কৃষি ও প্রকৃতি

মিরসরাইয়ে আমন ধানের মাঠে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন

# ১৯ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে# লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭৫ হেক্টর জমিতে বেশি আবাদ# লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯৫ হাজার ২৮০ মেট্রিক টন

Advertisement

চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভায় আমন ধানের মাঠে ঢেউ খেলে যাচ্ছে সবুজ পাতা ও সোনালি শীষ। সেই ঢেউয়ে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। কয়েকদিন পরই সবুজ ধান গাছ শীষ হলুদ করে ফসল কাটার উপযোগী হবে। ধান কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বেন কৃষকেরা। সোনালি ধানে ভরে উঠবে শূন্য গোলা।

মিরসরাই কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৯ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমি। সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ার পরও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। ১৯ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। করেরহাট, হিঙ্গুলী, জোরারগঞ্জ, ওচমানপুর, ইছাখালী, কাটাছড়া, দুর্গাপুর, মিরসরাই সদর, মিঠানালা, মঘাদিয়া, খৈয়াছড়া, মায়ানী, হাইতকান্দি, ওয়াহেদপুর ও সাহেরখালী ইউনিয়নে আমন আবাদ করা হয়। সবচেয়ে বেশি ৯৫০ হেক্টর জমিতে ইছাখালী ইউনিয়নে আবাদ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: মিরসরাইয়ে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি আউশ ধান উৎপাদন

Advertisement

বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ মাঠে সবুজের সমারোহ। কৃষকেরা মাঠে ধান গাছের পরিচর্যা করছেন। সার, কীটনাশক প্রয়োগ, আগাছা পরিষ্কার এবং পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করে ক্ষতি পোষাতে সচেষ্ট তারা। অনেকে ক্ষেতের পাশে বসে বসে পাহারা দিচ্ছেন।

উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের মধ্যম আজমনগর গ্রামের মোকাররম হোসেন বলেন, ‘এবার আমি প্রায় দেড়কানি (১৮০ শতক) জমিতে আমন চাষ করেছি। এখনো কাটার উপযোগী হয়নি। ২০ শতক জমির ধান পেকে আসছে। ধানের যে পরিস্থিতি দেখছি, যদি কোনো দুর্যোগ না আসে তাহলে ভালো ফলন হবে।’

ইছাখালী ইউনিয়নের চরশরতের আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি প্রায় ১২০ শতক জমিতে আমন চাষ করেছি। বৃষ্টির কারণে রোপা আমন লাগাতে দেরি হয়েছে। জমিতে রোপা লাগানো নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। তবে ধানের অবস্থা ভালো। আশা করছি ভালো ফলন হবে।’

আরও পড়ুন: আউশের মৌসুমে বোরো ধান চাষ

Advertisement

ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের মধ্যম ওয়াহেদপুরের সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ধান চাষে আগের মতো লাভ হয় না। সার, কীটনাশকসহ সব উপকরণের দাম বেড়েছে। শ্রমিকের মজুরিও আগের চেয়ে বেশি। ভালো দামে বিক্রি করতে পারলে পোষাবে, না হলে লাভ হবে না।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় জাগো নিউজকে বলেন, ‘যদি ঠিক সময়ে পানি পাওয়া যেত তাহলে আরও বেশি জমিতে চাষ করা সম্ভব হতো। উপজেলাজুড়ে ১৬ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে উফশি জাতের, ২০০০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ও ১০৫০ হেক্টর জমিতে স্থানীয় জাতের ধান আবাদ করা হয়েছে। জমিতে ধানের অবস্থা খুব ভালো। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে।’

এম মাঈন উদ্দিন/এসইউ/এমএস