ফিচার

ওস্তাদ আল্লা রাখার প্রয়াণ দিবস

একজন বিখ্যাত তবলা বাদক। ১৯১৯ সালের ২৯ এপ্রিল পাঞ্জাবের গুরুদাসপুর জেলার রতনগড় গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।ওস্তাদ আল্লারাখার বাবা ছিলেন একজন কৃষক। তার বাবা ভেবেছিলেন তার ছেলেও তার মতো কৃষিকাজে মনোনিবেশ করবে। কিন্তু বস্তবে তা ঘটেনি। কৃষিকাজে আল্লারাখার কোনো আগ্রহ ছিল না। তার আগ্রহ ছিল সংগীতে।

Advertisement

মূলত পাঞ্জাব ঘরানার এ শিল্পী অভারতীয় শ্রোতার কাছে তবলাকে জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন। ১৯৬০ সালে রবি শংকরের প্রধান সংগতকারী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন এবং জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছান। ১৯৭১ সালে আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরের ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনে ‘দ্য কোনসার্ট ফর বাংলাদেশ’- এ সেতারবাদক রবি শংকর ও বিখ্যাত সরোদবাদক ওস্তাদ আলী আকবর খানের যন্ত্রসংগীতের সঙ্গে তবলায় ছিলেন ওস্তাদ আল্লা রাখা খান।

ওস্তাদ আল্লারাখা খান সারাবিশ্বে তবলা বাজানোর মাধ্যমে এই শিল্পকে অত্যন্ত জনপ্রিয় করেন। বিশ্বের দরবারে ভারতীয় ধ্রুপদী সংগীতের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। সেই সঙ্গে যন্ত্রটির মর্যাদা এবং সম্মান উচ্চতার শিখরে নিয়ে যান। সবার কাছে ‘আব্বাজী’ বলেই পরিচিত ছিলেন তিনি।

তিনি সংগীত জীবন শুরু করেন ১৯৪০ সালে লাহোরে, প্রধান শিল্পির একজন সংগতকারী হিসেবে এবং এরপর বোম্বে ‘অল ইন্ডিয়া রেডিও’-তে একজন কর্মচারী হিসএবে কাজ করেন। সেখানেই প্রথম একক তবলা বাজানো শুরু করেন এবং বলা যায় তার অবদানেই বাদ্য জগতের দুনিয়ায় ও সংগীত জগতে তবলার অবস্থান উন্নীত করেন। মানুষ বোঝে যে তবলার একটি পৃথক স্থান আছে। ১৯৪৩-১৯৪৮ সালে বেশ কিছু হিন্দি ছায়াছবিতে সংগীত পরিচালনার কাজও করেছিলেন। ছবিতে এ আর কুরেশি নামে কাজ করতেন আল্লারাখা। তবে বড়ে গুলাম আলী খান, আলাউদ্দিন খান, বিলায়ত খান, বসন্ত রাই, আলী আকবর খান এবং, রবি শংকরের মত অসাধারণ সব শিল্পীদের সঙ্গে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সংগত করেছিলেন। এদের মধ্যে সংগতকারী হিসেবে রবি শংকরের সঙ্গে তার যুগলবন্দী সব কিছুকে ছাপিয়ে যায়।

Advertisement

তিনি ১৯৮৫ সালে বম্বেতে আল্লা রাখা ইনস্টিটিউট অব মিউজিক প্রতিষ্ঠা করেন। কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ তাকে ১৯৭৭ সালে পদ্মশ্রী এবং ১৯৮২ সালে সঙ্গীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার প্রদান করা হয়। ২০০০ সালে ৩ ফেব্রুয়ারি মুম্বইতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

কেএসকে/এমএস