মতামত

মিটারেই চলুক সিএনজি অটোরিকশা

নগর ব্যবস্থাপনার মধ্যে গণপরিবহনের বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু আমাদের দেশে বিশেষ করে রাজধানীতে গণপরিবহনের বালাই নেই। যদিও আছে যানজটের অসহনীয় দুর্ভোগ, রিকশা, অটোরিকশাসহ নানা শ্রেণির যানবাহন। কিন্তু এর সবই বলতে গেলে যাত্রীদের  নাগালের বাইরে। গন্তব্যে যাওয়ার সময় বিশেষ করে সিএনজিচালিত অটোরিকশা পাওয়া ভার। মিটারে যাবে তো দূরের কথা অনেক সময় ‘বাড়িয়ে’ দিলেও যেতে রাজি হয় না। অথচ নিয়ম অনুযায়ী মিটারে যাওয়া এবং যাত্রীর ইচ্ছানুযায়ী গন্তব্যে যেতে বাধ্য সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকরা। বাস্তবে এটা যে হয় না সেটি আবারো ওঠে এলো জাগো নিউজের গতকাল রোববারের এ সংক্রান্ত এক রিপোর্টে।  দুঃখজনক হচ্ছে, সরকারের নেয়া কঠোর পদক্ষেপের পরও রাজধানীতে মিটারে চলছে না সিএনজি চালিত অটোরিকশা। কোনো কোনো চালক মিটারে যেতে রাজি হলেও তারা পুরোনো সুরে একই দাবি করেন ‘বকশিশ’ বা ‘বাড়িয়ে’ দিয়েন। এভাবে সকাল-সন্ধ্যা চালকদের স্বেচ্ছাচারিতায় জিম্মি হয়ে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।নতুন নিয়মে সিএনজিচালিত অটোরিকশার প্রথম দুই কিলোমিটারের ভাড়া ২৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪০ টাকা করা হয়েছে। প্রথম দুই কিলোমিটারের পর প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া ৭ টাকা ৬৪ পয়সা থেকে বেড়ে এখন ১২ টাকা। প্রতি মিনিট বিরতির জন্য যাত্রীকে গুণতে হচ্ছে দুই টাকা করে, আগে যা ছিল ১ টাকা ৪ পয়সা। এর পরও যাত্রী ভোগান্তি যেন চরম আকার ধারণ করেছে।সম্প্রতি যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনের তথ্যমতে, ঢাকা মহানগরীতে চলাচলরত অটোরিকশার ৬২ ভাগ চুক্তিতে চলাচল করে। মিটারে চলাচলকারী অটোরিকশার ৮১ শতাংশ ২০ টাকা থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বকশিশ দাবি করে। যাত্রীদের চাহিদার গন্তব্যে যেতে রাজি হয় না ৭৩ ভাগ অটোরিকশা। এছাড়াও ‘প্রাইভেট’ অটোরিকশার ভাড়ায় যাত্রী বহন এবং ঢাকা জেলার অটোরিকশা বেআইনিভাবে ঢাকা মহানগর এলাকায় প্রবেশ করে ৩৮ শতাংশ গাড়ি মিটার বিহীনভাবে চলাচল করে। যাত্রী হয়রানি নিয়ে অভিযোগের অন্তনেই। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) অভিযোগ পেলে শাস্তির কথা বললেও সেটা সুদূরপরাহত। কোনো যাত্রী অভিযোগ করলে শুনানীর দিন তাকে আবার উপস্থিত থাকতে হবে। এটা কোনোভাবেই বাস্তবসম্মত নয়। গণপরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা গেলে যাত্রীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে পারতোনা সিএনজি অটো রিকশার চালকরা। কিন্তু একটা দেশে আইন-কানুন বলে তো কিছু ব্যাপার আছে। তাহলে এই জিম্মিদশা থেকে যাত্রীরা কেন মুক্তি পাবে না? সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে দায় এড়াতে পারেন না। পুলিশ, বিআরটিএসহ সংশ্লিষ্টরা আন্তরিকভাবে চাইলে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যাত্রীভোগান্তি আমলে নিয়ে সেটা তারা চাইবেন কিনা। এইচআর/এমএস

Advertisement