প্রতিবেশীর ৬ কাঠা জমি ও নিজের ১০ কাঠা জমিতে শিমসহ বিভিন্ন শাক-সবজির মিশ্র চাষ করছেন মো. ইউসুফ আলী শহিদ। এবারও শিমের বাম্পার ফলনে সফলতার স্বপ্ন বুনছেন তিনি। কৃষিকাজে উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করে এখন স্বাবলম্বী।
Advertisement
মো. ইউসুফ আলী ঝালকাঠি সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের বাউকাঠি গ্রামের মৃত মেনাজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি সারাবছরই মৌসুমভেদে বিভিন্ন কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
ইউসুফ আলী জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, বাবার সম্পত্তি বলতে বসতভিটা ছাড়া আর তেমন কিছুই পাইনি। চার হাত-পায়ে পরিশ্রমই আমাদের ভাগ্য। বাড়ির সামনে এক প্রতিবেশীর কাছ থেকে ৬ কাঠা জমি বার্ষিক চুক্তিতে লিজ নিই। প্রতিবছর জমির ভাড়া বাদ মালিককে ৪ হাজার টাকা দিতে হয়। এরপরও আমাদের যে ফসল উৎপাদন হয়, তাতে কৃষিকাজের সব ধরনের খরচ বাদ দিয়ে ভালো লাভজনক অবস্থায় থাকি।’
তিনি বলেন, ‘কৃষির আয়ের ওপর নির্ভর করে বাইরেও কিছু জমি করেছি। পাশাপাশি কারো জমি বর্গা আবার কারো জমি মেয়াদী চুক্তিতে নিয়ে চাষাবাদ করছি। বাড়ির পেছনেও আরও ১০ কাঠা জমিতে কৃষিকাজ করছি। সেখানে শীতকালীন শাক-সবজির ভালো ফলন হয়েছে। শুধু শীতকালেই নয়, প্রতিটি মৌসুমভিত্তিক ফসল চাষ করা হয়।’
Advertisement
তিনি আরও বলেন, ‘এ বছর এখন পর্যন্ত দুইবারে প্রায় তিন মণ শিম (লম্বা বড় জাতের) বিক্রি করেছি। প্রথম ধাপে প্রতিকেজি ৭০ টাকা ও দ্বিতীয়বারে ৫০ টাকা দরে বিক্রি করেছি। শিম তুলে বস্তা ভরে রাখলে ঝালকাঠি, স্বরূপকাঠি ও বরিশাল থেকে পাইকাররা এসে কিনে নেন। কৃষিকাজ, ফসল সংগ্রহ ও বস্তায় ভরে রাখতে পুরুষের পাশাপাশি সহায়তার হাত বাড়াচ্ছেন নারীরাও।’
স্থানীয়রা জানান, কৃষিকাজে ইউসুফ আলী সফল। এই পেশার মাধ্যমে তিনি মেয়ের পড়াশোনা করিয়ে বিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছেন। ছেলেকেও চতুর্থ শ্রেণিতে পড়াশোনা করাচ্ছেন। তারা ওই গ্রামের একটি আদর্শ কৃষক পরিবার।
ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রান্তিক পর্যায়ে অনেক চাষি আছেন। যারা শ্রম দিয়ে মূল্যবান ফসল ফলান। আমরাও কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রযুক্তিগত সহায়তা ও প্রণোদনা দিয়ে তাদের কৃষিকাজে উদ্বুদ্ধ করতে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। এ কারণেই কৃষকরা সফল হচ্ছেন।’
আতিকুর রহমান/এসইউ/এমএস
Advertisement