তথ্যপ্রযুক্তি

ইউটিউব চ্যানেল হ্যাকার থেকে রক্ষার উপায়

বর্তমানে বিশ্বে ইউটিউব জনপ্রিয় একটি ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম। শুধু ভিডিও দেখাই নয়, কন্টেন্ট ক্রিয়েটররা বিভিন্ন ভিডিও আপলোড করে আয় করছেন মাসে লাখ লাখ টাকা। এজন্য অবশ্যই প্রথমে একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে হবে। এ চ্যানেলকে প্রতিষ্ঠিত করতে দরকার অনেক শ্রম, সময় ও মেধা।

Advertisement

অনেক সময় দেখা যায়, লাখ লাখ সাবস্ক্রাইবার আছে এমন চ্যানেল মুহূর্তেই হ্যাক হয়ে যাচ্ছে। নিয়ন্ত্রণ চলে যাচ্ছে হ্যাকারদের হাতে। সেলিব্রেটি থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংস্থার চ্যানেলও হ্যাক করে নিচ্ছে হ্যাকাররা। তাই একদিকে যেমন চ্যানেলের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে; তেমনই বাড়তে থাকে হ্যাকিংয়ের সম্ভাবনা।

তবে কয়েকটি উপায়ে আপনার ইউটিউব চ্যানেলটিকে হ্যাকারের হাত থেকে রক্ষা করতে পারবেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেগুলো-

>> প্রথমেই আপনাকে ইউনিক এবং খুব স্ট্রং একটি পাসওয়ার্ড সিলেক্ট করতে হবে চ্যানেলের জন্য। যেটি অন্য কাউকেই শেয়ার করবেন না। এ ক্ষেত্রে গতানুগতিক পাসওয়ার্ড ব্যবহার না করাই ভালো। যেমন নাম, জন্মতারিখ কখনোই পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করবেন না। এগুলো খুব সহজেই হ্যাকার বের করে ফেলতে পারে।

Advertisement

>> কিছুদিন পরপর পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন। নিয়মিত আপনার পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। কোননা কোনোভাবে আপনার পাসওয়ার্ড অনলাইনে (বা ডার্ক ওয়েব) ফাঁস হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই যদি একই পাসওয়ার্ড অনেক বেশি সময় ধরে ব্যবহার করেন, তাহলে খুব সহজেই হ্যাকারের পাল্লায় পড়তে পারেন।

>> অ্যাকাউন্টের ডিটেইল, মেইল আইডি অন্য কারো সঙ্গে শেয়ার করা যাবে না। অনেকে ব্যবসায়িক উদ্দেশে মেইল আইডি ব্যবহার করেন চ্যানেলে। তবে এটি যেন আপনার চ্যানেল খুলেছেন সেই মেইল আইডি না হয়।

>> একাধিক মোবাইল থেকে ইউটিউব চ্যানেল লগইন করবেন না। চ্যানেল হ্যাক করার আরেকটি বড় উপায় হচ্ছে একাধিক মোবাইলে চ্যানেলের অ্যাক্সেস। বিভিন্ন দরকারে একাধিক মানুষকে ইউটিউব চ্যানেলের অ্যাক্সেস দেন অনেকে। যা হয়তো পরে রিমুভ করতে ভুলে যান। ফলে খুব সহজেই যে কেউ হ্যাক করে নিতে পারে আপনার চ্যানেল।

>> বাইরের কোনো সাইবার ক্যাফে বা অন্য কারো ফোন বা কম্পিউটার থেকে চ্যানেল লগইন না করাই ভালো। কোথাও ঘুরতে গিয়ে বা বেড়াতে গিয়ে এ ভুল অনেকেই করেন। তবে খুব জরুরি হলে কাজ শেষে অবশ্যই লগ আউট করুন। এমনকি সেই ডিভাইস থেকে হিস্ট্রি মুছে ফেলুন।

Advertisement

>> সবচেয়ে বেশি ইউটিউব চ্যানেল হ্যাক হয়ে থাকে অচেনা লিঙ্কে ক্লিক করে। না জেনে বুঝে অচেনা লিঙ্কে ক্লিক করে হারান ইউটিউব চ্যানেল। এটি হ্যাকারদের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত একটি ফাঁদ। এসব লিঙ্কে থাকে ম্যালওয়্যার। যার মাধ্যমে আপনার ডিভাইসে ঢুকে সর্বস্ব লুট করে নেন তারা।

>> অনেক লিঙ্কে ক্লিক করার পর সেখানে ইউটিউব চ্যানেলে লগইন করতে বলে। অনেকেই লগইন করেন। এর ফলে এক্সেস চলে যায় হ্যাকারদের হাতে। আবার অনেক হ্যাকার রয়েছেন, যারা জিমেইলে বিভিন্ন অফার দিয়ে থাকে এবং সেই লিঙ্কে ক্লিক করতে বলেন। এ ভুলেও হারাতে পারেন সাধের ইউটিউব চ্যানেলটি।

>> হ্যাকারের হাত থেকে বাঁচতে সব ধরনের সামাজিক মাধ্যমের অ্যাকাউন্টে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন ব্যবহার করুন। হোক এটি ফেসবুক কিংবা ইউটিউব চ্যানেল। যে কোনো অ্যাকাউন্টের জন্য টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন খুবই কার্যকরী। এর মাধ্যমে হ্যাকার আপনার পাসওয়ার্ড জানলেও সহজে হ্যাক করতে পারবেন না। যখনই কেউ আপনার পাসওয়ার্ড চেঞ্জ করবেন বা অ্যাকাউন্ট লগইন করতে চাইবেন; তখনই আপনার মোবাইলে একটি ওটিপি কোড আসবে।

>> ডেডিকেটেড ব্রাউজার বা ক্রোম প্রোফাইল ব্যবহার করুন। গুগল একসঙ্গে একাধিক অ্যাকাউন্টে সাইন ইন করতে দেয়। ফলে আপনি আপনার সব অ্যাকাউন্ট আলাদা ভাবে এখানে লগইন করতে পারবেন। ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা করতে একটি ভিন্ন ব্রাউজার বা একটি নতুন ব্রাউজার প্রোফাইল ব্যবহার করতে পারেন। ফলে একই ব্রাউজারে সব অ্যাকাউন্ট লগইন করতে হবে না। আলাদা প্রোফাইলে আপনার চ্যানেল পরিচালনা করতে পারবেন।

>> অবাঞ্ছিত থার্ড-পার্টি অ্যাপস এবং ওয়েবসাইটগুলোর এক্সেস সরান। গুগল দিয়ে সাইন ইন করুন এবং থার্ড পার্টি অ্যাপগুলো ডিভাইস থেকে সরিয়ে ফেলুন। এগুলোর মাধ্যমে হ্যাকাররা খুব সহজেই আপনার ইউটিউব চ্যানেল বা ডাটা অ্যাক্সেস করতে পারে।

সূত্র: মাসটিপস, টেক হাংরি

কেএসকে/এসইউ/জেআইএম