তুমি না এলে
Advertisement
তুমি না এলে সোমেশ্বরীর স্বচ্ছ জলে ভেসে আসে নৈঃশব্দের লাশশতবর্ষী মন্দির ঘণ্টার অপেক্ষায় অস্থিরবুকের জমিন প্লাবিত হয় হাবিয়ার সর্পিল সফেদ ফেনায়জেগে ওঠে রক্তচোষা, বোধের বিশুদ্ধতা চেটে খায় শামুকবিনয়ী অঙ্কুর লুটিয়ে পড়ে আখেরি সেজদায়সভ্যতার চাকা থমকে দাঁড়ায়
সমবেত কণ্ঠে বেজে ওঠে বিচ্ছেদসংগীতজ্ঞ ভুলে যায় সুনিপুণ সপ্তস্বরক্ষুধার্ত মাস্তুল প্রশান্তের জলে ডুবে যায়স্বাপ্নিক চিল, আশা-নিরাশার সমীকরণ করতে করতেহয়ে যায় সন্ন্যাস...বিকেল সমগ্রের খোলে না ভাঁজশাব্দিক অঞ্চলে শিয়ালকাঁটার আঁচড়ভাবুকেরা ভুলে যায় ভাষান্তরবোধের শিল্পকলায় মানসপ্রতিমা হয় না মঞ্চস্থ শুধু; বিশ্বাসটুকু বানিয়ে রাখি শিলালিপি।
****
Advertisement
নির্জনবিন্দু
ব্যক্তিগত নির্জনতার ভেতর অপ্রত্যাশিত অনুরণনমাকড়সাময় সময়কাঁচঘরে বন্দি বোধের অঙ্কুরপাতালপুরীর রহস্যের গল্প শুনতে শুনতেনিজের অজান্তেই ঢুকে যাই আপন আমাজানেজানি না দুর্বোধ্য এ পথ বিলুপ্তপ্রায় কোনো নগরে নিয়ে যাবে কি নাপ্রাচীনতম জেরিকার প্রাচীর ঘেঁষে দাঁড়াবার সাধ ছিল যদিও
পিকাসোর প্রচ্ছদ ঘুণেধরা বিবেকের কাছে বিক্রিত আজচানাচুর, ঝালমুড়ি কিংবা শুঁটকির দুর্গন্ধযুক্ত ঠোঙায়নিশব্দে গড়িয়ে পড়ে তাঁর দু’চোখের জলযে নির্জনবিন্দুর ভেতর শুধুমাত্র নাশপাতির অনুপ্রবেশ ছিলসেখানে সহসাই ঢুকে যায় বোমারু বিমানের বিষাক্ত কার্বন
শুধুই এখন, একান্ত জলের বিন্যাস।
Advertisement
****
সেইসব গ্রাম
সীমান্ত পেরোতেই আগুনমুখো বেনামি কাঁটাবিরুদ্ধবাদের বেওয়ারিশ উপাখ্যান শোনায়রোদের পিঠে সঞ্চিত উপশম অনুমানবিন্দু খুঁড়েঢুকে যায় সফেদযুগে—ঋতুবর্তী কাল, না আসা বৃষ্টিরইতিকথা বলে যায়; প্রকৃতি বন্দনার চিরায়ত ভঙ্গিমায়।
রোদের পালক খসে পড়ে খণ্ডিত মূর্ত মায়াদ্বীপেদূরবর্তী সুখাবাহন—সাময়িক তন্দ্রাকাল, আপন আবর্তে।
গাণিতিক বৃত্তে নিয়ন্ত্রিত বোধিবানশোধনাগারের ন্যায় দিয়ে যায় কৃত্রিমপ্রাণ
প্রত্যাবর্তনের পথ ভুলে গিয়ে লিংকনের আদর্শ নিয়ে এসেছি এই পথে।অপ্রত্যাশিত নিনাদ সূতিকাগার ভেদ করেআমাকে শোনায় বিজয়বার্তা।অনতিদূরেই চে গুয়েভারার বাতিঘর।কে যেন বলে ওঠে—এই তো সামনে সোঁদামাটির শিরিনঘ্রাণহিজলগাছের ওপারেই আদর্শ মায়ানগর
পাড়ি দিতে পারলেই পেয়ে যাবে সেইসব গ্রাম।
****
ভ্রমকুঞ্জ
সংসার-সমুদ্র সরল সমীকরণে সীমাবদ্ধ নয়।দৃঢ়চেতা অশ্বারোহী নিজেই নির্মাণ করে গতিপথ।বিপ্লব ও বিশ্বাস সমার্থক।লবণজলের তিক্ততার বৈপরীত্যে তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলে নিখিল মাঝি।অভ্যস্ত পাখিরা জেগে ওঠে যাপিত নিয়মেই।পরীযায়ীও মিলিত হয় সরলরেখায়।
জল ও জোছনার লীলাভোগে বিদগ্ধ ভ্রমকুঞ্জ।
হলুদ ছায়ার ভাঁজে কালের স্ফুরণ।কল্পিত সময়ের রেখাঘরে ঢুকে গেছে বোধনপুর স্টেশন।প্রত্যাবর্তনের সুখ কেবল হারাধনই জানে;তবুও অগ্রগামী দূরগ্রাম...
চাঁদের পেয়ালা থেকে গড়িয়ে পড়ছে নিদারুণ নির্মিতি!ধূপসন্ধ্যায় বসন্তের গীতি আলেখ্যে মন্ত্রমুগ্ধ পুরোহিতভুলে গেছে বিগত দিনের শীত ও শীৎকার।
এসইউ/এএসএম