একজন সুস্থ ও স্বাভাবিক অল্পবয়সী মানুষ হঠাৎ করেই রহস্যজনকভাবে ঢলে পড়লেন মৃত্যুর কোলে, হাসপাতালে নিতে নিতেই হয়তো তার মৃত্যু ঘটে। চিকিৎসকরাও ঠিক বুঝতে পারলেন না খীভাবে তার মৃত্যু ঘটেছে, তবে ধারণা করলেন, সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে রোগীর।
Advertisement
বর্তমানে এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। অল্পবয়সীদের মধ্যে বাড়ছে সাডেন অ্যাডাল্ট ডেথ সিনড্রোম (এসএডিএস বা স্যাডস) এর প্রবণতা।
এ কারণে বিশেষজ্ঞরা ৪০ বছরের কমবয়সীদেরকে নিয়মিত হৃদযন্ত্র পরীক্ষার পরামর্শ দিচ্ছেন। ফিট ও স্বাস্থ্যকর জীবনধারা বজায় রাখা সত্ত্বেও স্যাডস এর কারণে মৃত্যু ঘটতে পারে যে কারো।
এসএডিএস কি? কারা ঝুঁকিতে আছেন?
Advertisement
রয়্যাল অস্ট্রেলিয়ান কলেজ অব জেনারেল প্র্যাকটিশনার্স ‘এসএডিএস’কে হঠাৎ মৃত্যুর কারণ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছেন, যা যুবকদের মধ্যে অপ্রত্যাশিতভাবে ঘটে।
সাধারণত ৪০ বছরের কমবয়সীদের মধ্যে হঠাৎ মৃত্যু ঘটলে এই শব্দটি ব্যবহার করা হয়, যখন ময়নাতদন্ত মৃত্যুর কারণ জানা যায় না।
বিজ্ঞানী ও চিকিত্সকদের মতে, কমবয়সীদের জীবনযাত্রা যতই স্বাস্থ্যকর হোক না কেন তাদের হার্ট পরীক্ষা করা উচিত। অল্পবয়সী, সুস্থ ও সক্রিয় ব্যক্তিদের মধ্যেও ‘এসএডিএস’ এর প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে।
‘এসএডিএস’ এর লক্ষণগুলো কী কী?
Advertisement
পারিবারিক ইতিহাস বা পরিবারের সদস্যের হঠাৎ মৃত্যু, ব্যায়ামের সময় অজ্ঞান হয়ে যাওয়া বা খিঁচুনি, বা হঠাৎ উত্তেজিত হওয়া বা চমকে যাওয়া। এক্ষেত্রে সতর্কতা ছাড়াই হঠাৎ হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়া সাধারণ ব্যাপার।
সতর্কীকরণ চিহ্নগুলো যখন দেখা দিলেও তা বেশিরভাগ মানুষেই সাধারণ ভেবে ভুল করেন। আকস্মিক কার্ডিয়াক মৃত্যুর লক্ষণগুলোর মধ্যে আছে- মূর্ছা যাওয়া (সিনকোপ), শ্বাসকষ্ট ও বুকে ব্যথা।
অল্পবয়স্কদের মধ্যে হঠাৎ কার্ডিয়াক মৃত্যু কতটা সাধারণ?
আকস্মিক কার্ডিয়াক মৃত্যুর বেশিরভাগই বয়স্ক প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ঘটে, বিশেষ করে যাদের হৃদরোগ আছে। আর হঠাৎ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট তরুণদের মৃত্যুর প্রধান কারণ।
৫ জনের মধ্যে অন্তত ১ জন হার্ট অ্যাটাকের রোগীর বয়স ৪০ বছরের কম হয়ে থাকে। এছাড়া ২০ বা ৩০ বছরের প্রথম দিকে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও বেশি থাকে।
যুবকদের হঠাৎ কার্ডিয়াক মৃত্যুর কারণ কী হতে পারে?
হৃৎপিণ্ডে একটি ত্রুটিপূর্ণ বৈদ্যুতিক সংকেত প্রায়ই হঠাৎ কার্ডিয়াক মৃত্যুর জন্য দায়ী। খুব দ্রুত হৃদস্পন্দনের সময়, হৃৎপিণ্ডের নিচের প্রকোষ্ঠগুলো (ভেন্ট্রিকল) রক্ত পাম্প করার পরিবর্তে অকেজোভাবে কাঁপতে থাকে। হৃৎপিণ্ডের অনিয়মিত ছন্দকে ভেন্ট্রিকুলার ফাইব্রিলেশন বলা হয়।
৩৫ বছরের কমবয়সী সুস্থ ব্যক্তির হঠাৎ কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে মৃত্যু অত্যন্ত বিরল। এই অবস্থা নারীদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। যদিও অল্পবয়স্কদের মধ্যে আকস্মিক মৃত্যু বিরল, তবে যারা ঝুঁকিতে আছে তাদের অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
সূত্র: বোল্ডস্কাই
জেএমএস/এমএস