কৃষি ও প্রকৃতি

বালাইনাশকের কাঁচামাল আমদানিতে বাধা নেই, খুলতে পারে রপ্তানির দুয়ার

বিদেশি উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে বালাইনাশকের কাঁচামাল আমদানির সুযোগ সরকার উন্মুক্ত করে দেওয়ায় এখন এ কৃষিপণ্যটির উৎপাদন আরও বাড়বে। তাতে পণ্যটি বিদেশে রপ্তানিরও সুযোগ তৈরি হবে।

Advertisement

সোমবার (১০ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরের একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ এগ্রোক্যামিক্যালস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএএমএ) এ তথ্য জানিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএএমএর আহ্বায়ক কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বালাইনাশক আইন-২০১৮ এবং ইতোপূর্বে প্রণয়ন করা বিধিসমূহে বিদেশি উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে কাঁচামাল আমদানির বিষয়ে কোনো বাধ্যবাধকতা ছিল না। কিন্তু ৬৯-৭৬তম বালাইনাশক কারিগরি উপদেষ্টা কমিটি বালাইনাশকের আমদানিতে সোর্স পরিবর্তন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। এতে দেশীয় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল।

তিনি বলেন, এখন আমরা ইচ্ছামতো যে কোনো বিদেশি বহুজাতিক কোম্পানি থেকে বালাইনাশকের কাঁচামাল আমদানি করতে পারবো। এতে বিদেশি কোম্পানিগুলো এবং তাদের এজেন্ট কোম্পানির সিন্ডিকেট কাঁচামালের অতিরিক্ত দাম নিতে পারবে না।

Advertisement

সরকারের এ নির্দেশনা কার্যকর হলে আমাদের দেশেই মানসম্পন্ন বালাইনাশক উৎপাদন অনেক বাড়বে। উন্মোচিত হবে রপ্তানির দুয়ার- বলেন বিএএমএ আহ্বায়ক।

দেশীয় বালাইনাশক উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোকে বিদেশি উৎপাদনকারী যে কোনো কোম্পানির কাছ থেকে কাঁচামাল আমদানির সুযোগ উন্মুক্ত করে দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে বিএএমএ।

সংবাদ সম্মেলনে বিএএমএ আরও জানায়, সরকারের কাছে তাদের পাঁচটি দাবির মধ্যে সোর্স উন্মুক্তকরণ এবং এনওসি (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) বিষয়ক জটিলতার নিরসন হচ্ছে। এরইমধ্যে সে পদক্ষেপ নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। তবে এখনো বালাইনাশক কারিগরী উপদেষ্টা কমিটির সভায় বিএএমএ প্রতিনিধিদের উপস্থিতি এবং দেশি উৎপাদকদের পণ্য স্থানীয় বাজারে বিক্রির ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি পূরণ হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএএমএর সদস্য সচিব আবু জাহাঙ্গীর খান, বাংলাদেশ এগ্রিকালচারার ইন্ডাস্ট্রিজের প্রোপাইটর এম এ মান্নান ও পদ্মা এগ্রো স্পেয়ার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল আলীম প্রমুখ।

Advertisement

২০১৫ সাল থেকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের কারিগরি পরামর্শ প্রদানকারী কমিটি দেশীয় কোম্পানিগুলোর জন্য একাধিক বিদেশি সোর্স পছন্দের সুযোগ বন্ধ রেখেছিল। শর্ত ছিল, বালাইনাশক রেজিস্ট্রেশন পাওয়ার তারিখ হতে দুই বছরের মধ্যে রেজিস্ট্রার্ড বালাইনাশক ম্যানুফেকচারার বা সোর্স পরিবর্তনের আবেদন করতে পারবে না। যদিও বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে এ নিয়মের জটিলতা ছিল না। ফলে শর্তটি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিল দেশের বালাইনাশক উৎপাদনকারীরা।

বাংলাদেশ ক্রপ প্রোটেকশন অ্যাসোসিয়েশন (বিসিপিএ) এবং কতিপয় কোম্পানির স্বার্থ ও বহুজাতিক কোম্পানির পূর্ণ স্বার্থসিদ্ধির জন্য এ সোর্স পরিবর্তনের বিষয়টি বন্ধ রাখা হয়েছিল। পরবর্তীতে বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় এলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও সংস্থাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এনএইচ/এমকেআর/এমএস