দক্ষিণী ছবির জনপ্রিয় নায়িকা আনুষ্কা শেঠি। তার অভিনয়ে মুগ্ধ সবাই, বিশেষ করে হাসির প্রেমে পড়েননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। সেই নায়িকাই নাকি এখন ভুগছেন বিরল হাসির রোগে। যার নাম সিউডোবুলবার ইফেক্ট। এটি একটি স্নায়বিক ব্যাধি।
Advertisement
এই রোগে আক্রান্তরা অনিচ্ছা সত্ত্বেও হাসতে এমনকি কাঁদতেও পারেন। বিরল এই রোগে সারা বিশ্বে হাতেগোণা মাত্র কয়েকজন ব্যক্তি আক্রান্ত। তার মধ্যে একজন হলেন ৪২ বছর বয়সী অভিনেত্রী আনুষ্কা শেঠি।
বাহুবলী’খ্যাত এই অভিনেত্রী সম্প্রতি ইন্ডিয়াগ্লিটজে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, এই বিরল রোগের কারণে একবার হাসতে শুরু করলে একটানা ১৫-২০ মিনিটেও তিনি হাসি থামাতে পারেন না।
যা তার জন্য এক বড় সমস্যা বলে অভিহিত করেছেন। হাসির এই সমস্যার কারণে তার কাজেও প্রভাব পড়ছে বলে জানান তিনি। কখনো কখনো তিনি শুটিং সেটে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খান বলেও জানান এই অভিনেত্রী।
Advertisement
এটি একটি স্নায়বিক ব্যাধি। এই রোগে আক্রান্তরা হাসি বা কান্না নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, স্নায়বিক কোনো আঘাতের কারণে এটি ঘটে।
মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস (এমএস), অ্যামিয়োট্রফিক ল্যাটারাল স্ক্লেরোসিস (এএলএস), ট্রমাটিক ব্রেন ইনজুরি (টিবিআই), স্ট্রোক, আলঝাইমার বা পারকিনসন রোগের কারণেও এ সমস্যা হতে পারে।
আরও পড়ুন
একঘরে থেকেও সঙ্গীর প্রতি দূরত্ব অনুভব করছেন? জিকা ভাইরাসের লক্ষণ কী? প্রতিরোধে করণীয়এই স্নায়বিক সমস্যার কারণে ব্যক্তির দৈনন্দিন জীবনও ব্যাহত হতে পারে। আবার এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণেরও তেমন কোনো উপায় নেই। তবে মস্তিষ্কের নিউরোট্রান্সমিটারগুলোকে প্রভাবিত করতে ও লক্ষণগুলো নিয়ন্ত্রণে কিছু ওষুধ ভূমিকা রাখতে পারে।
Advertisement
ভারতের শালবি সানার ইন্টারন্যাশনাল হসপিটালের নিউরোলজি বিভাগের ডিরেক্টর ও এইচওডি ডা. সুনীল সিংলার মতে, সিউডোবুলবার ইফেক্ট সাধারণত বয়স্কদের মধ্যে দেখা যায়।
প্রাথমিক অবস্থায় রোগ শনাক্ত ও সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করলে এই স্নায়বিক রোগের লক্ষণ কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে।
সিউডোবুলবার ইফেক্ট (পিবিএ) এর লক্ষণ কী কী?‘হাসির রোগ’ এর প্রথম লক্ষণটিই হলো অনিয়ন্ত্রিত হাসি বা কান্না। এটি প্রাসঙ্গিক বা অপ্রাসঙ্গিক ক্ষেত্রেও হতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞের। এছাড়া মেজাজে পরিবর্তন হতে পারে।
মায়ো ক্লিনিকের তথ্য অনুসারে, হাসির চেয়ে বেশি কান্না করাও হতে পারে সিউডোবুলবার ইফেক্টের একটি সাধারণ লক্ষণ।
এক্ষেত্রে অনেকেই মনে করেন যে, তিনি বিষণ্নতায় ভুগছেন। এছাড়া এই স্নায়বিক ব্যাধিতে আক্রান্তরা হতাশার বিভিন্ন লক্ষণ যেমন- অনিদ্রা বা ক্ষুধা কমে যাওয়ার সমস্যাতেও ভোগেন।
আপনার যদি কোনো কারণে মনে হয় যে, সিউডোবুলবার ইফেক্টে ভুগছেন, তাহলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সূত্র: হেলথশটস/টাইমস অব ইন্ডিয়া/ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস/অনলি মাই হেলথ
জেএমএস/এমএস