চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান ও আপনার মধ্যে যে বিষয়টি দিয়ে প্রথম পরিচয় হয়, তা হল একটা সিভি বা জীবনবৃত্তান্ত। কথায় আছে, ‘আগে দর্শনধারী, পরে গুণবিচারী’। আর প্রতিষ্ঠান কিন্তু আপনাকে প্রথম দেখবে আপনার সিভিতেই। প্রতিষ্ঠান যাকে চাকরি দিতে চায়, তার সম্পর্কে জানতে চাইবে নিশ্চয়ই। আপনিও জানাতে চাইবেন। কিন্তু সব কিছুরই একটা পদ্ধতি আছে। যেমন-তেমনভাবে তৈরি করা সিভি উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি করতে পারে। তাই জেনে নিন কোন জিনিসগুলো সিভিতে না রাখাই ভালো।বিশেষজ্ঞদের মতে, কাকে চাকরি দেয়া হবে বা হবে না, সেটা নির্ণয় করতে প্রাথমিকভাবে মাত্র ৬ সেকেন্ড সময় নেন রিক্রুটমেন্ট অফিসার। যদি আপনাকে পছন্দ হয়, তবেই কথা এগোবে। তাই বুঝতেই পারছেন সঠিক সিভি আপনাকে সাফল্যের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দিতে পারে।সংক্ষিপ্তঅনেকের ধারণা রয়েছে যত পাতার সিভি হবে প্রতিষ্ঠান তত বেশি খুশি হবে। ব্যাপারটি একেবারেই সত্যি নয়। মনে রাখবেন, চাকরির জন্য আপনি একাই আবেদন করেননি। আরো অনেকেই করেছেন। তাই আপনার সম্পর্কে যেটা না জানালেই নয় সেটাই রাখুন।বেশি কাজের অভিজ্ঞতা আপনি অনেক সংস্থায় কাজ করেছেন। আপনার প্রচুর অভিজ্ঞতা। সবই বোঝা গেল। সঙ্গে এটাও মনে রাখবেন, যত বেশি সংস্থায় আপনি কাজ করেছেন আপনি ততবার চাকরি পাল্টেছেন। তাই বুঝে শুনে অভিজ্ঞতার কথা লিখুন। খুব অল্প দিনের জন্য কাজ করার অভিজ্ঞতা না দিলেই ভালো হয়।ব্যক্তিগত তথ্যআপনি বিবাহিত কিনা, আপনার জন্মতারিখ, আপনার শখ, আপনার ধর্ম কী- এ ব্যাপারে নিয়োগদাতা একেবারেই আগ্রহী নন, এটা সবার আগে আপনাকে মাথায় রাখতে হবে। ব্যক্তিগত ব্যাপারে জানার থাকলে আপনাকে জিজ্ঞাসা করে নেয়া হবে। আলাদ করে দেয়ার দরকার নেই।মিথ্যা তথ্য অন্যকে বোকা মনে করলে খালি হাতেই ফিরতে হবে। মিথ্যা তথ্য লিখবেন না। মনে রাখবেন মিথ্যা ধরা পড়ে গেলে চাকরি হওয়ার পরেও নাকচ হয়ে যেতে পারে।বেতন কাঠামো আগে তো আপনার কাজ এবং অভিজ্ঞতা। সেটা যদি পছন্দ হয় তবেই বেতনের প্রসঙ্গ আসবে। তাই কষ্ট করে ওটা আগেই দেয়ার প্রয়োজন নেই। আপনাকে পছন্দ হলে এমনিতেই প্রতিষ্ঠানের কর্তারা আপনার কাছে চেয়ে নেবেন।কেন চাকরি বদলাবেন আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। যদি অন্য কোনো সমস্যা থেকেও থাকে, সেটা বলার জন্য ইন্টারভিউর সময়টাকে ব্যবহার করুন। অযথা আগ বাড়িয়ে বলতে গেলে বেকার সমস্যায় জড়াতে পারেন।হম্বি-তম্বি ‘আমি অমুক করেছি’, ‘আমি খুব মোটিভেটেড’, ‘আমার কমিউনিকেশন স্কিল খুব ভালো’ ইত্যাদি বাগাড়ম্বর না করাই ভালো। আপনি কী বা কে সেটা ইন্টারভিউ নেয়ার সময় রিক্রুটমেন্ট অফিসারই ঠিক করে নেবেন।আমি এ পর্যন্ত অনেক রিক্রুইটারকেই দেখেছি তারা ক্যারিয়ার অবজেক্টিভটা পড়েন। তাই আগে নিজে বুঝে শুনে আবেদন করুন। অভিন্ন ক্যারিয়ার অবজেক্টিভ নিয়ে নানান জাগায় রিজিউম ড্রপ করলে কল পাবেন না। নিশ্চিত থাকুন।লেখক : ট্রেইনার ও প্রফেশনাল সিভি রাইটার, চিফ নলেজ ডিস্ট্রিবিউটর, কর্পোরেট আস্ক।এসইউ/পিআর
Advertisement