ভ্রমণ

নীলাদ্রি লেকে কীভাবে যাবেন ও কী কী দেখবেন?

তৌফিক সুলতান

Advertisement

মিনি সুইজারল্যান্ড খ্যাত সিলেটের নীলাদ্রি লেকে আমাদের ভ্রমণ যাত্রা শুরু হয় রাত সাড়ে ১১টার দিকে। যাত্রাপথে বন্ধুরা মিলে অনেক আড্ডা ও আলোচনা হয়। এই ভ্রমণে সঙ্গী ছিলেন, তারিকুল ইসলাম, নাজমুল, ইমরান, জাকারিয়া লিমন, রাজীব, নিষাদ, নাজমুল, খায়রুল, জাহিদুল, সজিব ও ফজল।

আমরা সকালে সিলেট শহরে নাশতা করে, তারপর তাহেরপুর থেকে নৌকা দিয়ে তারপর অটোতে করে নীলাদ্রি লেকে পৌঁছায়। নীলাদ্রি লেকে পৌঁছানোর পূর্বে আমরা সেখানকার পর্যটন টাওয়ার এ থেমে চারপাশের সবুজের সমারোহ দেখে মুগ্ধ হই।

টাওয়ারের উপর থেকে চারপাশটা বিষণ্ন রকমের চমৎকার সবুজের ছোঁয়া। যতদূর দুই চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজের সমারোহ। নদীর তীরে লাগানো গাছগুলো বাড়িয়ে দিয়েছে এই এলাকার সৌন্দর্যকে। আহ্ কি চমৎকার মানুষের চলন এখান কার মানুষদের সবারই আছে একটি করে নৌকা।

Advertisement

যাত্রাপথে নোকা থেকে দেখা মিলে বিশাল বিশাল গরুর পাল যার দেখাশুনায় আছে দুই থেকে তিনজন রাখাল। তারই মধ্যে সবুজের সমারোহে শোনালি আলোর ভেতর দিয়ে ভেসে যাচ্ছে আমাদের নৌকা। এভাবেই আমরা পৌঁছে গেলাম আমাদের মূলগন্তব্যে প্রধান আকর্ষণ নীলাদ্রি লেকে সম্পূর্ণ ভ্রমণ ছিলো আনন্দ উল্লাস অপার ভালোলাগার হাতছানি।

নীলাদ্রি লেকখ্যাত পর্যটন স্থানটি চুনাপাথরের পরিত্যাক্ত খনির লাইম স্টোন লেক। সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের টেকেরঘাট নামক গ্রামে নীলাদ্রি লেকের অবস্থান। এই লেকের প্রকৃত নাম শহীদ সিরাজ লেক। তবে ভ্রমণ প্রিয় মানুষদের কাছে এই লেক নীলাদ্রি নামেই অধিক পরিচিত।

অবশ্য স্থানীয় লোকজন একে টেকেরঘাট পাথর কোয়ারি নামে চেনে। লেকের চমৎকার নীল পানি, ছোট বড় টিলা আর পাহাড়ের সমন্বয় নীলাদ্রি লেককে করেছে অপার্থিব সৌন্দর্য্যের অধিকারী। স্বতন্ত্র বৈশিষ্টের জন্য নিলাদ্রি লেক দেখে অনেক পর্যটক একে বাংলার কাশ্মীর হিসাবে অভিহিত করেন। অনেকে আবার মিনি সুইজারল্যান্ড বলেও আখ্যায়িত করেছে।

নীলাদ্রি লেক কীভাবে যাবেন?

Advertisement

২-৩ দিনের ট্যুর হলে নীলাদ্রি লেকে যাওয়ার জন্য সবচেয়ে ভালো হয় ১০-১২ জন বন্ধু একসঙ্গে কোনো একটি হাইস ভাড়া করে বেড়িয়ে পরা। সেক্ষেত্রে গুগল ম্যাপের সহায়তা নিয়ে নিজেদের সুবিধামতো পৌঁছে যেতে পারবেন আপনার গন্তব্যে।

এতে আনন্দের একনতুন মাত্রা যোগ হবে। বন্ধু মানেই আড্ডা মাস্তি তার মধ্যে ট্যুরে হলে তো কোনো কথাই নেই। ঢাকা থেকে দুই রুটে নীলাদ্রি লেক দেখতে যেতে পারেন। নিজের সুবিধামতো যে কোনো রুটে নীলাদ্রি লেকে যেতে পারেন।

