ওজন কমাতে স্বাস্থ্যকর ডায়েটের বিকল্প নেই। এজন্য স্বাস্থ্য সচেতনরা বিভিন্ন ধরনের ডায়েট চার্ট অনুসরণ করেন। যেমন গত বছর ভেগানিজম ও প্যালিও ডায়েট বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। এই দুটি ডায়েট ওজন কমানো থেকে শুরু করে স্বাস্থ্যকর জীবনধারা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
Advertisement
স্বাস্থ্যকর জীবনধারা হলো জীবনযাপনে সামান্য পরিবর্তন আনা। এতে ওজনও নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় আবার সুস্থতাও মেলে। বিশেষ করে ডায়াবেটিস ও স্থূলতা নিয়ন্ত্রণে জীবনধারণে পরিবর্তন আনার বিকল্প নেই।
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, স্বাস্থ্যকর ডায়েট অনুসরণের সঙ্গে আয়ু বাড়ার সংযোগ আছে। বিভিন্ন ধরনের ডায়েট শুধু ওজন কমাতেই সহায়তা করে না, বরং শরীর সুস্থ রাখতেও সাহায্য করে।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের দাবি, ২২ বছরের এক গবেষণায় দেখা গেছে যারা স্বাস্থ্যকর ডায়েট অনুসরণ করেছেন তারা অন্যদের তুলনায় গড়ে সাত বছর বেশি বাঁচেন।
Advertisement
তবে যে কোনো ডায়েট অনুসরণ করার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। যারা এরই মধ্যে ওজন কমানোর কথা ভাবছেন কিন্তু কোন ডায়েট অনুসরণ করবেন তা বুঝতে পারছেন না তারা জেনে নিন ২০২৩ সালে কোন কোন ডায়েটগুলো ট্রেন্ডিংয়ে থাকবে। চলুন ধারণা নেওয়া যাক কোন কোন ডায়েট এখন বিশ্বব্যাপী সমাদৃত-
মেডিটেরিয়ান ডায়েট
মেডিটেরিয়ান ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত থাকে ফল-মূল, শাকসবজি, গোটা শস্য, লেবু, মাছ ইত্যাদি। এর সঙ্গে জলপাই তেলের পরিমাণ বেশি ও স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
গবেষণায় দেখা গেছে, মেডিটেরিয়ান ডায়েট কার্ডিওভাসকুলার রোগে মৃত্যুর ঝুঁকি ও ওজন কমাতে সাহায্য করে।
Advertisement
কেটোজেনিক ডায়েট
কেটো ডায়েটে চর্বি বেশি ও কার্বোহাইড্রেট কম গ্রহণের পরামর্শ দেয়। তবে কোষ্ঠকাঠিন্য ও নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধের মতো সমস্যা এড়াতে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এখন কেটো ডায়েটে কার্বোহাইড্রেটের পাশাপাশি প্রোটিনের পরামর্শ দিচ্ছেন।
ইন্টারমিটিং ফাস্টিং
বিরতিহীন উপবাস বা ইন্টারমিটিং ফাস্টিং করে ওজন কমানোর পদ্ধতি বেশ জনপ্রিয় বিশ্বব্যাপী। এক্ষেত্রে প্রতিদিন ১৬-১৮ ঘণ্টা উপবাসের পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষ করে রাত ৮টা থেকে পরের দিন দুপুর পর্যন্ত না খেয়ে থাকার মাধ্যমে ধীরে ধীরে ওজন কমানো হয় এক্ষেত্রে। শুধু ওজন নয়, ইন্টারমিটিং ফাস্টিং শরীরের সুস্থতাতেও ব্যাপকভাবে কার্যকরী বলে প্রমাণ হয়েছে বিভিন্ন গবেষণায়।
ভেগান ডায়েট
হলিউড কিংবা বলিউডের অনেক তারকাই ভেগান বা নিরামিষাশী ডায়েট অনুসরণ করেন। বিভিন্ন গবেষণায় এর স্বাস্থ্য উপকারিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। ভেগানরা মাংস, ডিম, মাখন, জেলটিন, মধুসহ সব ধরনের প্রাণীজ পণ্য খাওয়া এড়িয়ে চলে।
লো-কার্ব ডায়েট
পুরোনো হলেও বিশ্বব্যাপী অনেকের কাছে জনপ্রিয় এই ডায়েট। এক্ষেত্রে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার কম ও শাকসবজি বেশি খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
ড্যাশ ডায়েট
উচ্চ রক্তচাপ কমাতে ও ওজন কমাতে দারুন কার্যকরী এক খাদ্যতালিকাগত পদ্ধতি এটি। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের গবেষণার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে এই ডায়েট।
এতে প্রচুর ফল, সবজি, শস্য গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়। আর সীমিত পরিমাণে চর্বিযুক্ত মাংস, হাঁস-মুরগি, মাছসহ কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত পণ্য খাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। পটাসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম বেশি থাকা সত্ত্বেও ড্যাশ ডায়েটে সোডিয়ামের পরিমাণ কম হয়।
প্যালিও ডায়েট
এটি বর্তমানে জনপ্রিয় একটি ডায়েট। তবে এই ডায়েটে খাবার অনেক কম থাকে। ফল, শাকসবজি, মাংস, মুরগি, মাছ, বাদাম, বীজ খাওয়া গেলেও দুগ্ধ, শস্য, লেবু ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয় এই ডায়েটে।
সমালোচকরা বলছেন, এই ডায়েটে যেহেতু খাবার খুব সীমিত থাকে তাই শরীরে বিভিন্ন ভিটামিনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
প্রোটিনসমৃদ্ধ ডায়েট
নতুন বছরে প্রোটিনসমৃদ্ধ ডায়েটের প্রবণতাও লক্ষ্য করা যাবে। এই ডায়েট অনুসরণ করলে খাওয়ার প্রবণতা কমে, কারণ প্রোটিন দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে।
মাংস ও দুগ্ধজাত খাবার এখনো প্রোটিনের জনপ্রিয় উৎস কিন্তু যারা মাংস খেতে পারেন না বা খেতে চান না তাদের জন্য ভেগান প্রোটিন পাউডারও আছে। অবশেষে পাস্তুরিত তরল ডিমের সাদা থেকে তৈরি ডিমের সাদা প্রোটিন পাউডারও আছে।
সূত্র: এইথিয়ন
জেএমএস/জেআইএম