সোশ্যাল মিডিয়া

এক ছাগলে এ কী কাণ্ড!

কোরবানি উপলক্ষে ১৫ লাখ টাকায় ছাগল কিনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচিত হন তরুণ মুশফিকুর রহমান ইফাত। ফেসবুকে এবং কয়েকটি গণমাধ্যমে দাবি করা হয়, ইফাতের বাসা ধানমন্ডি এবং তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাস্টমস, এক্সসাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট ড. মো. মতিউর রহমানের ছেলে। কিন্তু মতিউর রহমান তাকে ছেলে হিসেবে অস্বীকার করেন।

Advertisement

এর পরের ঘটনা সবারই জানা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক সমালোচনা চলতে থাকে বিষয়টি নিয়ে। উন্মোচিত হয় মতিউর রহমানের পারিবারিক জীবন এবং যাবতীয় সম্পত্তির হিসাব। এখনো থেমে নেই আলোচনা-সমালোচনা। সবাই ফেসবুকে নানা রকম পোস্ট করে নিন্দা জানাচ্ছেন এ ঘটনার। ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করছেন কেউ কেউ।

কবি ও সাংবাদিক হুসাইন আজাদ লিখেছেন, ‘পোলায় ছাগল কোরবানি দিতে চাইছিল। বাপে পোলারে অস্বীকার কইরা তারে কোরবান দিতে চাইছিল। এখন পোলায় কোরবানির ময়দান ছাইড়া বিদেশে নাকি ভাগছে। এদিকে এখন বাপেরে নাকি এনবিআর আর সোনালী ব্যাংক থেকে কোরবানি দেওয়া হইছে।কে যে কারে কোরবানি দেয়, মাথাই নষ্ট। বলিউড ডিরেক্টর আব্বাস-মাস্তান ভ্রাতাদ্বয়কে কেউ বলে দেন, টুইস্টের গল্পের অভাব হইলে তারা যেন ছাগলের এই গল্পটা নেন।’

সাংবাদিক সৈয়দ আল হাসান শিমুল লিখেছেন, ‘ছেলের ছাগলকাণ্ডে সেই মতিউর রহমানকে এনবিআর থেকে সরিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে যুক্ত করা হয়েছে।’

Advertisement

টিপু সুলতান নামে একজন ব্যঙ্গ করে লিখেছেন, ‘একটা ছাগল সারাজীবনের কান্না।’

আরও পড়ুনজেফারের স্পাইসি গান এবং রুচির বিকারঅধিনায়ক শান্তর বক্তব্য, সত্য নাকি রম্য?

কথাসাহিত্যিক পিন্টু রহমান লিখেছেন, ‘ছাগলকাণ্ড সময়ক্রমে লঙ্কাকাণ্ডে রূপান্তরিত হলেও আমাদের বিচার-বিবেচনা প্রশ্নাতীত নয়। আমরা যাকে লাখেরাজ ছাগল হিসেবে পরিগণিত করছি, আদতে কি উনি ছাগল! না, আমার তা মনে হয় না। উনি সম্ভবত দুদকের জাদরেল কোনো অফিসার। দুর্নীতির মুখোশ উন্মোচন করতে ম্যাজিক রিয়েলিজমের মাধ্যমে ছাগলের রূপ ধারন করেছেন। অসাধারণ! কী অসাধারণ কৌশল! দয়াকরে কেউ আর দুদককে নখদন্তহীন বাঘের সাথে তুলনা করবেন না। তাদের যুতসই উপমা ছাগল। তাছাড়া জাতীয় পশু হিসেবে ছাগলই বা মন্দ কীসের! বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের লোগোয় বাঘের পরিবর্তে ছাগলের ছবি থাকলে অভাবনীয় সাফল্য আসবে। দানবীয় ব্যাটিংয়ের শক্তি অর্জন করবো। প্রায় প্রতিটি ছক্কা স্টেডিয়ামের বাইরে গিয়ে পড়বে।’

লেখক হাযাত সাব্বির লিখেছেন, ‘লাখ টাকার ছাগল কিনে বাপের ইজ্জত খেয়ে দেওয়া ছেলেটা যেই এগ্রো ফার্ম থেকে ছাগলটা কিনেছিল, সেই ফার্মের নাম সাদেক, সাদেক এগ্রো। ‘কোটি টাকার বাগান খায় এক টাকার ছাগল’ বাংলা সিনেমায় ডায়ালগটা প্রথমবার দিয়ে যেই লোকটা হিট হয়েছিল, তার নামও ছিল সাদেক, সাদেক বাচ্চু। কী কাকতালের একটা দুনিয়া!’

আব্দুল্লাহ জাবের লিখেছেন, ‘এখন বুঝলাম, পুরা জাতি সরকারি জব, বিসিএস ইত্যাদির পেছনে ক্যানো ছুটছে পাগলা কু-ত্তার মতো! মাত্র ৭৮ হাজার টাকা বেতনের চাকরি করেও দুই সংসারে বউ-পোলাপানরে রাজার পরিবারের মতন রাখা যায়। মেয়েকে ক্যানাডায় আলিশান বাড়ি কিনে দেওয়া যায়, উরাধুরা জীবন কাটানোর সকল ব্যবস্থা করা যায়। ঢাকায় এক পরিবারকে বসুন্ধরায়, আরেক পরিবারকে ধানমন্ডিতে রাখা যায়। ১৯ বছর বয়সী ছেলে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকার গাড়ি দৌড়াতে পারে, কোরবানি দেওয়ার জন্য এক ঈদেই ৭০ লাখ টাকার গরুর সাথে ১৫ লাখ টাকার ছাগল কিনতে পারে। এই সন্তানদের বিন্দুমাত্র লজ্জা নাই। এবার মনে মনে হিসাব করেন তো, ৭৮ হাজার টাকা বেতন পাওয়া সেই মতিউরের (এরকম হাজার হাজার কর্মকর্তা আছে) মাসিক ইনকাম কত? আহ! ওরা সোনার বাংলা চেটেপুটে খেয়ে ফেললো রে।’

Advertisement

এসইউ/জেআইএম