রুট প্ল্যান-১

প্রতিদিন ঢাকার সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে মামুন ও শ্যামলী পরিবহণের বাস সরাসরি সুনামগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় ও মহাখালী থেকে ছেড়ে যায় এনা পরিবহণের বাস। এসব নন-এসি বাসে জনপ্রতি টিকিট কাটতে ৮২০-৮৫০ টাকা লাগে আর সুনামগঞ্জ পৌঁছাতে প্রায় ছয় ঘণ্টা সময় লাগে।

সুনামগঞ্জ শহরের নতুন ব্রিজ এলাকায় টেকেরঘাট যাবার জন্য মোটর সাইকেল ভাড়া পাবেন। রিজার্ভ নিলে মোটরসাইকেল ভাড়া পড়বে ৩০০-৪০০ টাকা পর্যন্ত। যাত্রাপথে যাদুকাটা নদী পার হওয়ার সময় জনপ্রতি ৫ টাকা ও মোটর সাইকেলের জন্য ১০ টাকা ভাড়া দিতে হবে।

সুনামগঞ্জ থেকে মোটর সাইকেলে লাউড়ের গড় পর্যন্ত আসতে ভাড়া লাগবে ২০০ টাকা। সেখান থেকে যাদুকাটা নদী পাড় হয়ে বারিক্কা টিলা থেকে ১২০ টাকা ভাড়ায় টেকেরঘাট যাবার মোটর সাইকেল পাবেন। উল্লেখ্য মোটরসাইকেল রিজার্ভ কিংবা ভাড়ার ক্ষেত্রে দু’জন ধরা হয়েছে।

রুট প্ল্যান-২

ঢাকা থেকে হাওর এক্সপ্রেস ও মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস নামক দুইটি আন্তঃনগর ট্রেন যথাক্রমে রাত ১০টা ১৫ মিনিটে ও দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে নেত্রকোণার মোহনগঞ্জের অভিমুখে যাত্রা করে। এই ট্রেনে ১৮৫-৭৫৯ টাকা ভাড়ায় যাওয়া যায়। মোহনগঞ্জ থেকে মধ্যনগর যেতে ঘণ্টাখানেক সময় লাগে।

মধ্যনগর (পিপরা কান্দা ঘাট) থেকে বর্ষাকালে ট্রলার, স্পিডবোট বা নৌকা দিয়ে টেকেরঘাট যাওয়া যায়। আবার নেত্রকোণা থেকেও সরাসরি নৌকা বা ট্রলার ভাড়া করে টেকেরঘাট যাওয়া যায়। তবে শীতকালে নেত্রকোণা থেকে টেকেরঘাট যেতে মোটরসাইকেল ব্যবহৃত হয়।

রুট প্ল্যান-৩

বর্ষাকালে আপনি ভিন্ন পথেও যেতে পারবেন। সুনামগঞ্জ থেকে টাংগুয়ার হাওর হয়ে টেকেরঘাট যেতে পারবেন নৌকা নিয়ে। সুনামগঞ্জ নেমে সুরমা নদীর উপর নির্মিত বড় ব্রিজের কাছে লেগুনা/সিএনজি/বাইক করে তাহিরপুরে সহজেই যাওয়া যায়।

তাহিরপুরে নৌকা ঘাট থেকে সাইজ ও সামর্থ্য অনুযায়ী নৌকা ভাড়া করে নিন। নৌকা ভাড়া করুন এইভাবে যে টাঙ্গুয়ার হাওর দেখে টেকেরঘাট যাবেন।

আরও পড়ুনবিশ্বের সবচেয়ে ছোট নদী, পার হতে লাগে ৫ মিনিট মহাসাগরে লুকিয়ে থাকা যে রহস্য অনেকেরই অজানা 

ভ্রমণ পরিকল্পনা

নীলাদ্রি লেক, যাদুকাটা নদী, শিমুল বাগান, বারেক টিলা ও টাঙ্গুয়ার হাওরের দূরত্ব কাছাকাছি হওয়ায় আপনি চাইলে সময় ভাগ করে পছন্দের জায়গাগুলো দেখে ফেলতে পারবেন।

সাধারণত বর্ষাকালে টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ বেশি উপভোগ্য তাই বর্ষাকালে টাঙ্গুয়ার হাওর সহ নীলাদ্রী লেক, যাদুকাটা নদী, শিমুল বাগান, বারেক টিলা ভ্রমণ করতে ভ্রমণ গাইডের টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ পরিকল্পনা দেখে নিতে পারেন।

