দেশজুড়ে

প্রেম করায় কিশোরকে গাছে বেঁধে মারধর

প্রেম করার অপরাধে এক কিশোরকে গাছে বেঁধে বেধড়ক পিটিয়েছে প্রেমিকার বাড়ির লোকজন। শনিবার (১৯ অক্টোবর) রংপুরের মিঠাপুকুরে দুর্গামতি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মারধরের ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ হন স্থানীয়রা।

Advertisement

এতে দেখা যায়, ওই কিশোরের (১৬) হাত ও ঘাড় রশি দিয়ে আমগাছের সঙ্গে বাঁধা। কয়েকজন তাকে লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছেন। এসময় দুজন গ্রাম পুলিশকেও সেখানে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নির্যাতনের শিকার কিশোর পড়ালেখা বাদ দিয়ে তার বাবার সঙ্গে কৃষি কাজ করেন। প্রতিবেশী এক মেয়ের সঙ্গে সম্প্রতি তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এরই জেরে গত শনিবার নিজ বাড়ির সামনে থেকে কিশোরকে ধরে নিয়ে যায় মেয়ের বাড়ির লোকজন। পরে তাকে বাড়ির আঙিনায় আমগাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে ফেলে।

একপর্যায়ে এলাকার আবদুল খালেক, করিম মিয়া, রবিউল, সেহেরুল, মোস্তা, আনারুল, রউফ, তালেব, কুদ্দুস, মিজানসহ ১৫-২০ জন লাঠি দিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করেন। পরে অসুস্থ অবস্থায় রাজুকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পুলিশ তাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দিয়ে কারাগারে পাঠায়।

Advertisement

ওই কিশোরের বাবা জানান, তার ছেলের কোনো দোষ নেই। মেয়ে পক্ষের লোকজন অন্যায়ভাবে তার ছেলেকে মেরেছে। তিনি এর বিচার দাবি করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক নারী বলেন, ছেলের কোনো দোষ নেই। তিনি শুনেছেন মেয়েটির সঙ্গে তার ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল। এ অপরাধে তাকে ধরে নিয়ে মারধর করেছে।

স্থানীয়রা জানান, মেয়ের বাবা গায়ের জোরে লোকজন ভাড়া করে ছেলেকে মারপিট করেছে। গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেয়ের বাবা হাফিজুর রহমান জানান, তার মেয়েকে বারবার বিরক্ত করে আসছিল ছেলেটি। তাই তাকে ধরে শাসন করেছেন তিনি।

Advertisement

অপরাধ করে থাকলে আইনের সহযোগিতা না নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধরের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি কোনো জবাব দেননি।

আবদুল খালেক, করিমসহ অন্যরাও একই ধরনের কথা বলেছেন।

মিঠাপুকুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, ছেলেটিকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করা ঠিক হয়নি। তাকে রক্ষার জন্য আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে ১৫১ ধরায় আদালতে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জিতু কবীর/জেডএইচ/জিকেএস