সাহিত্য

শফিক রিয়ানের কবিতা: নীলাম্বরী

এখন আমি নক্ষত্র দেখা ভুলে গেছি—ভুলে গেছি ছোটবেলার সেই ‘তারায় তারা মিলিয়ে’ ছবির আকৃতি দেওয়ার কৌশল।যখন তুমি তোমার মিষ্টি সুরে পৃথিবীর সূত্র আবৃত্তি করতে গেলে,তখন আমি যাযাবর হয়ে বেঁচে ফিরলাম।বলো তো মেয়ে, কেন এই ভয়? কেন এই হাহাকার?

Advertisement

হাসছো তুমি? বোকা তুমি।তুমি যে নীল, নীলাম্বরী, নীলের সায়র!যতবার আকাশ দেখেছি; ততবার আমার চোখ কেড়ে নিয়েছে ওই নীল দিগন্ত। প্রতিবার ওই নীল আমায় মনে করিয়ে দিয়েছেতুমি আছো, তুমি আছো, তুমি আছো।

ওহে নীলাম্বরী, যে পথ কেড়ে নিয়েছে মানুষের স্বাভাবিকতা, যে অনল পুড়িয়েছে হাজারো সন্ন্যাসীর মন—সেই পথেই কেন আমাকে দিতে হলো হামাগুড়ি?

জানো তুমি? আমি ভুলে গিয়েছি পদ্মার তাণ্ডবলীলা ভুলে গিয়েছি পদ্মা নিমিষেই জমিদারকে করে তোলে ভূমিহীন, যাযাবর, পরাশ্রয়ী।আমি জানি না, কেমন করে প্রলয়ঙ্করী সমুদ্রের ঢেউগুলো আছড়ে পড়ে সৈকতের তীরে—আমি অনুভব করতে পারি না, দিকহারা নাবিকের ক্লান্তি।জানো মেয়ে? এসব কিছুর জন্য কে দায়ী?কেবলই তুমি, শুধুই তুমি, আমার নীলাম্বরী।

Advertisement

হাসছো তুমি? বোকা মেয়ে।তুমি যে নীল, নীলাম্বরী, নীলের সায়র!যতবার নদী দেখেছি, যতবার সমুদ্র দেখেছি;ঠিক ততবার নদী-সমুদ্রের স্বচ্ছ-নির্মল-সহজ নীলাশ্রু আমাকে কেড়ে নিয়েছে।তারা আমায় প্রতিনিয়ত মনে করিয়ে দেয়—তুমি আছো, তুমি আছো, তুমি আছো।

ওহে নীলিমা প্রিয়,প্রেমের অনলে পুড়িয়ে, ভালোবাসার দহনে জ্বালিয়ে সবটুকু ‘তুমি’কে আমায় ফিরিয়ে দিও।

শুনেছো তুমি, পৃথিবীর ঘূর্ণনচক্রে অমাবস্যার সাথে লড়াই করে পূর্ণিমার দখলে থাকা চাঁদটাকেও আর দেখতে পারি না।যতবার চাঁদ দেখেছি, ঠিক ততবার আমাকে লক্ষ্য করে ফিরে আসা চন্দ্রজোছনার নীলাবস্থা মনে করিয়ে দেয়, তুমি আছো, তুমি আছো, তুমি আছো।

ওহে নীল, নীলাম্বরী, নীল সায়রী!তুমিই আমার আকাশ, তুমিই আমার সমুদ্র, তুমিই আমার জোছনা।তোমাতে পাই সমুদ্রের গর্জন, তোমাতে পাই আকাশের হাতছানি, তোমাতেই পাই জোছনার অকৃত্রিম মোহ।

Advertisement

নীলে খুঁজি আনন্দ, নীলে খুঁজি বিষাদ নীলে খুঁজি সৃষ্টি, নীলেই হোক ধ্বংস।নীল যদি আকাশ হয়, তবে নীলই হোক পটাশিয়াম সায়ানাইড।

ওগো চারু প্রিয়তম,ভালোবাসা জেনে নিও নীল আকাশ সম।ওহে প্রিয়, সাইন থিটা, কস থিটার হিসেবটা বুকে কষে নিও।

এসইউ/জেআইএম