আল্লাহ তাআলা যখন ফেরেশতাদেরকে সেজদার নির্দেশে দিলেন তখন তারা হজরত আদম আলাইহিস সালামকে সেজদা করলেন। এখানে সেজদার মানে হচ্ছে নত হওয়া। অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা ফেরেশতা এবং জিন জাতির চেয়ে জ্ঞান-গুণ-কর্মে মানুষকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করবেন। এ জন্যই এ তাজিমি সেজদার নির্দেশ দিয়েছিলেন।ঠিক এমনিভাবেই হজরত ইউসুফ আলাইহিস সালামের ভাই ও পরিবারবর্গ ইউসুফ আলাইহিস সালামকে সেজদা করেছিল। তাও এ পর্যায়ের সেজদা ছিল। তা দ্বারা ইবাদাত গণ্য নয়। কেননা ইবাদাত আল্লাহ ছাড়া অন্যের জন্য জায়েজ নেই। সম্মান ও মর্যাদা প্রদর্শন জায়েজ। তবে তা মাথা নত করে নয়। মাথা নত করে সম্মান প্রদর্শন করা পূর্ববর্তী জাতিসমূহের মধ্যে প্রচলন ছিল। উম্মাতে মুহাম্মাদির জন্য তা বৈধ নয়। কারণ নত হয়ে সম্মান প্রদর্শন করার এ বিধান হাদিস দ্বারা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। উম্মাতে মুহাম্মাদির জন্য সম্মান প্রদর্শন ও অভিবাদন জানানো মাধ্যম হলো- সালাম ও মোসাফাহা।হজরত মুয়ায রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি সিরিয়াবাসীদেরকে তাদের নেতৃবর্গ এবং আলেমদের সামনে সেজদা করতে দেখেছিলাম। কাজেই রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করি, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি কি সেজদা পাওয়ার বেশি হকদার?’ তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘আমি যদি কোনো মানুষকে কোনো মানুষের সামনে সেজদা করার অনুমতি দিতে পারতাম, তবে নারীদেরকে নির্দেশ দিতাম যে, তারা যেন তাদের স্বামীকে সেজদা করে। কেননা স্ত্রীর উপর স্বামীর তো অনেক অধিকার রয়েছে।সর্বোপরি কথা হচ্ছে- ইমাম রাজি রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, এ সেজদা ছিল হজরত আদম আলাইহিস সালামের প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং সালাম প্রদান হিসেবে। আর এটা মহান আল্লাহর আনুগত্যের উপরেই ছিল। কেননা সেজদা করার নির্দেশ ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে। কাজেই ফেরেশতা ও জিন জাতির জন্য হজরত আদমকে সেজদা করা ছিল অবশ্যই পালনীয় কাজ।সুতরাং এ সেজদার আদেশ থেকে আমরা কোনো মানুষকে সেজদা করবো না। যা শুধুমাত্র হজরত আদম আলাইহিস সালামের জন্যই ঐ নির্দিষ্ট সময়টিতে খাস ছিল। যা রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামের হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে, কোনো মানুষকে সেজদা করা যাবে। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সকল প্রকার শিরক ও কুফরি আক্বিদা থেকে হিফাজত করে সঠিক পথে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।এমএমএস/পিআর
Advertisement