দেশব্যাপী ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াবেটিস খুব সহজেই জীবনযাত্রার পরিবর্তন আনার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। সঠিক খাদ্যাভাস, নিয়মিত শরীরচর্চা, ঘুম, দুশ্চিন্তামুক্ত জীবন যাপনের মাধ্যমে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
Advertisement
শরীর যখন রক্তে থাকা শর্করাকে ব্যবহার করতে পারে না তখন ডায়াবেটিস হয়। এক্ষেত্রে শরীরে ইনসুলিন তৈরি হয় না বা ইনসুলিন তৈরি হলেও দেখা যায় শরীর তা ব্যবহার করতে পারে না। তাই প্রথম থেকেই সতর্ক থাকুন।
আরও পড়ুন: ডায়াবেটিস কী? এই রোগ সম্পর্কে যা জানা জরুরি
ডায়াবেটিস রোগকে মূলত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়- টাইপ ১ ও টাইপ ২। টাইপ ১ ডায়াবেটিস শিশুদের হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে শরীরে ইনসুলিন তৈরি হয় না।
Advertisement
অন্যদিকে টাইপ ২ ডায়াবেটিস বড়দের ক্ষেত্রে দেখা যায়। এক্ষেত্রে শরীর ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না বা পারলেও ঠিকমতো তা ব্যবহার করতে পারে না।
ডায়াবেটিস বেড়ে গেলে শরীরে নানা লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন লক্ষণ ফুটে ওঠে হাতে ও পায়েও। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে হতে পারে ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি।
আরও পড়ুন: মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করলে ডায়াবেটিস রোগীরা যা খাবেন
এক্ষেত্রে হাত-পায়ের স্নায়ুর ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রায় ৫০ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগীর মধ্যে এই সমস্যা দেখা যায়। সাধারণত ৪ ধরনের ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি হয়।
Advertisement
তবে এর মধ্যে মোনোনিউরোপ্যাথির ক্ষেত্রে দেখা দেয় জটিল লক্ষণ। মনোনিউরোপ্যাথি রোগটির ক্ষেত্রে হাতে দেখা দিতে পারে অবশভাব। হাতের উপরিভাগের পাশাপাশি হাতের সমস্ত আঙুলেও দেখা দিতে পারে অবশভাব।
এমনকি পায়েও ডায়াবেটিসের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে পায়ে ব্যথা, জ্বালা, ঝিনঝিন করা, পা লাল হওয়া এবং অসাড় হয়ে যাওয়া অনুভূত হয়। পায়ে ঘা হলে ও ক্ষত না শুকানোও অন্যতম লক্ষণ।
আরও পড়ুন: নখ দেখেই বুঝে নিন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত কি না
এসব সমস্যার কারণ ঠিকমতো রক্ত প্রবাহ না হওয়া। রক্তনালিগুলো সরু ও শক্ত হয়ে যায়। ফলে রক্ত স্বাভাবিকভাবে প্রবাহিত হয় না।
পায়ের নিচে বা বুড়ো আঙুলের নিচে ফোসকা পড়ে, ঘা অথবা আলসার হয়ে যায়। পায়ের আকৃতি পরিবর্তনও হয়ে যায়। অনেকে সময় পায়ের পাতা ভারি হয়ে যায়, পা ফেলতে সমস্যা হয়, পায়ের ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়।
একই সঙ্গে ত্বক ফাটা, গোড়ালি ফাটা, আঙুলের মাঝখানে চামড়া ফাটা ও চামড়া ওঠার সমস্যা দেখা দেয়। ত্বকের রঙেরও পরিবর্তন ঘটে। গোড়ালি বা পায়ে ফোলাভাব দেখা দেয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডায়াবেটিস রোগীর মধ্যে এসব লক্ষণ দেখলে দ্রুত বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে হবে। পাশাপাশি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে যা যা করবেন-
আরও পড়ুন: ডায়াবেটিস রোগীর জন্য আখের রস কি সত্যিই উপকারী?
>> প্রথমত, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।>> নিয়মিত শরীরচর্চা জরুরি। দিনে অন্তত আধা ঘণ্টা করুন।>> চিকিৎসকের পরামর্শমতো ওষুধ খেতে হবে।>> কার্বোহাইড্রেট অর্থাৎ ভাত, রুটি ও আলু কম খান। তার বদলে ফাইবার মানে সবজি, ওটস, ঢেঁকি ছাঁটা চাল বেশি মাত্রায় খান।>> নিয়মিত সুগার পরীক্ষা করুন ঘরে। কমবেশি দেখলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সূত্র: মায়োক্লিনিক
জেএমএস/জেআইএম