পরকীয়া বিশ্বব্যাপী মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এর ফলে বিচ্ছেদের হারও বাড়ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এ ধরনের সম্পর্ক পারিবারিক জীবনে অশান্তি ডেকে আনে। যা বিচ্ছেদ পর্যন্ত গড়ায়।
Advertisement
সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, ১০ পেশার মানুষ সবচেয়ে বেশি পরকীয়া করে। সেগুলোর মধ্যে সবার ওপরে আছে সামাজিক কাজ করেন এমন ব্যক্তিরা। তারপরে আছে শিল্প ও বিনোদন ইন্ডাস্ট্রির মানুষেরা।
তৃতীয় স্থানে আছে শিক্ষাক্ষেত্র। তারপর আছে আইন পেশার মানুষ, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, চিকিৎসাক্ষেত্র, মার্কেটিং, সাংবাদিকতা, ফিন্যান্সের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিত্ব আর উচ্চবিত্ত ব্যবসায়ীরা। তবে পরকীয়ায় শীর্ষ ১০ এর তালিকায় নেই রাজনীতিবিদরা।
অন্যদিকে পরকীয়ায় শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় আছে- থাইল্যান্ড, ডেনমার্ক, জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, নরওয়ে, স্পেন, ফিনল্যান্ড ও যুক্তরাজ্য। থাইল্যান্ডের বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার বিবাহিত ব্যক্তিদের অর্ধেকই জানিয়েছে, তাদের পরকীয়ার সম্পর্ক আছে।
Advertisement
সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, পরকীয়ার সম্পর্ক কখনো পরিণতি পায় না। খুব কম ক্ষেত্রেই টেকসই হয় বিবাহ বহির্ভূত এই সম্পর্ক। এ বিষয়ে একমত পোষণ করেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণা।
দীর্ঘ ৮ বছর ধরে পরকীয়া প্রেম নিয়ে গবেষণা করছেন মিসৌরি স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রফেসর অ্যালিসিয়া ওয়াকার। সম্প্রতি তার একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে। এই গবেষণা বলছে, পরকীয়ায় সম্পর্ক খুব কম ক্ষেত্রেই সিরিয়াস হয়।
শতকরা ৫০ শতাংশেরও বেশি পরকীয়া সম্পর্কের স্থায়িত্ব হয় এক মাস থেকে এক বছর। এক বছরের বেশি হলে তা সর্ব্বোচ্চ ১৫ মাস বা তার কিছু বেশি পর্যন্ত টেকসই হয়। অন্যদিকে শতকরা ৩০ ভাগ সম্পর্ক ২ বছর বা তার বেশি স্থায়ী হয়। ৫ ভাগের কম ক্ষেত্রে পরকীয়ার সম্পর্ক বিয়েতে গড়ায়।
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, নিঃসন্তান দম্পতির চেয়ে যাদের সন্তান আছে, তাদের পরকীয়ার প্রবণতা বেশি। শতকরা ৫০ শতাংশেরও বেশি পরকীয়ার সম্পর্ক রাখা ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, তারা ব্যক্তিগত জীবনে বিরক্ত হয়েই পরকীয়ায় জড়িয়েছেন।
Advertisement
গবেষণা আরও বলা হয়েছে, পরকীয়ার ক্ষতিকর প্রভাব থাকলেও পারিবারিক জীবনে এমন সম্পর্ক ভারসাম্য আনতে সাহায্য করে। এর কারণ হলো, সম্পর্কে জড়ালে দম্পতির মধ্যে কিছুটা দূরত্ব তৈরি হয়। একটু দূর থেকে নিজের দাম্পত্যের সমস্যাগুলো স্পষ্টভাবে দেখা যায়। তা ঠিক করার সুযোগ তৈরি হয়।
আর একজনের সঙ্গে প্রেমে থাকলে বহু বিবাহিত ব্যক্তির মনেই অপরাধবোধ দেখা দেয়। তখন স্বামী বা স্ত্রী ছোটখাটো দোষ-ত্রুটি ক্ষমা করে দেওয়া সহজ হয়।
অন্যদিকে নতুন প্রেম মন ভালো করে। ফলেসংসারে অশান্তি কমে। পরকীয়ার ফলে পারিবারিক সম্পর্ক আগের চেয়ে ভালো হয়েছে, এমন সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়!
সূত্র: স্ট্যাটিস্টা ডট কম/ দ্য ইকোনমিক টাইম
জেএমএস/এমএস