিঠু নামে ২নং আসামি। গুলির আঘাতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় সে। এতে নির্দেশ দেন শাহাদাব আকবর লাবু চৌধুরী ও দেলো ফকির। তাদের হামলায় সাইফ মুন্সি নামে আরও একজন গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেন।

Advertisement

ছালেহা বেগম মামলার এজাহারে বলেন, ছেলে হত্যার পর থানায় গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। পুলিশ জানায় এ ঘটনায় পুলিশ মামলা করেছে, আর কোনো মামলা হবে না। এরপর অনেকবার থানায় মামলা করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছি।

এ বিষয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী একেএম হাবিুবুর রহমান হাফিজ বলেন, সকালে মামলার জন্য আবেদন করা হলে তা বিকেল ৪টার দিকে আদালত গ্রহণ করেন এবং মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দেন।

২০১৩ সালের ২৩ অক্টোবর বিএনপি-জামায়াতের ডাকা হরতালের সময় আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য মারুফ শেখ। তৎকালীন সময়ে মারুফ হত্যাকে কেন্দ্র করে পুলিশকে দায়ী করে বিবৃতি দিয়েছিলেন স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দ। মারুফ নিহতের ঘটনায় নগরকান্দা থানা পুলিশের এসআই খলিলুর রহমান বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় আসামি করা হয় ১৪৬ জনকে। যারা সবাই ছিলেন বিএনপি ও হেফাজত ইসলামের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।

এন কে বি নয়ন/এফএ/জেআইএম

Advertisement