“সামুদ্রিক ঝড়ের মুখে সুন্দরবন আমাদের জন্য একটি বিশাল রক্ষাবর্ম। কিন্ত আজ সেই সুন্দরবন তার জীবনের সর্বোচ্চ সংকটকাল অতিবাহিত করছে। যার অন্যতম কারণ হচ্ছে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র। যেটি বাস্তবায়িত হলে অদূর ভবিষ্যতে সুন্দরবন ধ্বংসের মুখে পড়বে।”বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উচ্চতর গবেষণা কেন্দ্রে ‘বিতর্কিত ইআইএ’র ভিত্তিতে তৈরি রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র সুন্দরবন ধ্বংস করবে; সুন্দরবন ধ্বংস করে বিদ্যুৎ চাই না; আমরা বিদ্যুৎ চাই, সুন্দরবনও চাই’-নাগরিক সমাজের সংলাপে এমনটাই দাবি করেন বক্তারা।বক্তারা বলেন, সুন্দরবন একটি শ্বাসমূলীয় জলাবন অর্থাৎ ম্যানগ্রোভ। এই বন ধ্বংস হলে শুধু আমরা নয়, সমগ্র বিশ্ব চিরদিনের মতো অমূল্য সম্পদ হারাবে। রয়েল বেঙ্গল টাইগারসহ বিভিন্ন প্রাণী আবাসস্থল এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবিকার উৎসটি চিরদিনের জন্য শেষ হবে যাবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ফলে বায়ু দূষণ, নদীর পানি দূষণ এবং কঠিন পদার্থ দূষণ প্রত্যক্ষভাবে সুন্দরবনকে ক্ষতি করবে। অন্যদিকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবহারের জন্য পশুর নদী ব্যবহার করা হবে। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কাজে নদীর পানি নেয়া ও ব্যবহারের পর তার অংশ বিশেষ গরম অবস্থায় নদীতে ফেলে দেয়া উভয়েই পরিবেশের ক্ষতি করবে।কলামিস্ট ও বাপার নির্বাহী সদস্য সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, এটা কোনো সরকারের বিরুদ্ধের বিষয় নয়, এটা কোনো রাজনৈতিক বিষয় নয়, এটা জীবন-মরণের বিষয়। সুতরাং, এর জন্য আমরা আন্দোলন করবো।তিনি আরো বলেন, এখন সরকারে অপশন দুটি, একটি- সুন্দরবন ধ্বংস করে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা, অন্যটি সুন্দরবন অক্ষত রেখে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র না করা। সরকারকে এর মধ্যে যে কোনো একটি বেছে নিতে হবে। দুটি এক সঙ্গে হবে না।সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, আমরা উন্নয়ন চাই, আমরা বিদ্যুৎ চাই। সবচেয়ে বেশি যেটা চাই সেটি হলো সুন্দরবন রক্ষা করতে চাই। সুন্দরবন ধ্বংস করে অন্য কিছু চাই না।বাংলাদেশ নাগরিক সমাজের আয়োজনে এ সংলাপে বাপার সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ, বাপার সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. আব্দুল মতিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এম এম আকাশ, ঢাবি ভুগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম, সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।এমএইচ/আরএস/এবিএস
Advertisement