গবেষণার খাতে মোট বাজেটের শুন্য দশমিক ২ শতাংশ টাকা বরাদ্দ দেয়াকে অপ্রতুল হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমদ ।শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে স্বেচ্ছাসেবী গবেষণা সংগঠন ‘চিন্তার চাষ’ আয়োজিত ‘শিল্প গবেষণায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্ব:বিশ্ববিদ্যালয়-শিল্প প্রতিষ্ঠান যৌথ গবেষণা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনা এ কথা বলেন তিনি।তিনি বলেন, গবেষণা মানুষের চিন্তাধারাকে মুক্ত করতে সাহায্য করে। মানুষের মধ্যে বিরাজমান ধুম্রজাল ও কুসংস্কার দূর করতে এটি বিশেষ অবদান রাখে।শিল্প সংশ্লিষ্টদের গবেষণা খাতে টাকা ব্যয় করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এই টাকা থেকে হয়তাে আপানারা কোন মুনাফা পাবেন না। কিন্তু দেশের অনেক উন্নয়ন হবে। যে সুবিধা আপনারাও পাবেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার্থীদের একাডেমিক গবেষণার পাশাপাশি প্রাথমিক সকল গবেষণার প্রতি গুরুত্ব দেয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
Advertisement
আলোচনায় অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ বলেন, গবেষণা দুই ধরনের হয়ে থাকে, প্রথমটি মানবতার উদ্দেশ্যে ও দ্বিতীয়টি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে গবেষণা। এখন আমাদের শিল্পের উন্নয়নে গবেষণা তেমনভাবে লক্ষ্য করা যায় না, গবেষণা হয় শুধু ধ্বংসের জন্য ।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক মোয়াজ্জেম হোসেন খান বলেন, বিদেশিরা গবেষণার অর্থায়ন নিয়ে কখনই চিন্তা করে না। অর্থায়ন নিয়ে সমস্যা শুধু আমাদের দেশে। বিশেষ করে আশির দশকে আমলারা আমাদের দেশের গবেষণাকে শুন্য করে দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনআর গবেষণার কোনো পরিবেশ নাই। কোন জাতি গবেষণা ছাড়া তার সামগ্রিক উন্নয়ন করতে পারবে না।আমলাদের উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন, আপনারা কেন গবেষণার জন্য সরকারি অর্থায়ন করেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ে বা গবেষণা প্রতিষ্ঠান কি আপনাদের শত্রু? দেশের উন্নয়নের জন্য প্রথমে গবেষণার জন্য অর্থ ব্যয় করতে হবে। বড় কিছু একা করা সম্ভব না। এক্ষেত্রে সকলের উদ্যোগ নিতে হবে।
আয়োজক সংগঠনের সংগঠনের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শফিকুর রহমান বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের গবেষার পরিস্থিতি অনাথ ও অস্থিতিশীল। চিন্তার চাষ গবেষণার হাতেখড়ি নামক একটি প্রজেক্টের মাধ্যমে ঢাকা শহরের ১১টি স্কুলে শতাধিক ক্ষুদে গবেষকদের তৈরি করছে।
Advertisement
সংগঠনের ভাইস-চেয়ারম্যন এম জাকির হোসেন খাঁন বলেন, বিশ্বাবিদ্যালগুলোতে আমাদের নিজেদের উদ্যোগে গবেষণার পরিবেশ ফিরিয়ে নিয়ে আসতে হবে। সরকার কি করল তা দেখার কোন সুযোগ নাই। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ করা হচ্ছে, শুনতে খুবই ভাল লাগে। কিন্তু শুনতে আরো ভাল লাগত যদি নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হত।
অর্থনীতিবিদ ড.সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে গোলটেবিল আলোচনায় আরো বক্তব্য দেন- ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চ-এর পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড.শফিক উজ জামান,সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদবিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরি কমিশন এর সদস্য ড. মোহাম্মদ ইউসুফ আলী মোল্লা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ রাসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. হাসিনা খাঁন প্রমুখ।
এএস/এসকেডি
Advertisement