এছাড়া শুকনো মৌসুমে কিংবা একদিনে নীলাদ্রি লেক, যাদুকাটা নদী, শিমুল বাগান, বারেক টিলা দেখতে চাইলে সুনামগঞ্জ শহর থেকে মোটর বাইক রিজার্ভ নিয়ে বারেক টিলা, যাদুকাটা নদী, শিমুল বাগান হয়ে নীলাদ্রী লেক ঘুরে আবার সুনামগঞ্জ ফিরে আসতে পারবেন।

এক্ষেত্রে সিজনভেদে মোটরবাইক ভাড়া লাগবে ৮০০-১২০০ টাকা ও প্রতিটি বাইকে দুইজন ভ্রমণ করতে পারবেন। অথবা আপনি যদি আলাদাভাবে উল্লেখিত স্থানগুলো ভ্রমণ করতে চান তবে সুনামগঞ্জ থেকে বাইকে ২০০ টাকা ভাড়ায় ১ ঘণ্টা ২০ মিনিটে লাউড়ের গড় পৌঁছে ছোট নৌকায় যাদুকাটা নদী পাড় হয়ে সহজেই বারেক/বারিক্কা টিলায় যেতে পারবেন।

আর বারেক টিলা থেকেই যাদুকাটা নদীর অপরুপ সৌন্দর্য্য উপভোগ করা যায়। বারেক টিলা থেকে শিমুল বাগান ও নীলাদ্রি লেক যাওয়ার বাইক ভাড়া করতে পারবেন। শিমুল বাগান ও নীলাদ্রি লেক একসঙ্গে ভ্রমণের জন্য বাইক রিজার্ভ করতে ১৫০-১৮০ টাকা লাগবে।

উল্লেখ্য শিমুল বাগান ও নীলাদ্রি লেক দেখে সুনামগঞ্জ শহরে ফিরে যেতে হলে আবার আপনাকে আবার একই পথে যাত্রা করতে হবে তাই দিনের শুরুতেই ভ্রমণে বের হলে স্বাচ্ছন্দে সবগুলো জায়গা দেখতে পারবেন।

কোথায় থাকবেন?

বড়ছড়া বাজারে বেশ কয়েকটি গেস্ট হাউজ। এই সব গেস্ট হাউজে ২০০-৪০০ টাকার মধ্যে রুম পাবেন। তাহিরপুর বাজারেও থাকার ব্যবস্থা আছে আর যদি খালি থাকে তবে নীলাদি লেকের কাছে পুরাতন চুনা পাথরের কারখানার গেস্ট হাউজে রাত কাটাতে পারবেন।

কোথায় খাবেন?

বারিক্কা টিলাতে সাধারণ মানের দেশীয় খাবারের হোটেল আছে। এছাড়া বড়ছড়া বাজার কিংবা যাদুকাটার পাশের টেকেরঘাটের ছোট বাজারে খাবার জন্য মোটামুটি মানের রেস্টুরেন্ট পাবেন। তবে ভালো মানের খাবার হোটেলের জন্য আপনাকে সুনামগঞ্জ শহরে আসতে হবে।

আরও পড়ুনগরমে শরীর পানিশূন্য করে দেয় যেসব খাবার এসি বিস্ফোরণ কেন ঘটে? সতর্ক থাকবেন যেভাবে 

নীলাদ্রি লেক ভ্রমণে জরুরি পরামর্শ

* একদিনে সবগুলো জায়গা দেখতে সময়ের প্রতি যত্নবান হোন। * নীলাদ্রি লেকের গভীরতা অনেক বেশী হওয়ায় লেকের পানিতে নামতে বা সাঁতার কাটতে লাইফ জ্যাকেট ব্যবহার করুন।* স্থানীয়দের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করুন ও প্রয়োজনে তাদের সাহায্য নিন। * কেনাকাটার ক্ষেত্রে দরদাম করে নিন।

নীলাদ্রি লেকের কাছাকাছি আরো কিছু ভ্রমণের স্থান

১. টেকের ঘাট২. বারিক্কা টিলা৩. টাঙ্গুয়ার হাওর৪. যাদুকাটা নদী৫. শিমুল বাগান৬. লাকমা ছড়া৭. মেঘালয় পাহাড় সাইটসিং

