জামাআতে নামাজ পড়ার অনেকগুলো ফায়েদা রয়েছে যার কিছু তুলে ধরা হলো- ১. আল্লাহ তাআলা নিজ দয়ায় উম্মতে মুহাম্মাদির জন্য সময়ে সময়ে পরস্পর একত্রিত হওয়ার কিছু বিশেষ সুযোগ ও সুব্যবস্থা করেছেন। যাতে তারা পারস্পরের খবরাখবর নিতে পারে। প্রয়োজনে সাহায্য-সহযোগিতা করতে পারে। পরস্পরের কথা ও কাজে আল্লাহ তাআলার নাযিলকৃত বিধানের দিকে আহ্বান করার প্রচুর সুযোগ পায়। এ সুযোগগুলো কখনো হয় দৈনিক। যেমন- দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাআতের আদায় করার সময়। আবার কখনো তা হয় সাপ্তাহিক। যেমন- শুক্রবার জুমআর দিন মসজিদে গেলে। আবার কখনো তা হয় বাৎসরিক ও আঞ্চলিক। যেমন- একই অঞ্চলের ঈদগাহসহ ধর্মীয় বিভিন্ন উৎসবে একত্রিত হলে। আবার বাৎসরিক ও আন্তর্জাতিক। যেমন- বিভিন্ন মুসলিম রাষ্ট্র থেকে সচ্ছল মুসলিমদের হজ্জ পালনে মক্কার আরাফার ময়দানে।২. জামাআতে নামাজ পড়া বিশেষ সাওয়াবের কাজ।৩. জামাআতে নামাজের উদ্দেশ্যে মসজিদে উপস্থিত হলে পরস্পরের অবস্থা সম্যকরূপে জানা যায়। এর ফলে রুগ্ন ব্যক্তিদের সেবা করা, সমাজের গরীব-দুঃখীদের প্রয়োজনীয় সাহায্য-সহযোগিতা এবং মৃত ব্যক্তির দাফন-কাফন করার সুযোগ লাভ করা।৪. জামাআতে মসজিদে গেলে আত্মীয়- স্বজনের খোঁজ খবরে নেয়া, এলাকায় নবাগত যে কোন মুসাফির ব্যাক্তিকেও সহজে জানা-শুনা এবং ধর্মীয় প্রচার-প্রচারণার কাজের সুযোগ লাভ হয়।৫. নামাজের উদ্দেশ্যে মসজিদে আসলে পরস্পর একত্রিত হওয়ার মাধ্যমে ইসলামের একটি বিশেষ নিদর্শন ‘জামাআত’ প্রতিষ্ঠা হয়।৬. নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে মসজিদে পরস্পর একত্রিত হওয়ার মাধ্যমে ইসলাম বিদ্বেষীদের সামনে মুসলমানদের দাপট, শক্তি ও পরাক্রমশালীতা বিশেষভাবে ফুটে উঠে। এবং মুনাফিক ও আল্লাহদ্রোহী শক্তি পর্যদুস্ত হয়।৭. নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে মসজিদে আসলে নামাজের বিধি-বিধানসহ আলিমদের কাছ থেকে ধর্ম সম্পর্কে অনেক কিছুই জানার সুযোগ হয়।৮. মসজিদে পরস্পর একত্রিত হলে সমাজে যারা মসজিদে অনুপস্থিত থাকে তাদেরকে চিহ্নিত করে জামাআতে আসার উপদেশ দেয়া যায়।৯. জামাআতে পরস্পর একত্রিত হওয়ার মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের বিশেষ সুযোগ লাভ হয়। ১০. মসজিদে পরস্পর একত্রিত হওয়ার মাধ্যমে কুপ্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণে বিশেষ সুযোগ লাভ হয়।১১. মসজিদে একত্রিত হয়ে সারিবদ্ধভাবে নামাজ পড়ার মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে ইসলামের জন্য সীসাঢালা প্রাচীরের মতো সারিবদ্ধভাবে জিহাদ (ধর্মীয় কাজে প্রানন্তকর চেষ্টা) করার বিশেষ প্রশিক্ষণ লাভ হয়।১২. মসজিদে আসলে সমাজের ধনী-দরিদ্র্য, জনপ্রতিনিধি ও জনতা পরস্পরের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ লাভ হয়। যাতে নিজেদের মধ্যে সামাজিক সব ব্যাপারে পরামর্শের উত্তম সুযোগও পাওয়া যায়।১৩. মসজিদে আসলে সমাজের ধর্ম বিমুখদের ধর্মের পথ দেখানোর সুযোগ হয়।১৪. জামাআতে নামাজ পড়ার মাধ্যমে সাহাবায়ে কিরামের যুগের শিক্ষা পদ্ধতির অনুসরণ ও অনুকরণ হয়। যা দ্বীন শিক্ষার মূলনীতির একটি।১৫. একান্ত সাওয়াবের আশায় জামাআতে নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে মসজিদে পরস্পর একত্রিত হওয়া মুসলিম উম্মাহর উপর আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে ধারাবাহিক বরকত নাজিল হওয়ার একটি বিরাট মাধ্যমও বটে।১৬. মসজিদে পরস্পর একত্রিত হওয়ার মাধ্যমে সমাজের নিরলস ইবাদতকারীদের ইবাদাতের অদম্য উৎসাহ্- উদ্দীপনা দেখে অলসদের মাঝেও ইবাদতের ইচ্ছা ও স্পৃহা জন্ম নেয়।১৭. মসজিদে পরস্পর একত্রিত হওয়ার মাধ্যমে নামাজ ছাড়া আরো অন্য কোনো ইবাদতের মাধ্যমে বহুগুণ সাওয়াবও অর্জন করা যায়।১৮. মসজিদে জামাআতে একত্রিত হওয়ার মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহকে সময়ের প্রতি গুরুত্ব দেয়ার প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাজ জামাআতের সহিত পড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।এমএমএস/পিআর
Advertisement