হার্ট ফেল বা হার্ট ফেইলিওরের অর্থ এই নয় যে, হৃদয় থেমে গেছে। হৃৎপিণ্ড যখন আপনার শরীরে পর্যাপ্ত রক্ত ও অক্সিজেন পাম্প করতে পারে না তখন এটি ঘটে।
Advertisement
হৃৎপিণ্ডের পেশী দুর্বল হওয়ার কারণেই মূলত এমনটি ঘটে। তবে আরও কিছু শারীরিক জটিলতা আছে, যার কারণে হৃৎপিণ্ডের কার্যকারিতা কমতে শুরু করে। ফলে এক সময় হতে পারে হার্ট ফেইল।
হার্ট ফেল হওয়ার কারণবয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হার্ট ফেলের ঝুঁকিও বাড়ে। শুধু বয়স্করাই নয় বরং এখন কম বয়সীদের মধ্যেই বেড়েছে হার্ট ফেলের ঝুঁকি।
এটি হতে পারে উচ্চরক্তচাপ, করোনারি আর্টারি ডিজিজ, হার্ট অ্যাটাক, হার্টের জন্মগত ত্রুটি বা রক্ত পাম্পিং পেশীতে আঘাত করে এমন রোগের কারণে।
Advertisement
এ ছাড়া ফুসফুসের রোগও হার্ট ফেলের কারণ হতে পারে। স্থূলতা, ডায়াবেটিস ও স্লিপ অ্যাপনিয়াও এর ঝুঁকি বাড়ায়।
হার্ট ফেল বা ফেইলিওয়ের লক্ষণ>> শ্বাসকষ্ট হতে পারে হার্ট ফেলের প্রাথমিক এক লক্ষণ। আপনি বিশ্রামে থাকলে কিংবা শুয়ে-বসে থাকার পরও যদি নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
এর কারণ হলো হৃৎপিণ্ড ফুসফুস থেকে রক্তের প্রবাহের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে না। ফলে শ্বাস নিতে কষ্ট হবে।
>> হৃৎপিণ্ড যদি সঠিকভাবে পাম্প না করে, তাহলে মস্তিষ্ক শরীরের কম গুরুত্বপূর্ণ জায়গা থেকে রক্ত নিয়ে যায় অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গে। ফলে হাত-পা দুর্বল হয়ে পড়তে পারে।
Advertisement
এ কারণে সিঁড়ি বেয়ে ওঠা বা ঘরেও হাঁটতে কষ্ট হতে পারে। এমনকি মাথা ঘোরার সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
>> হার্ট ফেলের আরও একটি গুরুতর লক্ষণ হলো শ্বাসকষ্ট ও কাশি। এ ক্ষেত্রে কাশির সঙ্গে সাদা বা গোলাপি শ্লেষ্মা বের হতে পারে।
>> হঠাৎ করেই পা ফুলে যাওয়া কিংবা ওজন বেড়ে যাওয়াকে সাধারণভাবে নেবেন না। কারণ হার্ট ফেলের আগাম লক্ষণ হিসেবে শরীরে তরল জমতে পারে। ফলে আপনার পা, গোড়ালি, পেট ফুলে যেতে পারে।
>> বমি বমি ভাবও হতে পারে। আবার সব সময় পেট ভরা অনুভব করাও খারাপ লক্ষণ। এ কারণে ক্ষুধামন্দা দেখা দিতে পারে। এমনটি ঘটার কারণ হলো আপনার পাচনতন্ত্র পর্যাপ্ত রক্ত ও অক্সিজেন পাচ্ছে না।
>> যখন আপনার হৃদয় পর্যাপ্ত রক্ত পাম্প করতে পারে না, তখন হার্টবিট বেড়ে যায়। যা হার্ট ফেলের এটি সতর্কতামূলক লক্ষণ।
>> বিভ্রান্তি বা অলসতাও হতে পারে হার্ট ফেলের আগাম লক্ষণ। এ ক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন বিষয় ভুলে যেতে পারেন। যখন রক্তের অভাবে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ভালোভাবে কাজ করে না, তখন রক্তে সোডিয়ামের পরিমাণকে প্রভাবিত করে। যা মস্তিষ্কও কার্যকারিতা হারায়।
হার্ট ফেল প্রতিরোধে করণীয়>> ভালো খাদ্যাভ্যাস ও শরীরচর্চা নিশ্চিত করুন। >> ধূমপান ছেড়ে দিন। >> হৃদরোগের ঝুঁকি থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে ওষুধ খান।>> ডায়েটে কম-সোডিয়ামযুক্ত খাবার রাখুন।>> ওজন বশে রাখুন। >> পানি ও তরল খাবার খাওয়ার পরিমাণ বাড়ান। >> স্ট্রেস কমাতে হবে।>> ক্যাফেইন এড়িয়ে চলতে হবে। >> পর্যাপ্ত বিশ্রাম গ্রহণ করুন।
সূত্র: ওয়েব এমডি
জেএমএস/এসইউ/এমএস