শহীদ সিরাজ হ্রদ বা শহীদ সিরাজ লেক (‘নীলাদ্রি হ্রদ’ বা ‘নীলাদ্রি লেক’ নামেও পরিচিত) ভারতের মেঘালয় সীমান্তঘেঁষা বাংলাদেশের উপজেলা তাহিরপুরে অবস্থিত একটি হ্রদ। সীমান্তবর্তী ট্যাকেরঘাট চুনাপাথর খনিজ প্রকল্পের পরিত্যক্ত এই খোয়ারীটি ১৯৪০ সালে চুনাপাথর সংগ্রহ শুরু করে।

এখানে চুনাপাথর সংগ্রহ করে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায় নির্মিত আসাম বাংলা সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় চাহিদা মিটানো হতো। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর বিভিন্ন সমস্যা ও ব্যয় বৃদ্ধি দেখিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় এর সকল কার্যক্রম।

পরে ১৯৬০ সালে সিমেন্ট ফ্যাক্টরি চালু রাখার জন্য চুনা পাথরের প্রয়োজনে ভূমি জরিপ চালিয়ে সীমান্তবর্তী ট্যাকেরঘাট এলাকায় ৩২৭ একর জায়গায় চুনাপাথরের সন্ধান পায় বিসিআইসি কর্তৃপক্ষ। পরবর্তী সময়ে ১৯৬৬ সালে খনিজ পাথর প্রকল্পটি মাইনিংয়ের মাধ্যমে র্দীঘদিন পাথর উত্তোলন করা হয়।

১৯৯৬ সালে প্রকল্পটি একটি লোকসানি প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোয়ারি থেকে চুনাপাথর উত্তোলন বন্ধ করে দেয়। মুক্তিযুদ্ধের একজন শহীদ সিরাজুল ইসলামের নামানুসারে এই হ্রদের নামকরণ করা হয় শহীদ সিরাজ হ্রদ।

মো. সিরাজুল ইসলাম ১৯৫২ সালে কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার ফিলনী গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে স্নাতকে পড়াকালীন সময়ে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ঘর ছাড়েন সিরাজ। আসামের ইকো ওয়ান সেন্টারে প্রশিক্ষণ শেষে তিনি ৫ নম্বর সেক্টরের বড়ছড়া সাব-সেক্টরের অধীনে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন।

১৯৭১ সালের ৭ই আগস্ট সুনামগঞ্জের সাচনা বাজার ও জামালগঞ্জ থানা থেকে পাকিস্তানিদের বিতাড়িত করার লক্ষ্যে আক্রমণ চালায় একদল মুক্তিযোদ্ধা। এই দলে ছিলেন সিরাজুল ইসলাম। পাকিস্তানি সেনারা তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে ব্যাপক গুলি শুরু করে।

আকস্মিক এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধারা কিছুটা হকচকিত। তারাও পাল্টা আক্রমণ শুরু করলেন। মুক্তিযোদ্ধারা চেষ্টা করছেন ক্রলিং করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার। তবে প্রবল গুলির কারণে তারা সামনে এগোতে পারছেন না। এ অবস্থায় সিরাজুল ইসলাম ক্রলিং করে গ্রেনেড চার্জ করতে করতে এগিয়ে যাচ্ছিলেন।

এ সময় অপরদিক থেকে ছোড়া একটি গুলি তার চোখ ভেদ করে চলে যায়। তিনি শহীদ হন সিরাজের জীবনের বিনিময়ে সেদিন সাচনা বাজার ও জামালগঞ্জ পাকিস্তানি মুক্ত হয়েছিলো। স্বাধীনতার পর শহীদ সিরাজকে বীরবিক্রম উপাধিতে ভূষিত করে বাংলাদেশ সরকার।

মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে এই সাব-সেক্টরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সমাহিত করা হয়। এদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন জামালগঞ্জ-সাচনা যুদ্ধে শহীদ দাসপার্টির গেরিলা যোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম বীর বিক্রম। তার স্মৃতিতে এই হ্রদের নামকরণ করা হয় শহীদ সিরাজ হ্রদ।

হ্রদের পাশেই সিরাজুল ইসলামসহ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার কবরও সংরক্ষিত রয়েছে এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সিরাজ স্মৃতি সংসদ গড়া হয়েছে। এখনো ঐতিহাসিক স্মৃতি ধারণ করে আছে এই লেকের চারপাশ। লেকের আশপাশে এখনো দেখা মিলে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকা কবরস্থান ইমারতের ধ্বংস প্রাপ্ত খণ্ড।

জেএমএস/জিকেএস