‘প্রত্যেক মেয়ের মনের মধ্যে একটা বিশ্বাস থাকতে হবে যে, ‘আমি সব পারবো।’ মেয়েরা সব পারে, আত্মবিশ্বাস থাকলে মেয়েরা সব পারবেই।’মুখে ‘সমঅধিকার’ কথাটি বললেও আমরা অনেকেই মনেপ্রাণে তা বিশ্বাস করতে চাই না। অনেক পেশায় মেয়েরা এখনো আয়ত্ব করতে পাড়ছে না অথবা তাদের আয়ত্ব করতে দেয়া হচ্ছে না। তবে প্রবল ইচ্ছাশক্তি ও ‘আত্মবিশ্বাস’ থাকলেই নারীরা যেকোন পেশায় স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পারে।জাগো নিউজকে দেয়া একান্ত সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক গুলশান জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) নুসরাত জাহান মুক্তা। পারিবারিক সহযোগিতা আর আত্মবিশ্বাসের কারণেই পুলিশের ঊর্ধ্বতন একটি পদে কর্মরত আছেন তিনি।তিনি বলেন, ‘মেয়েরা পারবে না কেন? যে কোন কাজে সফল হওয়ার জন্য মেয়েদের আত্মবিশ্বাসী না হয়ে উপায় নেই।’পুলিশ বাহিনীতে মেয়েদের কোন ধরণের বৈষম্যের শিকার হতে হয় না উল্লেখ করে নুসরাত জাহান বলেন, ‘পুলিশে যোগদানের পর থেকে এ পর্যন্ত আমি কোন বৈষম্য খুঁজে পাইনি। সবাই মেয়েদের সাহায্য করে, সহযোগী হিসেবে কাজ করে। তাছাড়া মেয়েদের মধ্যে পেশাদারিত্ব অনেকখানি বেশি, তাই ঊর্ধ্বতনরা মেয়েদের বড় বড় কাজ দিতেও দ্বিধা করেন না।’মেয়েদের সফল হওয়ার পেছনে পরিবারের ভূমিকা নিয়ে সিনিয়র এসি বলেন, যেকোন পেশায় সফল হতে হলে পরিবারের ১০০% সাপোর্ট দরকার। বাসায় শান্তি থাকলে পেশায় শান্তি পাওয়া যাবে না। আমি পরিবার থেকে শতভাগ সহযোগিতা পেয়েছি, পেয়ে যাচ্ছি। তাদের সেকরিফাইসের (ত্যাগ) কারণেই আমি স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করতে পারছি।মানুষের বাঁধাধরা চিন্তা ধারা থেকে নারীরা কতটুকু মুক্ত হতে পেরেছে? জাগো নিউজের এমন প্রশ্নে নুসরাত জাহান বলেন, কয়েকটি ক্ষেত্র ছাড়া মেয়েরা এখন আগের চেয়ে অনেকটাই মুক্ত। আগে সবাই মেয়েদের যেমন অজ্ঞ-মূর্খ মনে করতো এখন তা মনে করে না। মেয়েদের শিক্ষার হার বেড়েছে, প্রায় সব পেশায় মেয়েরা নিয়োজিত রয়েছে। আগামীতে আরো হবে। একজন মেয়ে-স্ত্রী এবং মা যদি শিক্ষিত হয়, তাহলে এই শিক্ষা বাকীদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়বে।ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত পুলিশ কর্মকর্তাদের হরহামেশাই মাঠে থেকে কাজ করতে হয়। সাধারণ মানুষের মুখোমুখি হতে হয় অনেকসময়। নারী কর্মকর্তা হিসেবে কোন ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে কিনা? উত্তরে এই নারী কর্মকর্তা বলেন, সাধারণ মানুষ নারী পুলিশকে মাঠে দেখে অভ্যস্ত নয়। অনেক সময় তারা বিভিন্ন বিষয়ে বলতে চায় না, অভিযোগ করতে চায় না। আগে রাস্তায় নারী পুলিশ দেখলে অনেকে অবাক হয়ে যেত, তবে আস্তে আস্তে বিষয়টি নরমাল হয়ে গেছে।নুসরাত জাহান মুক্তা ২০১১ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়ন বিভাগে অনার্স-মাস্টার্স করে সে বছর পুলিশে যোগ দেন। তার কর্মস্থল ছিল পুলিশ হেড কোয়ার্টার্স। এরপর নিয়মিত ট্রেনিং শেষে ২০১৩ সালে ডিএমপি হেড কোয়ার্টার্সে ওমেন পুলিশের এসি হিসেবে যোগদান করেন তিনি। এরপর ধানমন্ডি ট্রাফিক জোনের এসি আর ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে গুলশানের এসি হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।এআর/জেএইচ/বিএ
Advertisement