করোনা সংক্রমণ আবারও বেড়ে চলেছে। এখন করোনার ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের সাব ভেরিয়েন্ট বিএ.৪ ও বিএ.৫ বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। সাধারণ কোভিড লক্ষণগুলোও সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত হয়েছে, গলা ব্যথা এখন সবচেয়ে প্রভাবশালী লক্ষণগুলোর মধ্যে একটি হয়ে উঠেছে।
Advertisement
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তিদের গুরুতর কোভিড সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি বেশি। উচ্চ রক্তচাপ একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা, যা সারা বিশ্বের লাখ লাখ মানুষকে ভোগাচ্ছে। রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে না থাকলে হার্টে অতিরিক্ত চাপ পড়ে।
আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন (এএইচএ) এর সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, স্বাভাবিক রক্তচাপ আছে এমন ব্যক্তিদের চেয়ে উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন যারা তাদের ক্ষেত্রে ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের গুরুতর সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
আশ্চর্যের বিষয় হলো, কোভিড ১৯ ভ্যাকসিনের বুস্টার ডোজসহ সম্পূর্ণ টিকা নেওয়া সত্ত্বেও উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের কোভিড হওয়ার ঝুঁকি দ্বিগুণ।
Advertisement
গবেষণার প্রধান লেখক জোসেফ ই. এবিঙ্গার জানান, উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন এমন কোনো রোগীর যদি ওমিক্রন হয়, তাহলে তাকে হাসপাতালেও ভর্তি করতে হতে পারে। এমনকি যদি তার অন্য কোনো কঠিন দীর্ঘস্থায়ী রোগ নাও থাকে তবুও কোভিড ১৯ এর গুরুতর উপসর্গ দেখা দিতে পারে তাদের শরীরে।
গবেষণাটি ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের এপ্রিলের মধ্যে লস অ্যাঞ্জেলেসের প্রাপ্তবয়স্কদের উপর বিশ্লেষণ করা হয়েছে। গবেষকরা এমআরএনএ কোভিড ভ্যাকসিনের তিনটি ডোজ পেয়েছেন এমন ৯১২ জন প্রাপ্তবয়স্ককে অন্তর্ভুক্ত করে তারা দেখেছেন, অংশগ্রহণকারীদের ১৬ শতাংশই কোভিড পজেটিভ হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হয়েছে।
গবেষণার পরিসংখ্যান অনুসারে, উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তিদের গুরুতর কোভিডের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল ২.৬ গুণ বেশি। হাসপাতালে ভর্তি ১৪৫ রোগীর মধ্যে ১২৫ জন উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন। বয়স্ক ব্যক্তিরা, বা অন্যান্য অন্তর্নিহিত রোগ যেমন কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদেরও গুরুতর কোভিড সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি।
তাহলে কী ভ্যাকসিন অকার্যকর?
Advertisement
গবেষণার ফলাফল অনুসারে, কোভিড ভ্যাকসিনের তিনটি ডোজ নিয়েও রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তিরা গুরুতর কোভিড সংক্রমণে ভুগেছেন। তবে এর অর্থ এই নয় যে, ভ্যাকসিনগুলো কার্যকর নয়। সবারই উচিত কোভিডের টিকাগুলো গ্রহণ করা।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে করণীয়
উচ্চ রক্তচাপ ও গুরুতর কোভিড সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যে যোগসূত্রতা যাচাইয়ে জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন। তবে হাই ব্লাড প্রেশারের রোগীদের এ সময় সতর্ক থাকতে হবে। উচ্চ রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা ছাড়াও স্বাস্থ্যকর খাবার ও শরীরচর্চা জরুরি।
উচ্চ ফাইবার, পটাসিয়াম ও কম চর্বিযুক্ত খাবারসহ একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েট অনুসরণ করুন। আপনার খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে গোটা শস্য, সবুজ শাকসবজি ও রঙিন ফল অন্তর্ভুক্ত করুন।
প্রচুর পানি পান করে হাইড্রেটেড থাকুন। ধূমপান ও মদ্যপান এড়িয়ে চলুন। রক্তচাপের মাত্রা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ।
সূত্র: এক্সপ্রেস.ইউকে/নিউজরুম.হার্ট/আর্থ.কম
জেএমএস/এএসএম